‘ঘোড়া’ নেবেন না ‘কলা’, কড়ি ফেললে সব আপনার হাতের মুঠোয়

পুলিশ কর্তারা যাই বলুন, বাসিন্দাদের অনেকেই তাতে আশ্বস্ত নন। তাঁদের অভিযোগ, ফেসবুকে কার্বাইন হাতে তৃণমূল নেতা নরেশ দেবনাথের ছবি সোস্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়।

Advertisement
কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০১৮ ০১:৩২
Share:

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

ঠিকঠাক জায়গায় অর্ডারটা দিতে হবে। তা হলেই সহজে মিলবে ‘ঘোড়া’ থেকে ‘কলা’! ‘লোকাল কলা’, ‘বিচি’ও মিলছে সহজেই। শুধু ঠিকঠাক জায়গায় অর্ডারটা দিতে হবে।

Advertisement

এ সবই অবশ্য সাংকেতিক নাম। পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, ‘ঘোড়া’ বলতে বন্দুক, ‘কলা’ মানে পিস্তল, ‘লোকাল কলা’ মানে পাইপগান আর ‘বিচি’ বলতে গুলিকেই বোঝে এই এলাকার অপরাধ জগৎ। অভিযোগ, কোচবিহার জুড়ে এমন সাংকেতিক নামেই বেআইনি অস্ত্রের রমরমা কারবার জাঁকিয়ে বসেছে। আধুনিক রিভলভারও ওই তালিকায় ছিল। এবার যুক্ত হয়েছে কার্বাইনও। তাতে অস্ত্র কারবারিদের দৌরাত্ম্যের অভিযোগ আরও বেড়েছে। সব মিলিয়ে বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্রের রমরমা পুজোর মুখে পুলিশের চিন্তাও বেড়েছে।

কীভাবে ঢুকছে এত অস্ত্র? পুলিশের ধারণা, রীতিমতো পরিকল্পনা করে ওই অস্ত্র আমদানি করা হচ্ছে। অস্ত্র কারবারিদের সঙ্গে স্থানীয় দুষ্কৃতীদের যোগসাজসে চাহিদা মতো অর্ডার করা নানা রকম আগ্নেয়াস্ত্র নির্দিষ্ট জায়গাতে পৌঁছেও যাচ্ছে।

Advertisement

পুলিশের অবশ্য দাবি, বেআইনি অস্ত্র উদ্ধারে লাগাতার অভিযান হচ্ছে। গত চার মাসে অন্তত ৫০টি অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে জেলার বিভিন্ন থানা এলাকা থেকে। পাঁচ মাসের হিসেব ধরলে ওই সংখ্যা আরও ১৫টি বাড়বে। নাইন এমএম, সেভেন এমএম রিভলভার থেকে পাইপগান, নানা আগ্নেয়াস্ত্র ওই তালিকায় রয়েছে। সম্প্রতি উদ্ধার হওয়া ওই কার্বাইন অবশ্য একেবারে নতুন সংযোজন। কোচবিহারের পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডে বলেছেন, “গত পাঁচ মাসে প্রচুর বেআইনি অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। সর্বত্র কড়া নজরদারিও রয়েছে।”

পুলিশ কর্তারা যাই বলুন, বাসিন্দাদের অনেকেই তাতে আশ্বস্ত নন। তাঁদের অভিযোগ, ফেসবুকে কার্বাইন হাতে তৃণমূল নেতা নরেশ দেবনাথের ছবি সোস্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। তারপরেই বিষয়টি নিয়ে শোরগোল পড়ে। পুলিশ কার্বাইন উদ্ধার করে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে। কিন্তু প্রশ্ন হল, ওই ছবি প্রকাশ্যে না এলে কি সেটা সম্ভব হত? সম্প্রতি কোচবিহারের ঢাংঢিংগুড়িতে এক তৃণমূল নেতা কুদ্দুস আহমেদ বাড়ি ফেরার পথে গুলিবিদ্ধ হয়ে খুন হন। ওই ঘটনায় বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। বিজেপি ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে পালটা তোপ দেগেছে তারা।

পুলিশের অনুমান, সেভেন এমএম রিভলভার থেকে কুদ্দুসকে গুলি করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে একটি সেভেন এমএম রিভলবার উদ্ধার হয় বলেও পুলিশের একটি সূত্রের দাবি। পুলিশের সন্দেহ, বিহারের মুঙ্গের থেকে বেশি অস্ত্র ঢুকছে। মোটা টাকার টোপে স্থানীয় দুষ্কৃতীদের ‘ক্যারিয়ার’ করা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন