Meat

ওই আসছে! বিরিয়ানি ফেলেই দৌড়

তাই আচমকা তাঁর দোকানের দিকে আসছে দেখে হাঁড়ি, কড়াই ফেলে রেখেই চম্পট দিলেন দোকানি। উনুনে বসানো হাঁড়িতে অবশ্য তখনও ফুটছে বিরিয়ানির চাল! 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০১৮ ০১:১৫
Share:

সবে মাত্র হাঁড়িতে বিরিয়ানির চাল ফুটতে শুরু করেছে। আচমকাই দোকানি শুনতে পেলেন ‘এ বার এ দিকেই আসছে’!

Advertisement

দোকান খোলা ইস্তক তিনি শুনছিলেন, পচা মাংস খুঁজতে এলাকার রেস্তরাঁ, হোটেলে হানা দেবেন পুরসভার কর্তারা। সঙ্গে থাকবে পুলিশও। কিন্তু কোন এলাকায় যাবে সেই দল, তা জানা ছিল না কারও। তাই আচমকা তাঁর দোকানের দিকে আসছে দেখে হাঁড়ি, কড়াই ফেলে রেখেই চম্পট দিলেন দোকানি। উনুনে বসানো হাঁড়িতে অবশ্য তখনও ফুটছে বিরিয়ানির চাল!

শুক্রবার সকালে পচা মাংস ধরপাকড় অভিযানে বেরিয়ে এমনই অভিজ্ঞতা হল কামারহাটি পুরসভার কর্তাদের। কেন ওই দোকানি চম্পট দিলেন তা জানতে পুরকর্মীরা তাঁর পিছু নিলেও অবশ্য নাগাল পাননি। শেষে সেই দোকানে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে চাবি নিয়ে চলে আসেন পুরকর্তারা। পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদ (স্বাস্থ্য) বিমল সাহা বলেন, ‘‘কেন ওই দোকানি এ ভাবে পালালেন তা বুঝলাম না। মনে হচ্ছে কোনও গন্ডগোল রয়েছে তাই ভয়ে পালিয়েছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখেছি।’’

Advertisement

পচা মাংসের সন্ধানে এ দিন পুর এলাকার বেলঘরিয়া, ডানলপ, দক্ষিণেশ্বর অঞ্চলে হানা দেন পুরকর্তারা। দলে ছিলেন চেয়ারম্যান গোপাল সাহা, চেয়ারম্যান পারিষদ বিমল সাহা-সহ স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিক এবং বেলঘরিয়া থানার পুলিশ। গোপালবাবু জানান, ১৪-১৫টি দোকানে গিয়ে সব দিক খতিয়ে দেখা হয়েছে। সমস্ত জায়গা থেকেই সংগ্রহ করা হয়েছে মাংসের নমুনা। তা এ দিনই পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘আচমকা অভিযান চালানো হয়েছে। কয়েকটি জায়গায় ফ্রিজার থেকে এমন মাংস পেয়েছি, যা থেকে খুব কটু গন্ধ বেরোচ্ছিল।’’

স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকেরা জানান, অনেক রেস্তরাঁর ফ্রিজারগুলির অবস্থাও খুবই বেহাল। কত দিন সেখানে মাংসগুলি রাখা রয়েছে তার কোনও হিসেব নেই। মশলা বানিয়ে কৌটোয় ভরে মাসের পর মাস রেখে দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে পুরো পরিবেশই অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর। এ দিন বিটি রোডে একটি বিরিয়ানি তৈরির জায়গায় হানা দেন পুর কর্তারা। তাঁরা জানান, ওই জায়গায় কেন্দ্রীয় ভাবে অনেকগুলি দোকানের জন্য বিরিয়ানি রান্না করা হত। সেখানে তল্লাশি চালিয়ে মাংসের বড় বড় টুকরো মিলেছে। যা দেখে প্রাথমিক ভাবে গবাদি পশুর মাংস বলেই মনে হচ্ছে বলেই জানান বিমলবাবু। ওই মাংস পরীক্ষা করতে পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘হোটেল ও রেস্তরাঁগুলিকে ফুড লাইসেন্স ও ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে দেখা করতে বলা হয়েছে। এ বারই বোঝা যাবে কার কী অনুমতি রয়েছে।’’

অন্য দিকে ভাগাড়-কাণ্ডের পরেই কামারহাটি ভাগাড়ের নিরাপত্তা বাড়িয়ে দিয়েছে পুরসভা। দিনে দু’টি শিফটে দু’জন নিরাপত্তারক্ষী বাড়িয়ে চার জন করা হয়েছে। পুলিশের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ওই ভাগাড়ের চারপাশে সিসি ক্যামেরা লাগানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে বলেও জানান পুরকর্তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন