এখানেই ঘটে দুর্ঘটনা। বুধবার। — নিজস্ব চিত্র
ব্যস্ত রাস্তায় সিগন্যালের তোয়াক্কা না করে যে বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চলাচল করে, তা নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভ ছিলই। বুধবার দুপুরে একটি দুর্ঘটনা সেই ক্ষোভের আগুনে ঘি ঢালল। হল পথ অবরোধ, তার জেরে যানজট ছড়িয়ে পড়ল দক্ষিণ কলকাতার বিস্তীর্ণ এলাকায়। অবরোধ-যানজটের সাঁড়াশি চাপে নাকাল হলেন সাধারণ মানুষ।
এ দিনের ঘটনাস্থল সৈয়দ আমির আলি অ্যাভিনিউ এবং বেকবাগান রো-এর মোড়। দু’টি মিনিবাসের রেষারেষিতে মৃত্যু হয় এক ব্যক্তির। তাঁর নাম মহম্মদ নেমাতুল্লাহ (৪১)। পুলিশ জানিয়েছে, আদতে বিহারের বাসিন্দা নেমাতুল্লাহ চাকরি সূত্রে থাকতেন সৌদি আরবে। সম্প্রতি তিনি তপসিয়ায় নিজের শ্বশুরবাড়িতে এসেছিলেন।
আরও পড়ুন:
কফির কাপে স্মৃতি-সুধা, চুমুক অমর্ত্যের
কাঠগড়ায় রাজনীতি, রাগে ফুঁসছে এলাকা
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, এ দিন বেকবাগানের একটি দোকান থেকে মিষ্টি কিনে মোটরবাইকে তপসিয়ার বাড়িতে ফিরছিলেন নেমাতুল্লাহ। তিনিই বাইকটি চালাচ্ছিলেন। হেলমেটও পরা ছিল তাঁর। পুলিশ জেনেছে, সে সময়ে দু’টি মিনিবাস নিজেদের মধ্যে রেষারেষি করছিল। সিগন্যাল সবুজ হতে যখন বাইক চালু করেছেন নেমাতুল্লাহ, তখনই একটি মিনিবাস পিছন থেকে তাঁকে ধাক্কা মারে। রাস্তায় ছিটকে পড়ে বাসের চাকায় পিষে যান ওই ব্যক্তি। ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা নেমাতুল্লাহকে মৃত ঘোষণা করেন।
এর পরেই পথ অবরোধ শুরু করে উত্তেজিত জনতা। প্রায় ৪০ মিনিট অবরোধ চলায় তীব্র যানজট হয় এলাকায়। তার আঁচ গিয়ে পড়ে বালিগঞ্জ থেকে পার্ক সার্কাস ছাড়িয়ে মল্লিকবাজার মোড়ে। এমনকী, মা উড়ালপুল থেকে নামার মুখেও দীর্ঘ লাইন পড়ে যায় গাড়ির। পুলিশ এসে অবরোধ উঠিয়ে দিলেও যান চলাচল স্বাভাবিক হতে বিকেল গড়িয়ে যায়।
মহম্মদ নেমাতুল্লাহ
স্থানীয় এক বাসিন্দা মলয় রায়ের অভিযোগ, ‘‘বেকবাগানের এই মোড়ে বেপরোয়া ভাবে গাড়ি যাতায়াত করে। আগেও একাধিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। পুলিশকে বারবার বলেও লাভ হয়নি।’’
এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘ঘাতক বাসটিকে আটক করা হলেও চালককে ধরা যায়নি। তাঁর খোঁজে তল্লাশি চলছে।’’
ওই চালকের বিরুদ্ধে পুলিশ কি সরাসরি খুনের মামলা করবে?
লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিটি পথ-দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সরাসরি খুনের মামলা রুজু করা হচ্ছে না। সেই দুর্ঘটনার ধরন দেখে ধারা প্রয়োগ করা হচ্ছে। এ দিনের ঘটনায় এখন বাসচালক ধরা পড়েনি। তিনি ধরা পড়লে ধারা ঠিক করা হবে।