প্রতীকী ছবি।
ডেঙ্গির জীবাণুবাহী মশার বংশবৃদ্ধি রুখতে কলকাতা বন্দর, বিএসএনএল, ডাক বিভাগ-সহ বিভিন্ন সংস্থাকে আরও সতর্ক হওয়ার নির্দেশ দিল কেন্দ্রীয় সরকারের জাতীয় পতঙ্গবাহী রোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (ন্যাশনাল ভেক্টর বোর্ন ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রাম)। বর্ষা আসতেই ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়ার জীবাণুবাহী মশার বংশবৃদ্ধি রুখতে তৎপর হতে চায় পুর প্রশাসনও। তারই পদক্ষেপ হিসেবে মঙ্গলবার কলকাতা পুরসভার এক বৈঠকে যোগদান করেন কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিরা। ওই বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য ছিল, অফিস বিল্ডিং বা তার আশপাশে মশার আঁতুড়ঘর যাতে না গড়ে ওঠে সে বিষয়ে সচেতন করা।
এনভিবিডিসিপি-র অতিরিক্ত আঞ্চলিক অধিকর্তা তাপস ভট্টাচার্য জানান, গত বছরের অভিযানে কলকাতা বন্দর এলাকায় ময়লা ফেলার ৩৮টি পাত্রের ১৮টি-তে এবং বিএসএনএল ও ডাকঘর কর্তৃপক্ষের অব্যবহৃত বিল্ডিংয়ে ডেঙ্গির জীবাণুবাহী মশার লার্ভা মিলেছিল। এ বার সে সব নিয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয় প্রতিনিধিদের। পুরসভা সূত্রের খবর, বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি জানান, সীমিত পরিকাঠামো সত্ত্বেও সতর্ক থাকবেন তাঁরা।
পুরসভার পক্ষ থেকে এক পতঙ্গবিদ জানান, গত বছর পয়লা জুন থেকে ১৭ জুন পর্যন্ত বৃষ্টির পরিমাণ ছিল ৪২ মিলিমিটার। এ বছর ওই সময়ে তার পরিমাণ ১৪৩ মিলিমিটার। তাই এ বছর সকলকে আরও বেশি সচেতন থাকতে হবে। প্রতিবারই পুরসভা অভিযোগ করে, একাধিক কেন্দ্রীয় সংস্থা পুরসভার র্যাপিড অ্যাকশন টিমকে চত্বরে ঢুকতে দেয় না। ফলে শহরের কিছু এলাকায় মশার বংশবৃদ্ধি রোধের কাজ ব্যাহত হয়। এ দিনের বৈঠকে রাজ্য সরকারের একাধিক দফতর-সহ কেন্দ্রের রেল, বন্দর, কলকাতা টেলিফোন্স, ইস্টার্ন কম্যান্ড, এসআরএফটিআই, মেট্রো রেল, কেন্দ্রীয় পূর্ত দফতর-সহ আরও কয়েকটি সংস্থার প্রতিনিধিদের সামনে সেই বিষয়টিও ওঠে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, শুধু জমা জল নয়, বৃষ্টির জল শুষে নেওয়া আবর্জনাতেও ডেঙ্গির জীবাণুবাহী এডিস ইজিপ্টাই মশা বংশবৃদ্ধি করে। তাই শহরের কোথাও আবর্জনা যাতে না জমে তা নিশ্চিত করতে হবে। সেই কাজ পুরসভার একার পক্ষে সম্ভব নয়। তা জানিয়ে মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষ বলেন, ‘‘কোন অফিসে জল জমে আছে, কোন বিল্ডিংয়ে আবর্জনা রয়েছে তা সংশ্লিষ্ট সংস্থাকেই খেয়াল রাখতে হবে।’’ তবে লার্ভা মারার পরিকাঠামো না থাকলে পুর প্রশাসন অবশ্যই সহায়তা করবে। পুরসভা সূত্রের খবর, এ দিন সকলে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। কাজের অগ্রগতি দেখতে জুলাইয়ে ফের বৈঠক হবে বলে অতীনবাবু এ দিন জানান।