ছবির ফাঁদে: ডিজাইনার ব্লাউজের (বাঁ দিকে) অর্ডার দিয়ে হাতে আসছে এমনই নিম্ন মানের কাপড়ের টুকরো (ডান দিকে)।
অনলাইনে কেনাকাটা করতে গিয়ে প্রতারিত হওয়ার ঘটনা আকছারই ঘটে। যে কোনও পণ্যের যত ভাল ছবি সাইট কিংবা পেজে দেওয়া হয়, বাস্তবে ক্রেতারা দেখেন হাতে আসা জিনিসপত্রের গুণগত মান ততটাই খারাপ। অথচ টাকা ফেরত পাওয়ার কিংবা পণ্য বদলের কোনও সুযোগ থাকে না। এ বার অনলাইনে পোশাক কিনে প্রতারনার শিকার হওয়ার ঘটনা সামনে এসেছে।
প্রতারিতেরা জানান, ফেসবুক থেকে তাঁরা বেশ কয়েকটি পোশাক বিক্রেতা সংস্থার হদিস পান। যেগুলি গুজরাতের সুরাতের সংস্থা বলে প্রতারিত হওয়ার পরে
জানতে পেরেছেন প্রতারিতেরা। তাঁদের অভিযোগ, কায়দার পোশাকে সাজা চিত্র তারকাদের ছবি দিয়ে পেজে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল। ঝলমলে রং দেখে পোশাক কেনার লোভের ফাঁদে পা দিয়েছেন অনেকেই। তার পরে হাতে পেয়েছেন নিম্নমানের পোশাক। কেউ আবার পোশাকই হাতে পাননি। কলকাতার পাশাপাশি ভিন্ রাজ্যের ক্রেতারাও
রয়েছেন সেই দলে। অনলাইনে আগেই টাকা দিয়ে দেওয়ায় তা আর ফেরত আসার কোনও সুযোগও নেই তাঁদের কাছে।
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
গড়িয়াহাটের বাসিন্দা প্রজ্ঞা অনলাইনে প্রচুর কেনাকাটা করেন। সম্প্রতি এমনই একটি পেজ দেখে একটি ডিজাইনার ব্লাউজ অনলাইনে কিনতে টাকা দিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর হাতে এসে পৌঁছয় এক ফালি কাপড়। তাঁর কথায়, ‘‘এমন ভাবে কখনও ঠকিনি। ওদের হোয়াটসঅ্যাপ করে বিষয়টি জানিয়েছিলাম। কোনও উত্তর দেয়নি। ফোন নম্বরটি গুজরাতের।’’
গুজরাতেরই গাঁধীনগরের বাসিন্দা মনোবীণা চক্রবর্তীরও এমনই অভিজ্ঞতা। তিনি বলেন, ‘‘এমন একটি পেজ থেকে লাল রঙের একটি ডিজাইনার ব্লাউজ অর্ডার করেছিলেন। এসে পৌঁছেছে এক ফালি সরু নিম্ন মানের লাল কাপড়।’’ আবার বেঙ্গালুরুর এক সংস্থার বিপণন আধিকারিক সৃজনী চক্রবর্তীর অভিজ্ঞতা, ‘‘ডিজাইনার ব্লাউজের বদলে এসেছে একফালি কাপড়। যে প্যাকেটে সেই কাপড় এসেছে তাতে প্রেরকের ঠিকানা লেখা নেই। পেজে যে ফোন নম্বর ছিল সেটি গুজরাতের। কিন্তু তাতে ফোন করলে কলই
ঢুকছে না।’’
প্রতারিত এক মহিলা জানান, পেজগুলিতে অনেকেই প্রতারিত হওয়ার অভিজ্ঞতা লিখেছেন। কিন্তু লেখার কিছুক্ষণের মধ্যে সব কমেন্ট মুছে দেওয়া হয়েছে। বেশির ভাগ পেজে কোনও ফোন নম্বর নেই। মেল আইডি থাকলেও তাতে যোগাযোগ করে কোনও লাভ হচ্ছে না।
সাইবার অপরাধ বিশেষজ্ঞ সন্দীপ সেনগুপ্তের মতে, ‘‘নামী পেজ অথবা ওয়েবসাইটেই কেনাকাটা করা ভাল। এর জন্য সংশ্লিষ্ট পেজ সম্পর্কে চেনা পরিচিতেরা কী বলছে তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই সব ধরনের অনামী পেজের মাধ্যমে অনলাইনে ক্রেডিট অথবা ডেবিট কার্ড ব্যবহার করে টাকা দেওয়াটাও বিপজ্জনক।’’