তৃণমূল কর্মীর পেটে রড, খুনের চেষ্টা

বিজেপির হুগলি সদর মণ্ডলের সভাপতি সুবীর নাগের দাবি, ‘‘শুধু বিজেপি নয়, তৃণমূল সমর্থকদের একাংশের উপরও স্থানীয় বিধায়ক অসীমা পাত্রের বাহিনী নানা অত্যাচার করেছে অতীতে।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ধনেখালি শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০১৯ ০৩:২৮
Share:

বুধবার রাতে ধনেখালি গ্রামীণ হাসপাতালে সুরেশ। —নিজস্ব িচত্র

পুলিশের ডাকা শান্তি বৈঠকে এলাকার শান্তি বজায় রাখতে সম্মত হয়েছিল দু’পক্ষই। কিন্তু বুধবার সন্ধ্যায় ধনেখালিতে ওই বৈঠকের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ফিরে এল হিংসার ছবিই। তালবোনা গ্রামে সুরেশ মুদি নামে এক তৃণমূল কর্মীকে মারধর করে তাঁর পেটে লোহার রড ঢুকিয়ে খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠল বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে। তিনি ধনেখালি-১ পঞ্চায়েতের ১০০ দিনের কাজের সুপারভাইজার। তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। মারধর করা হয় মেঘনাদ আহেরি নামে তৃণমূলের এক বুথ সভাপতিকেও।

Advertisement

ঘটনায় জড়িত অভিযোগে রাতেই ছ’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতেরা এলাকায় বিজেপি কর্মী-সমর্থক হিসেবেই পরিচিত। তাঁদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে দাবি করে বিজেপির হুগলি সদর মণ্ডলের সভাপতি সুবীর নাগের দাবি, ‘‘শুধু বিজেপি নয়, তৃণমূল সমর্থকদের একাংশের উপরও স্থানীয় বিধায়ক অসীমা পাত্রের বাহিনী নানা অত্যাচার করেছে অতীতে। এখন ওঁরা কোণঠাসা হতেই গ্রামবাসীরা এককাট্টা হয়ে প্রতিশোধ নিচ্ছেন।’’ অসীমাদেবী বলেন, ‘‘সন্ধ্যায় শান্তি বৈঠক হল। আর রাতেই আমাদের দুই কর্মীকে খুনের চেষ্টা করা হল। বিজেপির সঙ্গে শান্তি বৈঠক করে কোনও লাভ নেই।’’

হুগলি জেলা (গ্রামীণ) পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘আমরা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছি। ছ’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজ চলছে।’’

Advertisement

লোকসভা নির্বাচন ঘোষণার পর থেকেই ধনেখালি জুড়ে তৃণমূল-বিজেপি সমর্থকদের মধ্যে ঝামেলা লেগে ছিল। ভোটের ফল প্রকাশের পরেও তাতে ছেদ পড়েনি। তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপির মারমুখী সমর্থকেরা প্রতিদিন তাঁদের দলীয় কার্যালয় দখল করছে, ভাঙচুরও চালানো হচ্ছে। পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে বুধবার সন্ধ্যায় ডিএসপি (ডি অ্যান্ড টি) মৃণালকান্তি সাহার নেতৃত্বে ধনেখালির তিনটি থানা মিলিয়ে একটি শান্তি-বৈঠক হয়। উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল ও বিজেপির স্থানীয় নেতৃত্ব। বৈঠকে সব পক্ষই শান্তি বজায় রাখতে সম্মত হয় বলেই জানায় পুলিশ।

অথচ, কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বদলে যায় পরিস্থিতি। রাত ১১টা নাগাদ বিজেপির কয়েকজন সমর্থক সুরেশ ও মেঘনাদকে বেধড়ক মারধর করে বলে অভিযোগ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রচণ্ড গরমে তালবোনা গ্রামের একটি মাঠে বসে আড্ডা মারছিলেন সুরেশ, মেঘনাদরা। সেই সময় ১০-১৫ জনের একটি সশস্ত্র দল তাঁদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। মারধর করে সুরেশের পেটে লোহার রড ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। মারধর করা হয় মেঘনাদকেও। তাঁদের চিৎকারে গ্রামবাসীরা বাইরে বেরিয়ে এলে হামলাকারীরা পালায়। আহতদের ধনেখালি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় সুরেশকে কলকাতার আরজিকর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করানো হয়েছে। ধৃতদের বৃহস্পতিবার চুঁচুড়া এসিজেএম আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাদের ১৪ দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন