পথে ফের ‘জয় শ্রীরাম’, সাড়া দিলেন না মমতা

কল্যাণীর রথতলায় হেলিপ্যাড থেকে কাঁচরাপাড়ার সভাস্থলে আসা এবং যাওয়ার পথে এক দল যুবক ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দিলেন। তবে আগের মতো এ দিন গাড়ি থেকে নামেননি মমতা।

Advertisement

সুপ্রকাশ মণ্ডল

কাঁচরাপাড়া শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০১৯ ০৪:০০
Share:

কাঁচরাপাড়ায় মুখ্যমন্ত্রীর যাওয়ার পথে বিজেপির হোর্ডিং। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

হেলিপ্যাড সরানো হয়েছিল পাশের নদিয়া জেলায়। কী কারণে, তার নানান ব্যাখ্যা এবং যুক্তি রয়েছে পুলিশ এবং তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে। পথে পুলিশও ছিল প্রচুর।

Advertisement

কিন্তু এত কিছুর পরেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যাত্রাপথে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি আটকানো গেল না। কল্যাণীর রথতলায় হেলিপ্যাড থেকে কাঁচরাপাড়ার সভাস্থলে আসা এবং যাওয়ার পথে এক দল যুবক ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দিলেন। তবে আগের মতো এ দিন গাড়ি থেকে নামেননি মমতা। পুলিশও তাড়া করেনি ওই যুবকদের।

তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপির দিক থেকে ‘প্ররোচনা’র চেষ্টা ছিল কাঁচরাপাড়ার পাড়ায় পাড়ায়। বড় রাস্তা, গলি পথের মোড়ে মোড়ে— বিজেপি নেতাদের ছবি-সহ ‘জয় শ্রীরাম’ লেখা ব্যানার-পোস্টার ভর্তি ছিল। তা নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেখাননি মুখ্যমন্ত্রী। তবে তৃণমূলের কর্মিসভার মঞ্চ থেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ব্যারাকপুরের বিস্তীর্ণ এলাকাকে অশান্ত করে তোলা নিয়ে। মঞ্চ থেকে সরাসরিই দলের কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলেছেন তৃণমূল নেত্রী। কর্মীদের ভয় না পেয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আগের মতো লড়তে বলেছেন। তিনি যে আগের মতো দলের কর্মীদের পাশেই রয়েছেন, সেই বার্তাও দিয়েছেন।

Advertisement

সভার শেষে তৃণমূল সমর্থকদের অনেকেরই প্রতিক্রিয়া, বহু দিন পরে মুখ্যমন্ত্রী নয়, আগের ‘নেত্রী’ মমতাকে তাঁরা ফিরে পেয়েছেন। সভাস্থল থেকে বেরিয়েই অনেককে পুলিশ-কর্মীদের উদ্দেশে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘দিদির সরকারটা কিন্তু এখনও আছে। এ বার আমাদের উপরে হামলা হলে বিজেপির লোকেদের গারদে ভরবেন কিন্তু! তা না হলে কিন্তু দিদির কাছেই নালিশ করব।” তবে সভা ঘিরে পুলিশের বাড়াবাড়ি নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন এলাকার বাসিন্দারা।

সভা শুরু হওয়ার কথা ছিল বিকেল তিনটেয়। মুখ্যমন্ত্রী পৌঁছে যান তার মিনিট কুড়ি আগে। রথতলায় হেলিপ্যাড থেকে বেরিয়ে রবীন্দ্র সরণিতে তাঁর কনভয় ওঠার সময়ে রাস্তার ধারের একটি জটলা থেকে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দেন জনাকয়েক যুবকের একটি দল। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তখন মুখ্যমন্ত্রীকে কিন্তু নির্বিকারই দেখিয়েছে। ফেরার পথে ওই একই জায়গায় ফের তাঁর কনভয় দেখে ওই একই ধ্বনি দেন ওই যুবকেরা।

তৃণমূলের কর্মিসভা হলেও সভাস্থল ঘেরা হয়নি। কর্মিদের পাশাপাশি কাঁচরাপাড়ার মিলন নগরের আদর্শ সঙ্ঘের মাঠে অনেক সাধারণ মানুষই ভিড় জমান। মহিলাদের উপস্থিতির হার ছিল চোখে পড়ার মতো। বাইরে থেকে বহু কর্মী-সমর্থক এলেও মহিলাদের অধিকাংশই ছিলেন স্থানীয়। প্রচণ্ড গরমে অনেকেই সভাস্থলে না গিয়ে রাস্তায় গাছের ছায়ায়, ক্লাবঘরে, স্কুলের মাঠে বসে মমতার বক্তৃতা শুনেছেন।

দুপুর থেকেই কাঁচরাপাড়ার মোড়ে মোড়ে, রাস্তার দু’পাশে প্রচুর মানুষ মমতাকে দেখার জন্য ভিড় করেন। প্রায় সর্বত্রই পুলিশ এবং সিভিক ভল্যান্টিয়ারেরা গিয়ে তাঁদের ভিড় করতে বারণ করেন। পুলিশি বাড়াবাড়িতে ক্ষিপ্ত হয়ে এক বৃদ্ধ পুলিশ কর্মীদের বলেন, “আমরা কি ‘জয় শ্রীরাম’ বলার জন্য রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছি নাকি? আমরা মুখ্যমন্ত্রীকে দেখব বলে দাঁড়িয়ে আছি। ভুলে যাবেন না, বীজপুরে ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ কিন্তু দিদিকে ভোট দিয়েছে!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন