(বাঁ দিকে) সুদীপ্ত সেন এবং দেবযানী মুখোপাধ্যায় (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
সারদাকাণ্ডে তিনটি মামলায় বেকসুর খালাস হলেন অর্থলগ্নি সংস্থার কর্ণধার সুদীপ্ত সেন এবং সংস্থার অন্যতম কর্ত্রী দেবযানী মুখোপাধ্যায়। ২০১৩ সালে হেস্টিংস থানায় তিনটি এফআইআর রুজু হয়েছিল তাঁদের নামে। তিনটি মামলা মিলিয়ে প্রায় ১০-১৫ লক্ষ টাকার প্রতারণার অভিযোগ উঠেছিল। পরে রাজ্য সরকার তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করে। মঙ্গলবার ওই তিন মামলায় সুদীপ্ত এবং দেবযানীকে বেকসুর খালাস করে দেয় ব্যাঙ্কশাল আদালত।
যদিও তাঁদের বিরুদ্ধে আরও অনেক মামলা এখনও বিচারাধীন রয়েছে। সারদা অর্থলগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে ২০০টিরও বেশি মামলা রয়েছে। এ ছাড়া দুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই এবং ইডি-র মামলাও রয়েছে। ফলে তিনটি মামলায় বেকসুর খালাস হলেও জেলমুক্তি হচ্ছে না অভিযুক্তদের।
দেবযানীর হয়ে আদালতে সওয়াল করেন আইনজীবী শুভজিৎ বল এবং অভিজিৎ বল। আইনজীবী শুভজিতের দাবি, এই তিন মামলায় সাক্ষী হিসাবে ৫০ জনের নাম থাকলেও প্রায় ১৫ জনের কোনও সাক্ষ্য পাওয়া যায়নি। যাঁরা প্রতারিত হয়েছেন বলে অভিযোগ তুলেছিলেন, তাঁরাও প্রতারণা এবং বিশ্বাসভঙ্গ প্রমাণ করতে পারেননি বলেই দাবি আইনজীবীর। সেই কারণেই আদালত সুদীপ্ত এবং দেবযানীকে হেস্টিংস থানার ওই তিন মামলায় বেকসুর খালাস করে দিয়েছে বলে জানান দেবযানীর আইনজীবী। এই তিনটি মামলাই সারদাকর্তা এবং দেবযানীর বিরুদ্ধে প্রথম মামলা বলে জানান শুভজিৎ।
ব্যাঙ্কশাল আদালত তিনটি মামলায় বেকসুর খালাস করার পরে দেবযানীর মা শর্বরী মুখোপাধ্যায় বলেন, “সত্যের জয় কিছুটা হলেও হয়েছে। সময় লাগছে। এই মামলায় সময় লাগার কথা নয়, তা-ও লাগছে। মেনে নিয়েছি। আজ প্রথম কোনও মামলায় খালাস হল। এটির প্রেক্ষিতেই হয়তো অন্য মামলাতেও খালাস হবে।” তিনি আরও বলেন, “সময়কে মেনে নিতে হয়েছে। সময়ে বিচার পাইনি। বিচারে দেরি হচ্ছে। কারণ আমি কোনও দিনই বলব না। আমার মেয়ে কোনও দিনই মুখ খুলবে না। ১৩ বছর হয়ে গিয়েছে, এখনও খুলবে না। কিছু বলতে চাই না, বলব না।”
২০১৩ সালে সারদাকাণ্ড প্রকাশ্যে আসার পরে দেবযানীকে নিয়ে কাশ্মীরের সোনমার্গে গা ঢাকা দিয়েছিলেন সংস্থার কর্ণধার সুদীপ্ত। ওই বছরই কাশ্মীর থেকে গ্রেফতার করা হয় তাঁদের। তখন থেকে দু’জনই জেলে রয়েছেন। ২০২৩ সালে অবশ্য কয়েক ঘণ্টার প্যারোলে ছাড়া পেয়েছিলেন দেবযানী। রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বিভিন্ন থানায় প্রতারিতেরা অভিযোগ জানান সারদা অর্থলগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে। পরে তদন্তভার হাতে নিয়ে সিবিআইও মামলা রুজু করে। পাশাপাশি ইডি এবং সেবি-ও সুদীপ্তের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে।