arrest

Fake CBI Officer: লকডাউনের সুযোগ নিয়ে অনলাইনে চাকরির টোপে ইন্টারভিউ, দিল্লিতে ধৃত হাওড়ার শুভদীপ

রবিবার রাতে দিল্লির তাজ হোটেলে হানা দেয় জগাছা থানার পুলিশ। শুভদীপকে ৩ দিনের জন্য ট্রানজিট রিমান্ডে হাওড়ায় আনার নির্দেশ আদালতের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হাওড়া শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০২১ ১৫:১৯
Share:

পুলিশের জালে শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র

লকডাউনকে ঢাল করে একের পর এক প্রতারণা চালিয়ে গিয়েছিলেন হাওড়ার চড়কডাঙার বাসিন্দা শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজেকে সিবিআই অফিসার হিসাবে পরিচয় দিয়ে চাকরিপ্রার্থীদের অনলাইনে ইন্টারভিউ নিতেন শুভদীপ। তাঁদের থেকে টাকাও নেওয়া হত অনলাইনে। প্রাথমিক ভাবে এমনটাই জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। কিন্তু স্ত্রী-র অভিযোগে শেষ পর্যন্ত ফাঁস হয়ে গেল শুভদীপের কীর্তি।

Advertisement

রবিবার রাতে দিল্লি থেকে শুভদীপকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার রাত দেড়টা নাগাদ দিল্লিতে তাজ হোটেলে হানা দেয় জগাছা থানার পুলিশ। সেখান থেকে শুভদীপকে গ্রেফতার করা হয়। সোমবার সকালে তাঁকে তোলা হয় দিল্লির পাতিয়ালা কোর্টে। শুভদীপকে ৩ দিনের জন্য ট্রানজিট রিমান্ডে হাওড়ায় আনার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তাঁকে জেরা করে প্রতারণাচক্র সম্পর্কে বিশদে জানতে চান তদন্তকারীরা।

প্রাথমিক ভাবে অবশ্য পুলিশের হাতে এসেছে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, লকডাউনের সুযোগ নিয়ে, কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ বিভিন্ন সংস্থায় চাকরি করে দেওয়ার নাম করে একের পর এক প্রতারণা করে গিয়েছেন শুভদীপ। জানা গিয়েছে, লকডাউন বলে চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাৎ করতেন না তিনি। বরং লকডাউন এবং করোনার কারণ দেখিয়ে চাকরিপ্রার্থীদের অনলাইনে ইন্টারভিউ নেওয়া হত। এর পর ‘সফল’ চাকরিপ্রার্থীদের থেকে টাকাও নেওয়া হত অনলাইনে। কিন্তু টাকা দিয়েও চাকরি না পাওয়ায় অনেক চাকরিপ্রার্থীর শুভদীপের উপর সন্দেহ তৈরি হয়। অনেকে শুভদীপের হাওড়ার চড়কডাঙার বাড়িতে গিয়ে হাঙ্গামাও বাধান। তাৎক্ষণিক ভাবে ‘বিপাকে’ পড়লেও তা সামাল দিয়েছিল শুভদীপ। বাবার থেকে নানা অছিলায় টাকা নিয়ে ওই সব চাকরিপ্রার্থীর মুখ ‘বন্ধ’ রেখেছিলেন তিনি। যাতে তাঁরা কেউ ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশে অভিযোগ না দায়ের করেন।

Advertisement

এত পরিকল্পনা করেও অবশ্য শেষ রক্ষা হয়নি। শেষ পর্যন্ত স্ত্রী-র অভিযোগের ভিত্তিতে ধরা পড়ে গেলেন শুভদীপ। গত বছর চড়কডাঙারই এক তরুণীর সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। সে সময় শুভদীপ দাবি করেন, তিনি সিবিআই-এর অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর পদে কর্মরত। পরবর্তী কালে শুভদীপের স্ত্রী বুঝতে পারেন, তাঁর স্বামী এক জন জালিয়াত। শুভদীপ জাল আই কার্ড-সহ বিভিন্ন নকল কাগজপত্র ব্যবহার করতেন বলেও অভিযোগ। এর পর শুভদীপের সঙ্গে সংসার করতে রাজি হননি ওই তরুণী। তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদও হয়ে যায়। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, সিবিআই অফিসার সেজে শুভদীপ নিজের বাড়ি থেকে বিভিন্ন ইন্টারভিউ নিয়েছিলেন। তার ফলেই ওই তরুণী ধরতে পেরে যান শুভদীপের জাতিয়াতি। এর পর তিনি গত ১৩ মে শুভদীপের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, শুভদীপ বেঙ্গালুরু থেকে বি টেক নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন। তাঁর আত্মীয়রা জানতেন, তিনি বেসরকারি সংস্থায় চাকরিরত। তাঁর সঙ্গে লালন নামে বিহারের এক বাসিন্দার আলাপ হয়েছিল বলেও জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। তার পর থেকেই শুভদীপ যুক্ত হয়ে যান ওই প্রতারণা চক্রের সঙ্গে। কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন দফতরে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে তিনি বিভিন্ন রাজ্যের বহু মানুষকে প্রতারণা করেছেন বলে অভিযোগ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন