প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক বা প্রধান শিক্ষিকা পদের জন্য প্রার্থীদের এক বছরের প্রশিক্ষণ থাকলেই চলবে, নাকি দু’বছরের হতেই হবে, তা নিয়ে বিতর্ক বেধেছিল। মামলা এবং আপিল মামলাও হয়েছিল উচ্চ আদালতে। সোমবার হাইকোর্টের রায়ে আপাতত কলকাতা জেলার প্রাথমিক স্কুলগুলিতে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে জটিলতা কেটে গেল।
কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য এবং বিচারপতি তাপস মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ এ দিন জানিয়ে দিয়েছে, কলকাতার প্রাথমিক স্কুলগুলিতে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ন্যাশনাল কাউন্সিল অব টিচার এডুকেশন বা এনসিটিই-র ২০১০ সালের ২৫ অগস্টের বিজ্ঞপ্তি কার্যকর হবে না। ওই বিজ্ঞপ্তিতে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে দু’বছরের প্রশিক্ষণ নেওয়া প্রার্থীদের অগ্রাধিকারের কথা বলা হয়েছিল।
কলকাতা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ ৪৪ জন প্রধান শিক্ষকের একটি প্যানেল তৈরি করেছিল ২০১২ সালে। ওই শিক্ষকেরা সহকারী শিক্ষক হিসেবে কলকাতা জেলার বিভিন্ন প্রাথমিক স্কুলে কর্মরত। ওই প্যানেলের বেশ কয়েক জন শিক্ষক-শিক্ষিকা ২০০১ সালের আগে থেকে ২০০৫ সালের মধ্যে চাকরি পান। তাঁদের রাজ্য সরকারের স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান থেকে এক বছরের শিক্ষক-প্রশিক্ষণ নেওয়া আছে। তবে তাঁরা বিভিন্ন স্কুলে চাকরিতে যোগ দেন এনসিটিই-র ২০১০ সালের ওই বিজ্ঞপ্তি জারির অন্তত পাঁচ বছর আগে।
প্রধান শিক্ষকের প্যানেলভুক্ত প্রার্থীদের মধ্যে নীতু সাহা এবং অঙ্কিতা সান্যাল নামে দুই শিক্ষিকা হাইকোর্টে মামলা করে জানান, এনসিটিই ২০১০ সালের ২৫ অগস্ট যে-বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে, সেই অনুযায়ী প্রধান শিক্ষক বা প্রধান শিক্ষিকার পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে দু’বছরের প্রশিক্ষণ নেওয়া শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা। হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দার ২০১৩ সালে কলকাতা জেলার প্রাথমিক স্কুলগুলিতে প্রধান শিক্ষক-পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে সেই বিজ্ঞপ্তি রূপায়ণের নির্দেশ দেন।
সিঙ্গল বেঞ্চের সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করেন বিষ্ণুপদ ঘোষ-সহ বেশ কয়েক জন প্রার্থী। এ দিন সেই আপিল মামলারই রায় দেওয়া হয়। বিষ্ণুপদবাবুদের আইনজীবী এক্রামুল বারি জানান, ডিভিশন বেঞ্চ যে-নির্দেশ দিয়েছে, তাতে রাজ্যের প্রাথমিক স্কুলগুলিতে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে এই ধরনের জটিলতা থাকলে তার সুরাহা হবে।