কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করল ফরেন্সিক দল।—নিজস্ব চিত্র।
শর্টসার্কিট না অন্তর্ঘাত? মেডিক্যাল কলেজে আগুন লাগার কারণ কী? এ নিয়েই দিনভর সরগরম হাসপাতাল চত্বর। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, আগুন লাগার পরও আলো জ্বলছিল। শর্টসার্টিক হলে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা। তবে কি আগুন অন্য কোনও কারণে লেগেছে?
হাসপাতাল কর্মীদের একাংশের দাবি, ফার্মেসিতে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা যথাযথ ছিল না। সবই পুরনো। একটি এগজস্ট ফ্যানের সমস্যা ছিল দীর্ঘ দিন ধরেই। গত অগস্ট মাসেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছিল। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি। ফলে শর্টসার্কিট থেকে আগুন লাগতেই পারে।
যদিও রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান নির্মল মাজির গলাতে অন্তর্ঘাতের তত্ত্বই শোনা গেল। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ‘‘অন্তর্ঘাতের বিষয়টি একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। আগুন লাগার পরেও ফার্মেসিতে আলো জ্বলছিল। শর্টসার্কিটের ফলে আগুন লাগলে, আলো জ্বলত না। ফার্মেসির অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থাও ঠিকই ছিল। কোনও সমস্যা নেই।’’
আরও পড়ুন: এ রাজ্যেও কি চালানি রুই-কাতলায় ফরমালিন? বাজারে বাজারে হানা
আরও পড়ুন: কলকাতার উড়ালপুল ঘিরে গুজব, পুলিশ বলল ভয়ের কিছু নেই
নির্মলবাবু সন্তুষ্ট হলেও, মেডিক্যালের ফার্মেসিতে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা নিয়ে সন্তুষ্ট নয় দমকল। ওই জায়গায় অগ্নি নির্বাপণ যন্ত্রগুলো অনেক পুরনো ছিল। হাসপাতাল সূত্রে খবর, ফার্মেসিতে এর আগেও শর্টসার্কিটের জেরে এগজস্ট ফ্যানে জায়গায় বেশ কয়েকবার ফুলকি দেখা দিয়েছিল। এ নিয়ে হাসপাতাল এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ারদের বিষয়টি জানানো হয়েছিল।
এক দিকে যেমন অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, তেমনই অন্তর্ঘাতের বিষয়টিও সামনে আসছে। এদিন সকালে ফরেন্সিকের একটি দল ওই ফার্মেসির ভিতরে ঘুরে দেখেন। সেখান থেকে নমুনাও সংগ্রহ করে। তবে আগুন লাগার বিষয়ে, এখনই কোনও মন্তব্য করতে চায়নি ফরেন্সিক দল।
ওই দলে থাকা এক আধিকারিকের বক্তব্য, “ওই ফার্মেসির বিভিন্ন জায়গা থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এই নমুনা পরীক্ষার পর, আগুন লাগার সঠিক কারণ জানা যাবে।”
অগ্নি-কাণ্ডের ঘটনার পর কোটি কোটি টাকার ওষুধ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এদিন অন্যান্য মেডিক্যাল কলেজ থেকে ওষুধ এনে এবং মেডিক্যালের ন্যায্য মূল্যের ওষুধ নিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্র খবর, ওষুধ নষ্ট হয়ে যাওয়া ইতিমধ্যেই পাঁচ কোটি টাকা অনুমোদন করা হয়েছে। এদিন এমার্জেন্সিতে আসা রোগী নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। পরিস্থিতি বিচার করে রোগী ভর্তি করা হয়েছে।