ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণে বাধা সেই অজ্ঞতাই

এ দিন আলিপুরে ‘ডায়াবিটিস আপডেট ২০১৯-এর মঞ্চ তৈরির কারিগর হলেন কলকাতায় ‘ডায়াবিটিস অ্যান্ড এন্ডোক্রিনোলজি’ নিয়ে কাজ করা একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সভাপতি চিকিৎসক তীর্থঙ্কর চৌধুরী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০১৯ ০১:৫৯
Share:

সতর্ক থাকুন ডায়াবিটিসে। ছবি: শাটারস্টক।

কোনও নির্দিষ্ট একটি পথ নয়। ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণে প্রত্যাশিত লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছতে হলে সামগ্রিক ভাবে লড়াই প্রয়োজন। রবিবার আলিপুরের এক হোটেলে সেই লড়াইয়ের বিভিন্ন কৌশল নিয়ে আলোচনা করলেন দেশ-বিদেশ থেকে আসা ডায়াবিটিসের চিকিৎসকেরা।

Advertisement

এ দিন আলিপুরে ‘ডায়াবিটিস আপডেট ২০১৯-এর মঞ্চ তৈরির কারিগর হলেন কলকাতায় ‘ডায়াবিটিস অ্যান্ড এন্ডোক্রিনোলজি’ নিয়ে কাজ করা একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সভাপতি চিকিৎসক তীর্থঙ্কর চৌধুরী। ২০১১ সালে ডায়াবিটিসের চিকিৎসা যাতে সর্বস্তরে পৌঁছয় তা নিয়ে কাজ শুরু করে এই সংস্থা। বিনামূল্যে চিকিৎসার পাশাপাশি স্কুলগুলিতে সচেতনতা গড়ে রুবি পার্কের অডিটোরিটামে কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছিল। দুঃস্থদের কাছে ডায়াবিটিসের উন্নত চিকিৎসা পৌঁছে দিতে কলকাতা পুরসভার সঙ্গে চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে।

সেই ধারার সঙ্গে সাযুজ্য রেখেই এ দিনের আলোচনাসভা। যার শুরুতে সাউদাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডায়াবিটিস অ্যান্ড এন্ডোক্রিনোলজির শিক্ষক-চিকিৎসক রিচার্ড হোল্ট জানান, এই রোগের সাফল্যের পথে অন্যতম বাধা হল রোগটি সম্পর্কে অজ্ঞতা। আর বিশ্বের নিরিখে এই বিভাগে বেশ পিছিয়েই রয়েছেন এ দেশের নাগরিকেরা। একইসঙ্গে তিনি জানান, এই রোগের চিকিৎসায় যে নির্দেশিকা রয়েছে লক্ষ্যমাত্রা অধরা থাকার প্রশ্নে তারও একটা প্রভাব রয়েছে। অনুষ্ঠানের আয়োজক সংস্থার সভাপতি চিকিৎসক তীর্থঙ্কর চৌধুরী পরে সেই মন্তব্যের ব্যাখ্যায় জানান, কোন রোগীর জন্য কী ওষুধ দেওয়া হবে তা রোগীর শারীরিক অবস্থা এবং চিকিৎসকের উপরে নির্ভর করা উচিত।

Advertisement

রয়্যাল লিভারপুল হাসপাতালের এন্ডোক্রিনোলজি বিভাগের শিক্ষক-চিকিৎসক জিতেন ভোরা বলেন, ‘‘সুগার নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি, হৃৎপিণ্ড, কিডনি যাতে সুস্থ থাকে এবং ওজন না বাড়ে সে দিকেও খেয়াল রাখা উচিত।’’

লন্ডনের শেফিল্ডের এন্ডোক্রিনোলজি বিভাগের শিক্ষক-চিকিৎসক সাইমন হেলার হাইপোগ্লাইসিমিয়ার মোকাবিলা কী ভাবে সম্ভব তা এ দেশের চিকিৎসকদের কাছে তুলে ধরেন। চিকিৎসকেরা জানান, রক্তে শর্করার পরিমাণ কমে গেলে গা ঝিমঝিম করে। ঘাম দেয়। রোগী সংজ্ঞাহীন হয়ে যেতে পারেন। ‘হাইপোগ্লাইসিমিয়া’র লক্ষ্মণগুলি বুঝতে না পারলে তা হৃৎপিণ্ডে প্রভাব ফেলতে পারে। বিহার থেকে আগত চিকিৎসক অজয় কুমার জানান, নতুন ইনসুলিন এবং তার সুফলের কথা।

কিন্তু সেই চিকিৎসা পদ্ধতির খরচ তো অনেক! এ দেশের অর্থনৈতিক মানচিত্রে তা কি কার্যকর হবে? এ ক্ষেত্রে কম খরচের ওষুধ হিসাবে পরিচিত একটি নাম নিয়ে যে বিভ্রান্তি রয়েছে তা কাটানোর চেষ্টা করেন এসএসকেএমের এন্ডোক্রিনোলজির বিভাগীয় প্রধান শিক্ষক-চিকিৎসক শুভঙ্কর চৌধুরী।

এ দিনের আলোচনাসভায় শিক্ষক-চিকিৎসক সুকুমার মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আধুনিক চিকিৎসার খরচ এ দেশে সকলে বহন করতে পারেন না। অনেকে মাঝপথে চিকিৎসা বন্ধ করে দেন। খাদ্যাভ্যাসের জন্য এখন বেশির ভাগ বাচ্চা মোটা হওয়ার রোগে ভুগছে। লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছতে স্কুলস্তর থেকে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন