স্বামীর পরে মৃত প্রেমিকও, ধৃত মগরার বধূ

স্ত্রীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক নিয়ে অশান্তির জেরে গত বুধবার আত্মঘাতী হয়েছিলেন সোমনাথ দাস নামে মগরার বছর ত্রিশের এক যুবক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মগরা শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০১৭ ০২:০০
Share:

শোক: মৃত অমিতের বাড়ির সামনে ভিড়। ছবি: তাপস ঘোষ

স্ত্রীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক নিয়ে অশান্তির জেরে গত বুধবার আত্মঘাতী হয়েছিলেন সোমনাথ দাস নামে মগরার বছর ত্রিশের এক যুবক। শুক্রবার রাতে আত্মঘাতী হলেন মহিলার প্রেমিক, অমিত সাউ (২০)। তার আগে অমিতের বাড়িতে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ ওঠে মহিলার বাপেরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। দু’জনকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে মৌসুমি দাস নামে ওই মহিলাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ময়না-তদন্তের পরে অমিতবাবুর দেহটি শনিবার রাতে তাঁর বাড়িতে আনা হয়।

Advertisement

জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করা হয়েছে। তদন্তে সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ধৃত মহিলার বাপেরবাড়ির লোকজন হুমকি ও ভাঙচুরে অভিযুক্ত। তারা পলাতক। তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৮ সালে মগরার বিনয়-বাদল-দীনেশ কলোনির বাসিন্দা সোমনাথ দাসের সঙ্গে বিয়ে হয় ওই এলাকারই মৌসুমির। দম্পতির একটি মেয়ে রয়েছে। কয়েক বছর বাদে মৌসুমির সঙ্গে পাশের পাড়া ভাঙাঘাট কালনা রোডের বাসিন্দা অমিত সাউয়ের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

মৌসুমি ও তার বাপেরবাড়ির লোকজন ডিভোর্সের জন্য সোমনাথের কাছে কয়েক লক্ষ টাকা চেয়ে চাপ সৃষ্টি করতে থাকে বলে অভিযোগ। দোলের দিন এ নিয়ে অশান্তি চরমে ওঠে। মৌসুমি মেয়েকে নিয়ে বাপেরবাড়ি চলে যায়। সেখান থেকে সোমনাথকে হুমকি দেওয়া হতে থাকে বলে অভিযোগ। বুধবার বিকেলে সোমনাথের ঝুলন্ত দেহ তাঁর ঘর থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।

Advertisement

অমিতের পরিবারের অভিযোগ, সোমনাথের মৃত্যুর পর থেকেই মৌসুমি বিয়ের জন্য অমিতের উপরে চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। অমিত নদিয়ার তাহেরপুরে মাসির বাড়ি চলে যান। সে জন্য শুক্রবার সকালে তাঁর বাড়িতে মৌসুমির বাপেরবাড়ির লোকেরা ভাঙচুর চালায়। ওই রাতেই মাসির বাড়িতে গলায় দড়ি দিয়ে অমিত আত্মঘাতী হন। অমিত ও সোমনাথের পরিবার পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন। রাতেই মৌসুমিকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতকে শনিবার চুঁচুড়া আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাকে ১৪ দিন জেল-হাজতে রাখার নির্দেশ দেন।

গোটা ঘটনায় বিনয়-বাদল-দীনেশ কলোনির বাসিন্দারা মৌসুমিকেই দুষছেন। সোমনাথের মা লক্ষ্মীরানিদেবী পুত্রবধূর উপযুক্ত শাস্তি দাবি করে বলেন, ‘‘বৌমা আর ওর বাপেরবাড়ির অত্যাচার আমার ছেলেটা সহ্য করতে পারেনি।’’ অমিতের মা ঝর্নাদেবী বলেন, ‘‘ওদের হুমকি সহ্য করতে পারেনি ছেলে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন