বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে মৃত্যু, তবু অসতর্ক স্থানীয়েরা

এ দিন সকাল ৭টা নাগাদ তাপস সর্দার (৩৪) নামে ওই শ্রমিক নিউ টাউনের গৌরাঙ্গনগরের ভাড়াবাড়ি থেকে চিংড়িহাটার প্রকল্প এলাকায় কাজে যাচ্ছিলেন। তিনি আদতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সন্দেশখালির বাসিন্দা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০১৮ ০১:৪৬
Share:

অসচেতন: ডিভাইডারে দাঁড়িয়ে রাস্তা পেরোনোর অপেক্ষায় পথচারীরা। সোমবার, মহিষবাথানে। নিজস্ব চিত্র

ট্র্যাফিক নিয়ম না মেনে রাস্তার উল্টো দিক থেকে সাইকেল নিয়ে আসছিলেন এক ঠিকা শ্রমিক। তখনই একটি বাসের সামনে পড়ে যান তিনি। মাটিতে পড়ে গেলে তাঁর মাথার উপর দিয়ে চলে যায় বাসের পিছনের চাকা। সোমবার সকালে সল্টলেকের মহিষবাথানে বক্স ব্রিজের উপরে এই দুর্ঘটনার পরেও অবশ্য হুঁশ ফেরেনি স্থানীয় পথচারী ও সাইকেল আরোহীদের।

Advertisement

এ দিন সকাল ৭টা নাগাদ তাপস সর্দার (৩৪) নামে ওই শ্রমিক নিউ টাউনের গৌরাঙ্গনগরের ভাড়াবাড়ি থেকে চিংড়িহাটার প্রকল্প এলাকায় কাজে যাচ্ছিলেন। তিনি আদতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সন্দেশখালির বাসিন্দা। পুলিশ জানিয়েছে, সাইকেল নিয়ে তাপসবাবু যখন সেতুর মাঝে, তখন বিমানবন্দরগামী একটি বাসের সামনে পড়ে যান তিনি। বাসের ধাক্কায় রাস্তায় ছিটকে পড়েন। স্থানীয় একটি সাইকেল দোকানের মালিক প্রকাশ তালুকদার বলেন, “দুর্ঘটনার পরে দ্রুত ডান দিক কাটিয়ে চালক বাস নিয়ে চলে যান। সেই সময় বাসের বাঁ দিকের পিছনের চাকায় যুবকের মাথা পিষ্ট হয়ে যায়।” বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাপসবাবুকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

পুলিশ জানিয়েছে, গৌরাঙ্গনগর, সুলুংগুড়ির মতো নিউ টাউন থানা এলাকা থেকে অনেকেই ওই রাস্তা ধরে কাজে যান। ভিতরের রাস্তা ধরে তাঁরা বক্স ব্রিজের মুখে সার্ভিস রোডে পৌঁছন। নবদিগন্তের দিকে যেতে হলে বেশ খানিকটা ঘুরে বিশ্ববঙ্গ সরণির অপর প্রান্তে যাওয়াটাই নিয়ম। কিন্তু পুলিশ সূত্রের খবর, সেই ট্র্যাফিক নিয়ম না মেনে অনেকেই তাপসবাবুর মতো উল্টো দিকের রাস্তা ধরে সেতুর উপরে সাইকেল নিয়ে উঠে পড়েন। এ দিন এই ট্র্যাফিক নিয়ম না-মানার কারণেই দুর্ঘটনার শিকার হন তাপস। মৃতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে অজ্ঞাতপরিচয় বাসচালকের বিরুদ্ধে গাফিলতির কারণে মৃত্যু ঘটানোর অভিযোগ দায়ের হয়েছে।

Advertisement

আরও পড়ুন: গুলি করল কে, অন্ধকারে পুলিশ

দুর্ঘটনার পরে সেতু দিয়ে ঝুঁকির পারাপার বন্ধে পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হয়। সকাল থেকে সিভিক ভলান্টিয়ার স্থানীয়দের সতর্ক করার কাজ করেন। কিন্তু তাতেও বিশেষ কাজ হয়নি। এ দিন সকাল ১১টা নাগাদ ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, বিধাননগর পুরনিগমের বরো অফিসের রাস্তা থেকে উল্টো দিকের বাসস্টপ থেকে নিউ টাউনগামী বাস ধরার জন্য প্রাণ হাতে নিয়ে সকলে পারাপার করছেন। কখনও আবার ডিভাইডারে দাঁড়িয়ে যানবাহন কমার অপেক্ষা করছেন তাঁরা। কেন এ ভাবে ঝুঁকির পারাপার? তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্মী সুদীপ বর্মন বলেন, ‘‘সেতুর তলা দিয়ে অনেকটা ঘুরতে হয়।” এক স্থানীয় বাসিন্দা বিভা মিশ্রের কথায়, “অর্ধেক রাস্তা পার হয়েই গিয়েছিলাম। তাই পুলিশ বারণ করলেও চলে এলাম। সিগন্যাল লাল থাকায় তখন গাড়িও আসছিল না। কাল থেকে আর হবে না।’’

এ ধরনের মন্তব্য শুনে বিধাননগর কমিশনারেটের এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, বরো অফিসের রাস্তায় রেলিং লাগানো ছাড়া উপায় নেই। এ নিয়ে ইতিমধ্যে নবদিগন্ত কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলেও কমিশনারেট সূত্রে খবর। যদিও নবদিগন্তের এক কর্তা বলেন, ‘‘এমন প্রস্তাব পাইনি। পুলিশের তরফে লিখিত প্রস্তাব এলে নিশ্চয় রেলিং লাগিয়ে দেওয়া হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন