এক ক্লাবের দুই ফুটবল দল, একটা তৃণমূলের একটা বিজেপির!

বাঘাস্তি গ্রাম পঞ্চায়েতে রয়েছে পলাশিয়া নীলকণ্ঠেশ্বর ক্লাব। স্থানীয় সূত্রের খবর, আগে এলাকায় তৃণমূলের প্রভাব ছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৮ ১৩:২১
Share:

ফুটবল খেলা নিয়ে ঝামেলা। অলঙ্করণ: শৌভিক দেবনাথ।

একটি ক্লাব। জঙ্গলমহল কাপ ফুটবল প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে ওই ক্লাবের হয়ে হাজির দু’টি টিম। অভিযোগ, একটি দলের পিছনে সমর্থন রয়েছে স্থানীয় তৃণমূলের। অন্যটির নেপথ্যে বিজেপি। দু’দল খেলতে চায়। মাঠেই উত্তেজনা। পুলিশের তরফ থেকে দু’দলকেই খেলতে বারণ করা হয়। তবে মাঠের ঝামেলা মাঠে মেটেনি। অভিযোগ, এরপরই কেশিয়াড়ির বাঘাস্তিতে মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে দু’পক্ষ। শনিবার রাতের ওই ঘটনায় দু’পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।

Advertisement

বাঘাস্তি গ্রাম পঞ্চায়েতে রয়েছে পলাশিয়া নীলকণ্ঠেশ্বর ক্লাব। স্থানীয় সূত্রের খবর, আগে এলাকায় তৃণমূলের প্রভাব ছিল। ফলে ক্লাবের নিয়ন্ত্রণও ছিল শাসক দলের হাতে। এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে তুলনায় ভাল ফল করেছে বিজেপি। ফলে বাড়ছে বিবাদ। পলাশিয়া নীলকণ্ঠেশ্বর ক্লাবও দু’ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছে। শনিবার বিকেলে বনদেউলি মাঠে জঙ্গলমহল কাপ ফুটবল প্রতিযোগিতার খেলা ছিল। দেখা যায়, পলাশিয়া নীলকণ্ঠেশ্বর ক্লাবের হয়ে দু’টি টিম এসেছে। প্রত্যেকেরই দাবি, তারাই ক্লাবের প্রকৃত প্রতিনিধি। স্থানীয় সূত্রের খবর, রাজনৈতিক বিভাজনের সূত্র ধরেই মাঠে পৌঁছেছিল ওই দু’টি টিম। শুধু মাঠে পৌঁছনোই নয়, নিজেদের মধ্যে রীতিমতো বচসা শুরু করেন দু’টি দলের খেলোয়াড়েরা। শান্তি বজায় রাখার আবেদন করে পুলিশ। তাতে কাজ না হওয়ায় কোনও দলকেই খেলার অনুমতি দেয়নি তারা।

খেলতে না পেরেই দু’টি দলই বাড়ি ফিরছিল। প্রথমে ছিল তৃণমূল সমর্থিত ফুটবল পরে। পিছনে ছিল বিজেপির পৃষ্ঠপোষকতায় তৈরি ফুটবল দলের সদস্যেরা। প্রথম দলের সদস্যেরা ফিরে দেখেন, কেউ বা কারা ক্লাবঘরে তালা লাগিয়ে দিয়ে‌ছে। কিছুক্ষণ পরে দ্বিতীয় দলের খেলোয়াড়েরা ফিরতেই শুরু হয়ে যায় বচসা। পরে তা গড়ায় মারামারিতে। দু’পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হন। আহতদের কেশিয়াড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে তাঁদের মধ্যে থেকে কয়েকজনকে মেদিনীপুর, কলকাতা সহ অন্যত্র স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

Advertisement

আহতদের কেশিয়াড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।—নিজস্ব চিত্র।

আরও পড়ুন: নিউটাউনে প্রোমোটার খুনের সূত্র রয়েছে মুর্শিদাবাদে​

আরও পড়ুন: গুরু-নির্দেশে ভাঙল বিয়ে, আত্মঘাতী হবু কনে​

কেশিয়াড়ি ব্লক তৃণমূলের সভাপতি পবিত্র শীট বলেন, ‘‘ক্লাবের দখল নিতে চায় বিজেপি। এলাকায় পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেতার পর সন্ত্রাস চালাচ্ছে তারা। চারজন আহত হয়েছেন।’’ যদিও অভিযোগ মানতে রাজি নয় বিজেপি। দক্ষিণ মণ্ডলের সভাপতি সনাতন দোলাইয়ের অভিযোগ, ‘‘ওরাই (তৃণমূল) এসে মারধর করেছে। জঙ্গলমহল কাপ খেলতে না পেরে ঈর্ষাবশত এই কাণ্ড ঘটিয়েছে।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘ওরা ভাড়া করা খেলোয়াড় নিয়ে খেলতে চেয়েছিল। আমাদের ছেলেরা বাধা দিয়েছে। তাই এই মারধর। থানায় অভিযোগ জানিয়েছি।’’

স্থানীয় সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত ভোটের ফল প্রকাশের পর ক্লাবে তালা লাগানোর পর্ব শুরু হয়েছিল। কার দখলে থাকবে ক্লাব, তা নিয়ে বিবাদের জেরে দু’পক্ষ একাধিকবার তালা লাগিয়েছে ক্লাবে। এবার লড়াই ফুটবল মাঠে। ক্লাবের সামনে তাই বসেছে পুলিশি পাহারা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement