প্রতীকী ছবি।
শ্রাবণের শুরুতেও ধান চাষের অবস্থা নিয়ে চিন্তা ছিল বিস্তর। তবে গত সাত দিনে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গে টানা বৃষ্টিতে পরিস্থিতি অনেকটাই বদলে গিয়েছে বলে জানাচ্ছেন কৃষিকর্তারা।
কৃষি দফতরের দাবি, ৮ অগস্ট পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রার ৬১% জমিতে ধান রোয়া হয়ে গিয়েছে। যদিও এখনও কয়েকটি জেলায় ঘাটতি আছে বৃষ্টির। কৃষিকর্তাদের আশা, আবহাওয়া দফতর বৃষ্টিপাতের যে-সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে, তাতে সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে সর্বত্রই ধান রোয়া হয়ে যাবে। স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে যা ১৫ অগস্টের মধ্যে অর্থাৎ শ্রাবণেই শেষ হওয়ার কথা।
রাজ্যে খরিফ মরসুমে ৪২ লক্ষ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়। বর্ষা শুরুর মুখে ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে যে-ধান রোয়া হয়, তাকে বলা হয় আউশ ধান। এই ধান সাধারণত ১৫ অক্টোবরের মধ্যে মাঠ থেকে তোলা হয়। ভরা বর্ষায় ১৫ অগস্ট পর্যন্ত যে-ধানের চাষ হয়, তা আমন ধান। এই ধান তোলা হয় অগ্রহায়ণে। সেই ধানের নতুন চালেই নবান্ন হয় গ্রাম বাংলায়। বর্ষার জলেই আউশ-আমন ধানের চাষ হয়ে থাকে। সেচের খরচ লাগে না বলে চাষিরা বরাবরই এই মরসুমে মুখ্যত ধান চাষই করেন।
কৃষি দফতর সূত্রের দাবি, ৭ অগস্ট পর্যন্ত গত বছর ২৮.৩৯ লক্ষ হেক্টর জমিতে ধান রোয়া হয়ে গিয়েছিল।
এ বার এখনও পর্যন্ত ২৫.৬৫ লক্ষ হেক্টর জমিতে ধান রোয়া হয়েছে। উত্তরবঙ্গের প্রায় সব জেলাতেই বৃষ্টি-ঘাটতির জেরে বীজতলা তৈরি হয়ে পড়েই ছিল। গত সাত দিনে তার অনেকটাই জমিতে রোয়া হয়েছে বলে কৃষি দফতরের দাবি। কৃষিকর্তারা জানাচ্ছেন, ২১ দিনের বীজতলায় যে-চারা হয়, তা রোয়া যায়। বহু জেলায় টানা বৃষ্টি না-হওয়ায় এখন ৪৫ দিনের চারাও রুইতে হচ্ছে।
রাজ্যের কৃষি সম্প্রসারণের দায়িত্বে থাকা যুগ্ম অধিকর্তা রাজেশ সিংহ বলেন, ‘‘সরকারি ভাবে আমন ধানের চারা রোয়ার সময়সীমা
হল ১৫ অগস্ট। তবে এখন সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তা করা যায়। উদ্বেগের কিছু নেই। গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টির ফলে ব্যাপক ধান রোয়া হয়েছে।’’ রাজ্যের কৃষি অধিকর্তা সম্পদ পাত্রের কথায়, ‘‘এ বার সব জেলায় সমান বৃষ্টি না-হওয়ায় প্রাথমিক সমস্যা হয়েছে। আগামী কয়েক দিনে বৃষ্টি-ঘাটতির জেলাগুলির পরিস্থিতি বদলাবে। ডাঙা জমির একাংশে চাষ বাকি আছে।’’ কৃষি দফতরের খবর, মালদহ, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, বাঁকুড়া এবং পশ্চিম মেদিনীপুরে এখনও বৃষ্টি দরকার। তা হলে ধান চাষে সমস্যা হবে না।