আইএনটিটিইউসি-র চাপে মিটল না সমস্যা

সিটুর হুমকিতে ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’ ঘোষণা করেছিলেন কর্তৃপক্ষ। পরের দিন‌ দুই শ্রমিক সংগঠনকে নিয়ে আলোচনায় বসলেন তাঁরা। সমস্যা যখন মিটমাটের পথে, তখন বেঁকে বসল শাসক দলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৬ ০১:১৭
Share:

সিটুর হুমকিতে ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’ ঘোষণা করেছিলেন কর্তৃপক্ষ। পরের দিন‌ দুই শ্রমিক সংগঠনকে নিয়ে আলোচনায় বসলেন তাঁরা। সমস্যা যখন মিটমাটের পথে, তখন বেঁকে বসল শাসক দলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি। এ বার তাদের চাপে উৎপাদন চালুর সিদ্ধান্ত কার্যকর করা গেল না। সব মিলিয়ে শ্রীরামপুরের ‘মাল্টি সার্ভ রোলস লিমিটেড’-এ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হল না।

Advertisement

শ্রীরামপুরের রাজ্যধরপুরে দিল্লি রোডের ধারে ওই কারখানায় যন্ত্রাংশ তৈরির জন্য লোহার দণ্ড তৈরি হয়। শতাধিক শ্রমিক আছেন। বৃহস্পতিবার কাজে সন্তুষ্ট না হওয়ায় এক শিক্ষানবিশ কম্পিউটার অপারেটরকে বরখাস্ত করেন কর্তৃপক্ষ। এর প্রতিবাদে সিটু নেতৃত্ব আন্দোলনে নামে। ওই কর্মীকে পুনর্বহাল করা না হলে অফিসের বেশ কিছু লোক (ম্যানেজমেন্ট স্টাফ) ‘টুল ডাউন’ (যন্ত্রপাতি না ধরা) ধর্মঘট করবেন বলে হুমকি দেন। এর পরেই শুক্রবার সকাল থেকে ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’ ঘোষণা করেন কর্তৃপক্ষ।

সমস্যা সমাধানের জন্য শনিবার সকালে দুই শ্রমিক সংগঠনকে নিয়ে বৈঠকে বসেন কর্তৃপক্ষ। কারখানা সূত্রের খবর, বৈঠকে কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেন, যে শিক্ষানবিশকে নিয়ে বিতর্ক, তাঁকে আগামী মে মাস পর্যন্ত কাজে বহাল করা হবে। আজ, রবিবার থেকেই উৎপাদন চালু করা হবে। কিন্তু শুক্র ও শনিবার কারখানা বন্ধের দিনের মজুরি দিতে হবে, এই দাবি তুলে আইএনটিটিইউসি নেতারা কাজ করতে বেঁকে বসেন‌। কর্তৃপক্ষ অবশ্য তাতে রাজি হননি।

Advertisement

কারখানার আইএনটিটিইউসি সম্পাদক পাঁচু পাত্র বলেন, ‘‘মালিক-স্টাফ ঝামেলায় ইচ্ছেমতো কারখানা বন্ধ করা হবে, আর সাধারণ শ্রমিকরা মার খাবেন? যত দিন কারখানা বন্ধ থাকবে, তত দিনের টাকা দিতে হবে। না হলে শ্রমিকরা কাজ করবেন না।’’ ওই মর্মে এ দিন‌ কর্তৃপক্ষকে চিঠিও দেন পাঁচুবাবুরা। বৈঠক ভেস্তে যাওয়ায় কর্তৃপক্ষের তরফে ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’ প্রত্যাহার না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিজ্ঞপ্তিও দেওয়া হয়।

কারখান‌ার পার্সোনেল অফিসার তাপস কর বলেন, ‘‘উৎপাদন চালু করতে আমরা চেষ্টার ত্রুটি করিনি। শনিবার রাত থেকেই উৎপাদন চালুর প্রস্তুতি নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু আইএ‌নটিটিইউসি নেতাদের দাবিতে তা সম্ভব হল না।’’ কারখানার সিটু সম্পাদক শেখ হীরুলাল বলেন, ‘‘ওই শিক্ষা‌নবিশকে সরানোর প্রক্রিয়া যে সঠিক হয়নি, কর্তৃপক্ষকে তা বোঝাতে পেরেছি। শ্রমিকবিরোধী অবস্থান নিয়ে আইএনটিটিইউসি নেতারা পরিস্থিতি জটিল করে তুললেন।’’ আইএনটিটিইউসি সভাপতি অন্বয় চট্টোপাধ্যায়ের অবশ্য পাল্টা অভিযোগ, ‘‘সিটুর আগ্রাসী মনোভাব আর মালিকপক্ষের তুঘলকি আচরণে শ্রমিকেরা মার খাবেন, এটা চলবে না।’’ কাল সোমবার ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডেকেছেন শ্রীরামপুরের ডেপুটি-শ্রম কমিশনার অমল মজুমদার। ওই বৈঠকে কী হয়, সেটাই দেখার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement