রাস্তা সংস্কারের সময়ে ভেঙে ফেলা হল ঐতিহাসিক নিদর্শন, ক্ষোভ

একটি বেহাল রাস্তা সংস্কারের সময়ে একটি প্রাচীন শিবমন্দির এবং একটি নীলকুঠির একাংশ ভেঙে ফেলার অভিযোগ উঠল গোঘাট-১ পঞ্চায়েত সমিতির বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় হস্তক্ষেপ করতে হল জেলা প্রশাসনকে। প্রশাসনের নির্দেশে নীলকুঠি ভাঙার কাজ বন্ধ হয়েছে। সপ্তাহখানেক ধরে গোঘাটের দামোদরপুর এবং আরামবাগের কালীপুরের মধ্যে বিস্তৃত ১৬ কিমি বেহাল রাস্তাটি প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা প্রকল্পে সারানোর কাজ করছে ওই পঞ্চায়েত সমিতি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৪ ০২:৫১
Share:

বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ফেলা হচ্ছে নীলকুঠি। ছবি: মোহন দাস।

একটি বেহাল রাস্তা সংস্কারের সময়ে একটি প্রাচীন শিবমন্দির এবং একটি নীলকুঠির একাংশ ভেঙে ফেলার অভিযোগ উঠল গোঘাট-১ পঞ্চায়েত সমিতির বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় হস্তক্ষেপ করতে হল জেলা প্রশাসনকে। প্রশাসনের নির্দেশে নীলকুঠি ভাঙার কাজ বন্ধ হয়েছে।

Advertisement

সপ্তাহখানেক ধরে গোঘাটের দামোদরপুর এবং আরামবাগের কালীপুরের মধ্যে বিস্তৃত ১৬ কিমি বেহাল রাস্তাটি প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা প্রকল্পে সারানোর কাজ করছে ওই পঞ্চায়েত সমিতি। রাস্তার ধারের কিছু পরিত্যক্ত বাড়িঘরও ভাঙছে তারা। ওই রাস্তার ধারে বালিদেওয়ানগঞ্জ এলাকায় কয়েকশো বছরের পুরনো পোড়ামাটির কারুকাজ সমৃদ্ধ একটি শিবমন্দির ছিল। দিন কয়েক আগে সেই মন্দিরটি বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দেওয়া হয়েছে। কিছুটা দূরে নীলকুঠির একাংশও ভাঙা হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ পঞ্চায়েত সমিতির বিরুদ্ধে অনৈতিক ভাবে ওই কাজ করা হচ্ছে, এই অভিযোগ তুলে প্রশাসনের দ্বারস্থ হন।

অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) আবিদ হোসেন বলেন, “পঞ্চায়েত সমিতিকে কোনও পুরনো সৌধ বা মন্দির ভাঙতে নিষেধ করে দেওয়া হয়েছে। আর ভেঙ্গে ফেলা ঐতিহাসিক নির্দশনের প্রাচীনত্ব খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় কী ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে তার জন্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া হবে।” পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের মৃণাল আলুর দাবি, “আমরা কোনও ঐতিহাসিক নিদর্শন ভাঙতে চাইনি। যাঁদের জমিতে ওই মন্দির এবং নীলকুঠি রয়েছে, তাঁদের লিখিত আবেদনেই ভাঙা হয়েছে। তাঁরা নিজেরা তত্বাবধান করে তা ভাঙিয়েছেন।”

Advertisement

ওই এলাকার প্রবীণ মানুষরা জানান, শিবমন্দিরটি ৩০০ বছরেরও বেশি পুরনো। নীলকুঠিটি ‘শিববাবুর সিল্ককুঠি’ নামেও পরিচিত। দু’টির উল্লেখ রয়েছে নানা বইতে।

শিবমন্দিরটি ছিল ওই এলাকার বাসিন্দা স্বপনকুমার গুঁইয়ের জমিতে। তিনি কী ভাবে মন্দিরটি ভাঙার জন্য আবেদন জনালেন? স্বপনবাবু বলেন, “মন্দিরটি যে ভগ্নদশায় ছিল, তা আমাদের পক্ষে সংস্কার করা সম্ভব ছিল না। চাঁই ধসে গিয়ে বিপদ হতে পারত। সরকারি ভাবে সংস্কার করা হচ্ছিল না। তাই সুযোগ পেয়ে ভাঙার ব্যবস্থা করি।” প্রায় একই বক্তব্য ভেঙে ফেলা নীলকুঠিটির একাংশ যাঁর জমিতে ছিল, সেই জমির মালিক কার্তিক মণ্ডলেরও।

গোটা বিষয়টি নিয়ে রাজ্য পুরাতত্ত্ব বিভাগের ডেপুটি সুপারিনটেন্ডেন্ট (আর্কিওলজি) অমল রায় জানান, ঐতিহাসিক নির্দশন ভেঙে ফেলা কখনই কাম্য নয়। সংরক্ষিত না হলেও তা রক্ষা করার চেষ্টা করতে হবে। জেলা প্রশাসন দফতরে আবেদন জানালে বিষয়টি দেখা হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement