কয়েক ঘণ্টা আগেই উদ্ধার করা হয়েছে অপহৃতকে। কিন্তু ওয়াটগঞ্জ থানার দুই মহিলা পুলিশকর্মীর ফুরসত নেই। যখন-তখন কেঁদে উঠছে সেই ‘অপহৃত’। কোলে তুলে নিয়ে শান্ত করতে হচ্ছে তাকে। মুখে পুরে দিতে হচ্ছে দুধের বোতল। গুনগুনিয়ে ঘুমপাড়ানি গানও গাইতে হচ্ছে! সব মিলিয়ে আট মাসের একরত্তিকে সামলাতে কার্যত হিমশিম দু’জনে। তবু হাসিমুখে রাতভর মেয়েটিকে সামলে গিয়েছেন তাঁরা।
পুলিশ জানিয়েছে, গত ৭ এপ্রিল ওই এলাকারই বাসিন্দা কার্তিক শাহ তাঁর আট মাসের মেয়ে স্মৃতিকে অপহরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। কার্তিকের দাবি ছিল, তাঁর স্ত্রীর আত্মীয়েরাই অপহরণ করেছেন। তদন্তে নেমে ওয়াটগঞ্জ থানার দুই এসআই তথাগত সাধু ও অজিত গুপ্ত, এএসআই শ্রাবণী বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কনস্টেবল সোনালি বিশ্বাস উত্তরপ্রদেশের সুলতানপুরে হানা দেন। স্মৃতির মাসির বাড়ি গিয়ে তাঁরা দেখেন, দিদিমা নাতনিকে নিয়ে বসে আছেন। স্মৃতিকে উদ্ধার করে বারাণসী চলে আসেন তাঁরা।
অচেনা কোলে উঠেই কাঁদতে শুরু করেছিল মেয়েটি। তাকে সামলাতে দুধের বোতল, ঝুমঝুমি কেনার পরামর্শ দেন দুই মহিলা পুলিশকর্মী। মায়ের মতোই শিশুটিকে আগলে ছিলেন তাঁরা। এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘ওই পুলিশকর্মীদের পরিবারেও তো শিশু রয়েছে! মা-হারা মেয়েটিকে আগলে রাখাই তো মানবিকতা।’’
পুলিশ জানায়, নভেম্বরে মাকে হারায় স্মৃতি। বাবার কাছেই ছিল সে। জানুয়ারিতে মাসি ও অন্য আত্মীয়েরা এসে তাকে নিয়ে যান। মেয়েকে ফিরে পেতে বারবার দরবার করেন স্মৃতির বাবা। সুরাহা না হওয়ায় পুলিশের দ্বারস্থ হন। বুধবার পুলিশ-পিসিদের কোলে চেপে বারাণসী থেকে ফেরার ট্রেনে উঠেছে স্মৃতি। এখানে এলে তাকে শিশুকল্যাণ সমিতির কাছে নিয়ে যাওয়া হবে।