Death

তিন দিন বাবার দেহ আগলে মেয়ে

পুলিশের অনুমান, অমলবাবুর মেয়ের মানসিক সমস্যা রয়েছে। কারণ, তিন দিন আগে বাবার মৃত্যু হলেও তিনি কাউকে কিছু জানাননি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০২০ ০৩:২৬
Share:

প্রতীকী ছবি

গত তিন দিন ধরে পাড়ার এক চিকিৎসককে ফ্ল্যাট থেকে বেরোতে দেখেননি অন্য বাসিন্দারা। তাঁর বছর তিরিশের মেয়েকে এলাকায় দেখা গেলেও তিনিও প্রতিবেশীদের কিছু জানাননি। শেষমেশ ওই তরুণী বৃহস্পতিবার দুপুরে কান্নাকাটি শুরু করায় পড়শিরা বিষয়টি জানতে চান। ওই তরুণী তখন জানান, তাঁর বাবা তিন দিন আগে মারা গিয়েছেন। এই তিন দিন তিনি বাবার মরদেহের সঙ্গেই কাটিয়েছেন। কিছু খেতেও পাননি।

Advertisement

এর পরেই পড়শিরা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে হাওড়ার ইছাপুরের কাছে সুপারিবাগানে একটি তেতলা ফ্ল্যাটের দোতলা থেকে অমল মান্না (৭০) নামে ওই চিকিৎসকের পচাগলা দেহ উদ্ধার করে। জানা গিয়েছে, মেয়ের সঙ্গে একাই থাকতেন অমলবাবু। তাঁর স্ত্রী মারা গিয়েছেন। পুলিশের অনুমান, অমলবাবুর মেয়ের মানসিক সমস্যা রয়েছে। কারণ, তিন দিন আগে বাবার মৃত্যু হলেও তিনি কাউকে কিছু জানাননি।

এই ঘটনা উস্কে দিয়েছে পাঁচ বছর আগে রবিনসন স্ট্রিট-কাণ্ডের স্মৃতি। ২০১৫ সালের ওই ঘটনায় জানা গিয়েছিল, পার্থ দে নামে রবিনসন স্ট্রিটের এক বাসিন্দা তাঁর মৃত বোনের সঙ্গে কয়েক মাস কাটিয়েছেন। পুলিশ গিয়ে পার্থর বাড়ি থেকে তাঁর বোনের পচাগলা দেহ উদ্ধার করে। শৌচাগার থেকে উদ্ধার হয় পার্থর বাবার দগ্ধ দেহ। বাড়ির দুই পোষ্য কুকুরেরও পচাগলা দেহ মিলেছিল।

Advertisement

হাওড়ার ঘটনায় পুলিশ জানিয়েছে, গত ১৫ বছর ধরে সুপারিবাগানের ওই ফ্ল্যাটে ভাড়া ছিলেন অমলবাবু। তবে গত তিন দিন তাঁকে দেখেননি ফ্ল্যাটের অন্য বাসিন্দারা। এ দিন ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পরে প্রতিবেশীরাই অমলবাবুর মেয়ের খাবারের ব্যবস্থা করেন। পুলিশ জানিয়েছে, কী ভাবে ওই চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে তা স্পষ্ট নয়। সে কারণে এ দিন কোভিড ১৯-এর সুরক্ষা-বিধি মেনে তাঁর দেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশকর্মীরা পিপিই পরে দেহ উদ্ধার করে ময়না-তদন্তে পাঠান।

পুলিশ জানিয়েছে, ময়না-তদন্তের রিপোর্ট এলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। ওই চিকিৎসকের মেয়েকে হোমে পাঠানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন