মঙ্গলবার বেহাল তারাতলা রোডে প্রতিবন্ধী সংগঠনের বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।
গত কয়েক মাস ধরে বেহাল হয়ে রয়েছে তারাতলা রোড। যা একদিকে গার্ডেনরিচ, অন্যদিকে বাটা, বজবজ পার হয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বড় অংশের যাত্রী ও মাল পরিবহণের অন্যতম মূল সড়ক। এই রাস্তার উপরে রয়েছে একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। রয়েছে প্রতিবন্ধী সংগঠন ‘ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সেরিব্রাল পলসি’র দফতরও। একাধিক দুয়ারে ঘুরেও সুরাহা মেলেনি। বাধ্য হয়ে মঙ্গলবার রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন ভুক্তভোগী প্রতিবন্ধী মানুষজন।
প্রতিবন্ধী শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে তাঁদের অভিভাবক, শুভানুধ্যায়ী মিলিয়ে প্রায় ৪০০ মানুষ অংশ নেন বিক্ষোভে। ভাঙা রাস্তায় অনবরত পণ্যবাহী গাড়ি চলার কারণে বেশিরভাগ সময় ধুলোয় ঢেকে থাকছে চার পাশ। বৃদ্ধি পাচ্ছে শিশুদের শ্বাসকষ্ট। উপরন্তু, রাস্তার দুদিকে গত চার মাস ধরে জল জমে থাকায় পথচারীদের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে।
ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সেরিব্রাল পলসির তরফে সুদীপেন্দু দত্ত মঙ্গলবার বলেন, ‘‘কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষ থেকে শুরু করে পুরসভা— সব জায়গাতেই একাধিক বার বলা হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি।’’ তিনি আরও জানিয়েছেন, রাস্তা সংস্কারের জন্য কিছু জায়গায় মালপত্র ফেলে রাখা হলেও বহুলাংশেই কাজ শুরু হয়নি। যেখানে শুরু হয়েছে, সেখানেও গতি খুব ‘শ্লথ’ বলে দাবি সুদীপেন্দুর। কবে হাল ফিরবে তারাতলা রোডের, কবে স্বস্তিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে পারবেন পড়ুয়ারা, কবেই বা স্বস্তিতে যাতায়াত করতে পারবে প্রতিবন্ধী শিশু-কিশোরেরা— এর কোনও সদুত্তর পাওয়া যাচ্ছে না।
রাস্তাটির মেরামতির বিষয়ে পূর্তমন্ত্রী পুলক রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘ওই রাস্তাটি পূর্ত দফতর বা রাজ্য সরকারের অধীনে নয়। ফলে ইচ্ছা থাকলেও বা লোকজনের সমস্যা হলেও তার রক্ষণাবেক্ষণ আমরা করতে পারি না। পাশেই বিবিডি রোডের সংস্কারের দরপত্রের প্রক্রিয়া হয়ে গিয়েছে। তিন-চার দিনের মধ্যে কাজ শুরুও হয়ে যাবে। কারণ, ওই রাস্তাটি আমাদের অধীনে।’’ তিনিই জানান, তারাতলা রোড কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষের অধীন। তারাই এর সংস্কার এবং রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করার অধিকারী। কলকাতা বন্দরের সিনিয়র জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ওই রাস্তাটি মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে। সঞ্জয় বলেন, ‘‘তারাতলা মোড়ে সিইএসসি ট্রান্সফর্মার স্টেশনের সামনে থেকে রাস্তা মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে। চলছে পেভার ব্লক বসানোর কাজও। প্রায় ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তা মেরামতে খরচ হবে ২৫ লক্ষ টাকার বেশি।’’ আট মাসের জন্য ওই রাস্তায় যানচলাচল নিয়ন্ত্রণের অনুমোদনও বন্দর কর্তৃপক্ষ পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।