—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
কল্যাণীর জওহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল মেডিক্যাল কলেজের ২৮ জন পড়ুয়াকে হস্টেলে ঢোকার অনুমতি দিল কলকাতা হাই কোর্ট। গত বছর তাঁদের হস্টেলে ঢোকার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর নির্দেশ, ওই পড়ুয়ারা হস্টেলে থাকতে পারবেন। পাশাপাশি ওই পড়ুয়াদের উদ্দেশে বিচারপতি বসুর মন্তব্য, ‘‘আপনারা ভবিষ্যতে চিকিৎসক হবেন। আপনাদের আচরণ ভাল হওয়া উচিত। কলেজের পরিবেশ যেন খারাপ না হয়।’’
গত বছর আরজি কর মেডিক্যালে চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার পর বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে ‘হুমকি সংস্কৃতি’ নিয়ে শোরগোল শুরু হয়। জেএনএমের বেশ কয়েক জন পড়ুয়ার বিরুদ্ধে র্যাগিং করার অভিযোগ ওঠে। পরে ছ’মাসের জন্য হস্টেল ও কলেজ ক্যাম্পাস থেকে তাঁদের বহিষ্কার করেন কর্তৃপক্ষ। ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তাঁরা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন। পরে আদালতের হস্তক্ষেপে তাঁরা পরীক্ষায় বসতে পারলেও হস্টেলে ঢোকার অনুমতি ছিল না। বৃহস্পতিবার মামলার শুনানিতে ওই পড়ুয়াদের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের যুক্তি, ‘‘২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে অ্যান্টি-র্যাগিং কমিটি বৈঠক করে সর্বোচ্চ শাস্তি হিসাবে সর্বাধিক ৩ থেকে ৬ মাসের হস্টেলে প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। অথচ তাঁদের বক্তব্য না শুনে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল!’’ পাল্টা সংশ্লিষ্ট কলেজের বক্তব্য, ‘‘ওই ছাত্রছাত্রীদের আবার হস্টেলে রাখা হলে ক্যাম্পাসের পরিবেশ খারাপ হতে পারে।’’
হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, গত বছর ১৯ সেপ্টেম্বর যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল তার সময়সীমা ইতিমধ্যে শেষ হয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় মেডিক্যালের ওই পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপই গ্রহণযোগ্য নয়। বিচারপতি বসুর নির্দেশ, মামলায় যাঁদের নাম রয়েছে সবাইকে আগামী ১ থেকে ২৮ নভেম্বরের মধ্যে হস্টেলে প্রবেশের অনুমতি দিতে হবে।
অন্য দিকে, কলেজ কর্তৃপক্ষের ওই সিদ্ধান্তের পিছনে আরজি করের আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশের ‘অভিসন্ধি’ দেখেছেন কল্যাণ। তৃণমূল সাংসদ তথা আইনজীবী বলেন, ‘‘তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ছাত্রছাত্রীদের যে ভাবে বার করে দেওয়া হয়েছে তা বেআইনি। অনিকেতরা গুন্ডাগিরি করে ওই সব ছাত্রদের বার করে দিয়েছেন। আরজি করের ঘটনায় আমরাও দুঃখিত, সমব্যথী। কিন্তু ওই ঘটনাকে নিয়ে বাম, অতিবাম এবং বিজেপি অন্যায় করেছে।’’