পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলির আকাশে মেঘ জমতে দেখে রে়ডারে নজর রেখে বসেছিলেন আবহবিদেরা। হিসেব কষে দেখেছিলেন, ওই মেঘ উড়ে আসবে কলকাতার আকাশে। কিন্তু মাঝপথেই আচমকা ঘুরে গিয়েছিল সেই মেঘ। গরমে অতিষ্ঠ কলকাতার বুকে পড়েনি ঝড়বৃষ্টির শান্তিবারি!
দিন কয়েক আগের ওই ঘটনা কোনও বিচ্ছিন্ন উদাহরণ নয়। আলিপুর হাওয়া অফিসের আবহবিদেরা বলছেন, এ বার এমন ভাবেই মহানগরকে বারেবারে ফাঁকি দিচ্ছে কালবৈশাখীর মেঘ। কিন্তু কেন?
ঝড়বৃষ্টির এমন নানা রহস্যের উত্তর খুঁজতেই শনিবার কলকাতায় আলোচনাচক্রের আয়োজন করেছিল ইন্ডিয়ান মেটিরিওলজিক্যাল সোসাইটি। আয়োজক সংগঠনের সদস্যরা জানান, কালবৈশাখীর চরিত্র বুঝতে পারলে শুধু পূর্বাভাস ঠিক মতো দেওয়া যাবে তা-ই নয়। এর বিপদ থেকেও মানুষকে বাঁচানো সম্ভব।
ওই অনুষ্ঠানের ফাঁকেই কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, মহানগরে কালবৈশাখী তৈরি হতে গেলে ঝাড়খণ্ডের উপরে বড় আকারের মেঘপুঞ্জ তৈরি হতে হয়। অথবা পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে একাধিক মেঘপুঞ্জ প্রয়োজন। কিন্তু এ বার তেমনটা হচ্ছে না। বায়ুমণ্ডলের উপরের স্তরের বায়ুপ্রবাহ মেঘকে পশ্চিম থেকে কলকাতার দিকে ঠেলে আনে। কিন্তু সেই বায়ুপ্রবাহের অভিমুখ আচমকা বদলে যাচ্ছে। ফলে মহানগরের দিকে রওনা দিলেও শেষমেশ তা কলকাতায় আসছে না।
আরও পড়ুন:স্বপনের হাত ধরে আদালতে সাহানারা
সঞ্জীববাবু জানান, কালবৈশাখীর চরিত্র বোঝার জন্য আরও কয়েকটি রেডার স্টেশন গড়ে তোলা প্রয়োজন। তার ফলে রাজ্যের ছোট ছোট এলাকাতেও নির্দিষ্ট ভাবে পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব। কোনও এলাকায় স্থানীয় ভাবে ঝ়ড়বৃষ্টি হলেও তার খবর পাওয়া সম্ভব। এর পাশাপাশি মেঘের গড়ন, তার শক্তি এবং প্রভাব সম্পর্কে বৈজ্ঞানিক গবেষণাও প্রয়োজন।
কালবৈশাখী থেকে বিপর্যয় আটকাতে গেলে শুধু হাওয়া অফিস বা বিজ্ঞানীদের দিয়েই হবে না। পুর-প্রশাসন, বিদ্যুৎ, বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের সঙ্গেও সমন্বয় প্রয়োজন। এ দিনের অনুষ্ঠানে তাই রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর, সিইএসসি-র কর্তারাও হাজির ছিলেন।