এক মন্ত্রীর হুঁশিয়ারি এবং পুলিশের বারণ উ়ড়িয়ে দক্ষিণ কলকাতায় তৃণমূলের গড়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতিকে এনে অনুষ্ঠান করে দেখাল শাসক দলের একদা ঘনিষ্ঠ একটি ক্লাব। খাস কলকাতায় রবিবারের ওই ঘটনায় রাজনৈতিক শিবিরে চর্চা শুরু হয়েছে, তা হলে কি জোড়া ফুল থেকে পদ্মফুলে নাম লেখানোর ঝোঁক বাড়তি গতি পেয়ে গেল?
বিক্রমগড় ঝিল এলাকার ওই ক্লাবের জমিতে স্বাস্থ্য ও চক্ষু পরীক্ষা শিবিরের উদ্বোধনের জন্য বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। খবর পেয়ে রাসবিহারীর বিধায়ক তথা বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় যাদবপুর থানায় চিঠি দিয়ে জানান, ওই এলাকায় কিছু সমাজবিরোধী জড়ো হবে। তা যেন পুলিশ আটকায়। কিন্তু তার পরেও দিলীপবাবু এ দিন ওই শিবিরে ঘণ্টাখানেক ছিলেন। ক্লাবের সভাপতি সঞ্জয় হালদারের কথায়, ‘‘থানার তলব পেয়ে জানিয়ে এসেছিলাম, স্বাস্থ্য শিবির করবই। প্রশ্ন করেছিলাম, এর মধ্যে কোনও সমাজবিরোধী কাজ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে কি? শিবির করে দেখালাম!’’
উদ্যোক্তা ক্লাবের দাবি, তারা আগে তৃণমূলেরই সমর্থক ছিল। কিন্তু কিছু প্রোমোটারের জমি দখলের চেষ্টার প্রতিবাদ করায় তাদের সঙ্গে তৃণমূলের বিবাদ হয়। স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই ক্লাবের সদস্যেরা কিছু দিনের মধ্যেই বিজেপি-তে যোগ দেবেন। যার মহড়া হল দিলীপবাবুকে দিয়ে শিবির উদ্বোধনে।
তৃণমূল নেতৃত্ব ঘটনাকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। স্থানীয় ১০ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান তপন দাশগুপ্তের মন্তব্য, ‘‘কিছু সুবিধাবাদী মানুষ বিজেপিতে গেলেও তা নিয়ে মাথা ঘামানোর কিছু নেই।’’ মন্ত্রী শোভনদেব জানান, কিছু সমাজবিরোধী ছাই ফেলে বিক্রমগড় ঝিল ভরাট করছে এবং একই জমি একাধিক বার বিভিন্ন লোককে বিক্রি করছে। এই অন্যায় ঠেকাতে তিনি ব্যবস্থা নিয়েছেন বলে সমাজবিরোধীরা বিজেপিতে আশ্রয় খুঁজতে গিয়েছে। তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘দিলীপবাবুর সম্পর্কে আমি সমাজবিরোধী শব্দ ব্যবহার করিনি।’’
আর দিলীপবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘শোভনদেববাবু যাঁদের কথা বলছেন, তাঁরা আগে তৃণমূলের সঙ্গেই ছিলেন। এখন কী হল যে, ওঁরা তৃণমূলের চোখে খারাপ হয়ে গেলেন?’’