মজে-যাওয়া: নর্দমা ভর্তি আবর্জনা। ছবি: দীপঙ্কর দে
থার্মোকলের থালা, প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ, জলের বোতল— সব কিছুই সেখানে আশ্রয় নিয়েছে। যে ভবন থেকে শহরের সাফাই অভিযান পরিচালিত হয়, তার সামনের নর্দমার হাল দেখে শহরের আর পাঁচটা জায়গার পরিস্থিতি কেমন হবে তার কিছুটা আন্দাজ করা যায়। বস্তুত, সুষ্ঠু নিকাশির প্রশ্নে শৈবতীর্থ তারকেশ্বর পুরসভার অবস্থা এমনই।
শহরবাসীর অভিযোগ, বর্ষায় বিভিন্ন রাস্তা জলমগ্ন হয়ে যায়। মশা-মাছির উপদ্রব বাড়ে। রোগ ছড়ায়। অথচ পরিস্থিতি থেকে মুক্তির জন্য পুরসভার তরফে সার্বিক পরিকল্পনা নেওয়া হয় না। বর্ষা এলেই জলবন্দি হয়ে পড়া আর রোগভোগের আশঙ্কায় সিঁটিয়ে থাকেন সাধারণ মানুষ। পুর-এলাকায় বড় নর্দমাগুলির বেশ কয়েকটি সংস্কার হয়নি। চাউলপট্টি থেকে জয়কৃষ্ণবাজার পর্যন্ত নর্দমায় আগাছা জন্মেছে। পদ্মপুকুর থেকে ভীমপুর পর্যন্ত নর্দমাও সংস্কার হয়নি। বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন পানিকল থেকে রেললাইনের ধার বরাবর নর্দমার অবস্থাও তথৈবচ। একই হাল গ্রামীণ হাসপাতালের নিকাশি ব্যবস্থারও।
পদ্মপুকুরের বাসিন্দা এক বধূর কথায়, ‘‘এখনই তো মশার ভয়ে সন্ধ্যা থেকে জানলা বন্ধ রাখতে হচ্ছে।’’ জয়কৃষ্ণ বাজারের বাসিন্দা প্রৌঢ় বলেন, ‘‘তারকেশ্বর মন্দিরের দুধ পুকুরেরই যেখানে দুর্বিষহ অবস্থা, দূষণের চোটে মাছ মরছে সেখানে অন্য জায়গার পরিষেবা কেমন, তা সহজেই অনুমেয়।’’ অভিযোগ, অনেক জায়গায় অপরিকল্পিত ভাবে নর্দমার উপরে দোকান তৈরি হওয়ায় এই পরিস্থিতি।
কিন্তু নবান্ন যে পরিচ্ছন্ন শহর গড়ার ডাক দিয়েছে! মশা নিয়ন্ত্রণে ঝাঁপাতে বলেছে! বেশ কিছু জায়গার মানুষের অভিযোগ, তেমন কোনও অভিযান চোখে পড়েনি। মানুষকে সচেতন করতে প্রচারও চোখে পড়েনি। বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুরসভায় শাসকদলের লোকেরা নিজেদের মধ্যে আকচাআকচিতেই ব্যস্ত।
পুরকর্তারা অবশ্য অভিযোগ মানেননি। পুরসভার সাফাই বিভাগের চেয়ারম্যান ইন-কাউন্সিল মহম্মদ নইমের দাবি, ‘‘মশার লার্ভা মারার তেল ছেটানোর কাজ প্রতি ওয়ার্ডে হয়েছে গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে। দিন দশেক আগে পর্যন্ত ওই কাজ হয়েছে। ফের হবে।’’ তিনি জানান, নর্দমায় পলিথিন উড়ে এসে পড়ায় নিকাশির সমস্যা হয়। তবে বর্ষার আগেই শহর জুড়ে নিকাশি নালা সংস্কারের কাজ করা হবে। এ ব্যাপারে মাস্টার প্ল্যান করা হয়েছে। আগামী শুক্রবার থেকেই কাজ শুরু হয়ে যাবে।