হাঁসুয়ার কোপে বৃদ্ধা মাকে খুন, গ্রেফতার ছেলে

ছেলেরা বৃদ্ধাকে সম্পত্তি ভাগাভাগি নিয়ে চাপ দিচ্ছিল। কিন্তু বৃদ্ধা ছেলেদের সেই কথায় কান দিতেন না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০২০ ০২:৫০
Share:

তারকনাথ কর্মকার

বৃদ্ধা মাকে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল পরিবারের বড় ছেলের বিরুদ্ধে।

Advertisement

রবিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে সোনারপুর থানার কামরাবাদ এলাকার শরৎ সরণিতে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত ওই বৃদ্ধার নাম কাননবালা কর্মকার (৮১)। মাকে খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে বৃদ্ধার বড় ছেলে তারকনাথ কর্মকার ওরফে মানুকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বারুইপুর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত সুপার ইন্দ্রজিৎ বসু।

পুলিশ জানায়, স্বামীর মৃত্যুর পরে কাননদেবী চার ছেলেকে নিয়ে একই বাড়িতে বসবাস করতেন। তাঁর প্রতিবেশীদের দাবি, আর্থিক অনটন থাকলেও বৃদ্ধার নামে কিছু সম্পত্তি রয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, ছেলেরা বৃদ্ধাকে সম্পত্তি ভাগাভাগি নিয়ে চাপ দিচ্ছিল। কিন্তু বৃদ্ধা ছেলেদের সেই কথায় কান দিতেন না। এ নিয়ে প্রায়ই বাড়িতে প্রায়ই অশান্তি হত। এ দিন সকালেও মায়ের সঙ্গে বড় ছেলে মানুর অশান্তি হয়।

Advertisement

অভিযোগ, মায়ের সঙ্গে ঝগড়ার সময়েই মানু হাঁসুয়া দিয়ে মাকে কোপাতে থাকে। কাননবালার আর্তনাদ শুনে ছুটে যান তাঁর নাতবৌ পূজা কর্মকার। তাঁর দাবি, তিনি মানুকে আটকানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু মানু তাঁর দিকেও তেড়ে আসে। এর পরে পূজা ছুটে ঘরে ঢুকে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেন। তিনি জানান, তাঁর চেঁচামেচি শুনে ছুটে আসেন আশপাশের লোকজন। রক্তাক্ত হাঁসুয়া মানুর হাত থেকে ছিনিয়ে নেন লোকজন। পরে পুলিশ মানুকে গ্রেফতার করে। বৃদ্ধার রক্তাক্ত দেহ সোনারপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।

ঘটনার পরে পূজা বলেন, ‘‘একটি গোঙানির আওয়াজ পেয়ে ছুটে যাই। ঘরে ঢুকে দেখি আমার জ্যাঠাশ্বশুর ঠাকুমাকে হাঁসুয়া দিয়ে কোপাচ্ছেন। আমি বাধা দিতে গেলে আমাকেও উনি তাড়া করে মারতে আসেন। আমি কোনও রকমে সেখান থেকে পালিয়ে গিয়ে ঘরের ভিতরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিই। না হলে উনি আমাকেও খুন করে দিতেন। আমরা ওঁর কঠিন শাস্তি দাবি করছি।’’

বৃদ্ধা মাকে খুনের ঘটনায় হতবাক কাননবালার ছোট ছেলে শঙ্করনাথ। তিনি বলেন,‘‘এত বছর ধরে একসঙ্গে রয়েছি, এমনটা যে হতে পারে কখনও কল্পনাও করতে পারিনি। কী কারণে দাদা এমন করল বুঝতে পারছি না!’’

মানুকে প্রাথমিক জেরার পরে পুলিশ জানিয়েছে, স্ত্রী ও একমাত্র কন্যা প্রায় ১৮ বছর আগে তাকে ছেড়ে চলে যায়। তার পর থেকে সে কিছুটা মানসিক অবসাদে ছিল। তেমন কোনও কাজকর্মও করত না। সেই সময়ে তার মনে হয়েছিল মায়ের অত্যাচারের কারণেই তার স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে গিয়েছে। এ জন্য সব সময়ে মাকেই দায়ী করত মানু। একটি খুনের মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement