স্বাদ নিয়ে সংশয়, জামাইষষ্ঠীতে ইলিশে অনীহা

গত কয়েক দিন ধরে পাতিপুকুর-সহ কলকাতার অন্যান্য পাইকারি বাজারে ইলিশ ঢুকছে। তবে সবই হিমঘরের, দামও চড়া। পাতিপুকুর ব্যবসায়ী সমিতির কর্তা কমল দাস জানান, সদ্য ধরা পড়া ইলিশ পাওয়ার সম্ভাবনা এখন প্রায় নেই-ই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০১৯ ০৩:৩০
Share:

প্রতীকী চিত্র।

বাংলাদেশ থেকে ইলিশ আমদানি অনেক দিন বন্ধ। চোরাপথে রাজ্যের বাজারে বাংলাদেশের কিছু ইলিশ ঢুকলেও ইদানীং তা-ও হচ্ছে না। এ অবস্থায় কলকাতা-সহ শহরতলির বাজার ভরে রয়েছে মায়ানমার, দিঘা, ডায়মন্ড হারবার-সহ বিভিন্ন জায়গার ইলিশে। বর্ষা না নামায় তেমন স্বাদও নেই সেই সব ইলিশের। ফলে জামাইদের জন্য মাংস এবং অন্য মাছেই আস্থা রাখছেন শাশুড়িরা। সেই কারণে জামাইষষ্ঠীতে ইলিশের দর তেমন নেই। মাথায় হাত ব্যবসায়ীদেরও।

Advertisement

গত কয়েক দিন ধরে পাতিপুকুর-সহ কলকাতার অন্যান্য পাইকারি বাজারে ইলিশ ঢুকছে। তবে সবই হিমঘরের, দামও চড়া। পাতিপুকুর ব্যবসায়ী সমিতির কর্তা কমল দাস জানান, সদ্য ধরা পড়া ইলিশ পাওয়ার সম্ভাবনা এখন প্রায় নেই-ই। আজ, শনিবার কিছু পাওয়া গেলেও ছোট ইলিশের দামও হবে অনেক বেশি। তিনি জানান, দীঘা, ডায়মন্ড হারবার-সহ অন্যান্য জায়গা থেকে হিমঘরের ইলিশই বাজারগুলিতে আসছে।

যা খবর, খুচরো বাজারে হিমঘরের ৫০০-৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশই বেশি পাওয়া যাচ্ছে। শুক্রবার উত্তর কলকাতার কয়েকটি বাজারে ৬০০ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হয়েছে হাজার টাকার উপরে। গত কয়েক বছর ধরে মায়ানমার থেকে রাজ্যে প্রচুর ইলিশ আমদানি হচ্ছে।

Advertisement

জামাইষষ্ঠীর জন্য বাজারে আগাম ইলিশ মজুত করেছিলেন জেলার ব্যবসায়ীরাও। বারাসতের মাছ ব্যবসায়ী বিকাশ পাড়ুই বলেন, ‘‘গত বছর এ সময়ে ইলিশের বাজার দর ছিল ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা কেজি। এ বার দাম কম থাকলেও মানুষ মুখ ফেরাচ্ছেন। তাঁদের ধারণা, ইলিশের নাকি সেই স্বাদ মিলবে না।’’

শুক্রবার তাই ইলিশ ছেড়ে অন্য মাছ এবং মাংসের দোকানের সামনেই বেশি ঘুরতে দেখা গেল শ্বশুরদের। খোকন ধর নামে এক ক্রেতা বলেন, ‘‘মেয়ের বিয়ে দিয়েছি মাস তিনেক আগে। এই ষষ্ঠীতেই প্রথম মেয়ে-জামাইকে আপ্যায়ন করব। বাজারে এসে দেখি ইলিশের দামও মাত্র ৮০০ টাকা কেজি। কিন্তু সেই স্বাদ কোথায়?’’

হাওড়ার পাইকারি মাছ বাজারেও ইলিশের জোগান থাকা সত্ত্বেও চাহিদা নেই। পাইকারি মাছ ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বেশি দামের জন্য যে চাহিদা কমেছে, তাও নয়। এক কেজির মাছ পাওয়া যাচ্ছে হাজার টাকায়। কিন্তু তা সত্ত্বেও ইলিশের চাহিদা কম। হাওড়ার পাইকারি মাছ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সৈয়দ আনোয়ার মকসুদ বলেন, ‘‘গত বছরে যে চাহিদা ছিল এ বছর তা আর নেই। ১০০ কার্টন মাছ আনলে বিক্রি হয়েছে মাত্র ১০ কার্টন। বাকি মাছ ফ্রিজে পড়ে রয়েছে।’’ তিনি জানান, মায়ানমার থেকে জাহাজে মাছ আনতে প্রচুর খরচ হয়। ইলিশের চাহিদা না থাকলে সেই টাকাও ওঠে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন