TMC

জাহাজ টলমল করলে ইঁদুররা আগে জলে ঝাঁপিয়ে মরে, দলছুটদের নিয়ে প্রতিক্রিয়া ববির

এ দিন বিজেপিতে যোগ দেন ৩ বিধায়ক, বিভিন্ন পুরসভার ৬১ জন কাউন্সিলর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০১৯ ১৯:৩৮
Share:

সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি ফিরহাদ হাকিম। —নিজস্ব চিত্র।

শাসক দল থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া বিধায়ক-কাউন্সিলরদের ‘ইঁদুর’ বলে কটাক্ষ করলেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। জানিয়ে দিলেন, ‘‘জাহাজ টলমল করলে আগে ইঁদুররাই সমুদ্রে ঝাঁপ দেয়।’’

Advertisement

মঙ্গলবার দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে সাংবাদিক বৈঠক করেন বাংলায় বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়, এ রাজ্যে দলের জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য মুকুল রায়-সহ অন্যান্য নেতৃত্ব। সেখানেই বিজেপিতে যোগ দেন ৩ বিধায়ক, বিভিন্ন পুরসভার ৬১ জন কাউন্সিলর।

এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে এ দিন ফিরহাদ হাকিম সংবাদমাধ্যমকে জানান, ‘‘বড় জাহাজ যখন একটু টলমল করে, তখন সবার আগে ইঁদুররা সমুদ্রে ঝাঁপ দেয়। তার পর সেই জলেই ডুবে মরে। একটা রাজনৈতিক দল কয়েকটা আসন পেয়েছে। তাতে ঘাবড়ে গিয়ে যাঁরা পালিয়ে যাচ্ছেন বা চাপের মুখে যাঁরা মাথা নত করে পালিয়ে যাচ্ছেন, তাঁরা আদর্শের রাজনীতি করে না। আদর্শের রাজনীতি করলে আদর্শের জন্য জীবন উৎসর্গ করে দেওয়া যায়। আদর্শের রাজনীতি যাঁরা করবেন তাঁরা আন্দোলন করে তার বিরুদ্ধে লড়াই করবেন। যাঁরা আজ এগুলো করছে, তাঁরা কোনও না কোনও চাপেই করছেন।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: ৩ বিধায়ক-সহ ৫০ কাউন্সিলরের দলবদল, ৪ পুরসভা তৃণমূল থেকে বিজেপিতে​

তিনি আরও বলেন, ‘‘মুকুল রায়ও চাপের মুখেই দল ত্যাগ করেছিলেন। তিনি যে আজ লোকজনকে নিয়ে যাচ্ছেন, সেটাও চাপের মুখেই। আজ যে ভাবে মন্ত্রী এবং কাউন্সিলদের হেনস্থা করা হচ্ছে, যে ভাবে বন্দুক দেখিয়ে ভাটপাড়ায় লোকজনকে বিজেপিতে যোগ দিতে বাধ্য করা হচ্ছে, আমি এর তীব্র নিন্দা করছি। কারণ এটা মানুষের কাজ নয়। আমরা রাজনৈতিক কর্মী। বোমা গুলির বিরুদ্ধে তো আর লড়াই করতে পারব না! তাই কাঁধে পতাকা নিয়ে মানুষকে সচেতন করে, তাঁদের জন্য লড়াই করতে হবে।’’

লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর এক সপ্তাহও কাটেনি, তার মধ্যেই একে একে বিধায়ক দলত্যাগ করছেন। এমন পরিস্থিতিতে ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’-এ নামল তৃণমূল। সে জন্য তৈরি হল বিশেষ কমিটি। রাজ্যে গেরুয়া ঝড়ের মধ্যে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষাতেই তাদের এই পদক্ষেপ বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।

এ দিন, মধ্যমগ্রামে তৃণমূলের পার্টি অফিসে তৃণমূলের বিশেষ বৈঠক ডাকেন জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। ব্যারাকপুরের পরিস্থিতি মোকাবিলা করা নিয়ে সেখানে আলোচনা হয়। গঠিত হয় বিশেষ ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’ কমিটি। তাতে জ্যোতিপ্রিয় নিজে তো রয়েইছেন, এ ছাড়াও রয়েছেন জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক তথা পানিহাটির বিধায়ক নির্মল ঘোষ, নৈহাটির বিধায়ক তথা জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি পার্থ ভৌমিক, রাজ্যের মন্ত্রী তথা বরানগরের বিধায়ক তাপস রায়, মধ্যমগ্রামের বিধায়ক তথা চেয়ারম্যান রথীন ঘোষ, রাজ্যের মন্ত্রী তথা দমদমের বিধায়ক ব্রাত্য বসু, রাজ্যের মন্ত্রী তথা রাজারহাট-গোপালহাটের বিধায়ক পূর্ণেন্দু বসু, দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু এবং মদন মিত্র।

আরও পড়ুন: আদালতের বাইরে মিটমাটের চেষ্টায় রাজীব? সিবিআই এগোচ্ছে গ্রেফতারির লক্ষ্যেই​

ভোট শেষ হওয়ার পর ভাটপাড়া, কাঁকিনাড়া, হালিশহর–সহ যে সব পার্টি অফিস বেদখল হয়ে গিয়েছে, ওই কমিটি সে গুলি পুনর্দখলের চেষ্টা করবে বলে জানা গিয়েছে। এ ছাড়াও, এলাকায় বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচি এবং মিটিং-মিছিল করবে। অর্জুন সিংহের দুষ্কৃতী বাহিনীর তাণ্ডবে এলাকার অনেক কর্মী ঘরছাড়া বলে অভিযোগ তৃণমূলের। তাদেরও ঘরে ফেরানোর চেষ্টা করবে ওই কমিটি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন