(বাঁ দিকে) কাঞ্চন মল্লিক। (ডান দিকে) ফিরহাদ হাকিম। —নিজস্ব চিত্র।
রাজ্যবাসীকে চটজলদি সরকারি পরিষেবা দিতে, দাবি এবং অভিযোগ শুনতে মমতার সরকারের নতুন কর্মসূচি ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান।’ সেই কর্মসূচির কেমন চলছে দেখতে গিয়ে উত্তরপাড়ার বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিকের বিরুদ্ধে অনুযোগ শুনলেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তৃণমূলের কাউন্সিলর থেকে স্থানীয় বাসিন্দা, সকলেই ক্ষোভ উগরে দিলেন দলের বিধায়কের উপরে। এক কাউন্সিলর তো বলেই ফেললেন, ‘‘ওঁকে শুধু মোবাইলে দেখি। দেখি কখনও নাচছেন, কখনও হামাগুড়ি দিচ্ছেন।’’
মঙ্গলবার হুগলির উত্তরপাড়ায় গিয়েছিলেন রাজ্যের পুরমন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ (ববি নামেও পরিচিত)। ‘পাড়ায় সমাধান’ কেমন হচ্ছে, খোঁজখবর নেন তিনি। তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্ব থেকে কাউন্সিলর, সকলেই ছিলেন। ছিলেন না কেবল এলাকার বিধায়ক অভিনেতা কাঞ্চন। তাঁর অনুপস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন দলের কর্মীরা। একই সুর শোনা যায় একাধিক তৃণমূল কাউন্সিলরের গলাতেও। যেমন উত্তরপাড়ার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তাপস মুখোপাধ্যায়। তিনি কটাক্ষের সুরে বলেন, ‘‘আমাদের বিধায়ককে কোনও কিছুতেই পাওয়া যায় না। ওঁকে শুধু মোবাইলে দেখা যায় নাচগান করতে, হামাগুড়ি দিতে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আসলে উনি বিধায়ক হওয়ার যোগ্যই নন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টিকিট দিয়েছিলেন। দলের কর্মীরা খেটে তাঁকে বিধায়ক করেছেন। কিন্তু উত্তরপাড়ার মানুষ তাঁর থেকে কিছুই পাননি।’’
এ নিয়ে প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করেননি ফিরহাদ। উত্তরপাড়া জয়কৃষ্ণ পাঠাগারে ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’ কর্মসূচিতে সেখানকার সরকারি কর্মী থেকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। পরে বলেন, ‘‘‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’ রাজ্যের প্রতিটি বুথে মানুষের সমস্যা এবং চাহিদা শুনে তার সমাধান করছে। এটা পুরো ভারতের মধ্যে অভিনব কর্মসূচি। হয়তো আগামিদিনে কেন্দ্রীয় সরকার শিখবে। যেমন ভাবে এই রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্প দেখে তারা শিখেছে। এটা মানুষের খুব উপকারে আসছে। কারণ, মানুষ তৃণমূলস্তরের সমস্যা তুলে ধরছেন এবং তার সমাধানও হচ্ছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা সারা বছর মানুষের পাশে থাকি। আসলে সারাবছর পড়াশোনা করলে পরীক্ষার সময় পড়তে হয় না। আমরা সারা বছর মানুষের পাশে থাকি। তাই আমাদের চমক দেওয়ার দরকার পড়ে না।’’
উত্তরপাড়ার বিধায়ক কাঞ্চনকে নিয়ে ওই এলাকায় দলের একাংশের ক্ষোভ নতুন নয়। তাঁকে এলাকায় পাওয়া যায় না বলে নানা সময় অভিযোগ উঠেছে। যদিও কাঞ্চন তা মানতে নারাজ। এ বার অবশ্য এখনও তাঁর প্রতিক্রিয়া মেলেনি।