Dengue

ডেঙ্গির প্রকোপ বৃদ্ধিতে দায় এড়ানোর চাপানউতোর জারি

মাসখানেক আগে খড়দহের বাসিন্দা কলকাতা পুরসভার এক আধিকারিক শান্তনু মজুমদারের মৃত্যু হয়েছে ডেঙ্গিতে। ওই পুর আধিকারিকের বাবা অসিতকুমার মজুমদারও আক্রান্ত হয়েছিলেন ডেঙ্গিতে।

Advertisement

সুপ্রকাশ মণ্ডল

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:২০
Share:

প্রতীকী ছবি।

বর্ষা উতরলেও গোল বাধল হেমন্তে।

Advertisement

পুজোর পরে যে এ ভাবে ডেঙ্গি হানা দেবে, ভাবেইনি উত্তর শহরতলির পুরসভাগুলি। এরই মধ্যে পুজোর অকাল বর্ষণে জল জমেছে বিভিন্ন এলাকায়। বেড়েছে ডেঙ্গিবাহী মশার উপদ্রব। সেই মশার কামড়ে বেড়েছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা। এমনকি কয়েকটি মৃত্যুও হয়েছে। পুর কর্তৃপক্ষের একাংশ মানছেন, পুজোর সময় মশা নিধনের কাজ হয়নি বলেই ডেঙ্গি ডালপালা মেলেছে। পাশাপাশি তাঁরা দায়ী করছেন বাসিন্দাদের অসচেতনতাকেও।

মাসখানেক আগে খড়দহের বাসিন্দা কলকাতা পুরসভার এক আধিকারিক শান্তনু মজুমদারের মৃত্যু হয়েছে ডেঙ্গিতে। ওই পুর আধিকারিকের বাবা অসিতকুমার মজুমদারও আক্রান্ত হয়েছিলেন ডেঙ্গিতে। বাইপাসের ধারে একই হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তাঁরা। বাবা সুস্থ হলেও ফেরা হয়নি ছেলের। ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন ব্যারাকপুর তালবাগানের বাসিন্দা দীপককুমার দাস। তার দু’দিন পরেই মৃত্যু হয় পলতার বাসিন্দা সুভাষ সমাদ্দারের। এই মুহূর্তে ব্যারাকপুর থেকে বরাহনগর পর্যন্ত অনেকেই ডেঙ্গি আক্রান্ত। ডিসেম্বরের শুরু থেকে পারদ নামলেও ডেঙ্গি কমার বিরাম নেই। উপরন্তু বাড়ছে ডেঙ্গি রোগী। এতে চিন্তা বেড়েছে বিশেষজ্ঞদের। কারণ, এত দিন জানা ছিল শীত পড়লে এডিস মশার উপদ্রব কমে। কিন্তু শীতের সঙ্গে যুঝেও এডিস যে ভাবে ভোগাচ্ছে, তাতে পুরকর্তাদের কপালে ভাঁজ পড়েছে।

Advertisement

তবে এলাকাবাসীর অভিযোগ, ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্ত পুরসভাগুলির সাফাই ঠিক মতো না করার ফল। তার প্রমাণ মিলবে, তালপুকুরে দীপকবাবুর পাড়ায় গেলেই। তাঁর বাড়ির অদূরেই পড়ে রয়েছে জঞ্জালের স্তূপ। ওই পাড়ায় বেশ কয়েকটি বাড়ির পিছনের ফাঁকা জমিতে আগাছা হয়ে রয়েছে, সেখানে পড়ে পুরনো টায়ার, অব্যবহৃত বাসন, থার্মোকল এবং প্লাস্টিকের কাপ-ডিশ। বাসিন্দাদের অভিযোগ, অনেকেই ওই ফাঁকা জমিতে বাতিল জিনিস ফেলে যান। তবে পুরসভাও পরিষ্কার করে না বলে অভিযোগ।

ব্যারাকপুরের পুর প্রধান উত্তম দাস অবশ্য সে তথ্য মানছেন না। তিনি বলছেন, ‘‘মশাবাহিত রোগ ঠেকাতে এলাকায় পুরসভার অভিযান জারি আছে। পুর এলাকা নিয়মিত পরিষ্কার হয়। মশার লার্ভা ধ্বংস করতে তেলও ছড়ানো হয়। মশা তাড়ানোর ধোঁয়াও দেওয়া হয়।’’ নাগরিকদের মধ্যে সচেতনতার অভাবকেই তিনি ডেঙ্গির প্রকোপ বৃদ্ধির জন্য দায়ী করছেন। তাঁর কথায়, ‘‘মানুষ যদি সচেতন না হন, তা হলে পুরসভার পক্ষে সব কাজ করা মুশকিল। তাঁদের অসচেতনতাই ডেঙ্গি ছড়ানোর মূলে।’’ একই অবস্থা ওই পুর এলাকার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের পলতায়। সেখানেও রাস্তার ধারে ঝোপঝাড়ে পড়ে রয়েছে বাড়ির অব্যবহৃত জিনিস। পুর কর্তৃপক্ষ বলছেন, ‘‘এ সব তো বাসিন্দারাই লুকিয়ে ফেলে যান। বাড়ি থেকে জঞ্জাল নেওয়ার ব্যবস্থা সত্ত্বেও এই অসচেতনতা কেন থাকবে বাসিন্দাদের মধ্যেই। সব দায় কেন পুরসভার উপরেই বর্তাবে!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন