নবজাতকের দেহ মিলল খালে, অভিযুক্ত দম্পতি

বস্তির বাকি লোকজন জড়ো হয়ে গিয়ে শিশুটির মাকে ধরে ফেলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০১৯ ০০:৫৮
Share:

অকুস্থল: খালের কোথা থেকে উদ্ধার হয়েছিল শিশুটির দেহ, দেখাচ্ছেন স্থানীয় এক মহিলা। শুক্রবার, ক্যানাল ইস্ট রোডে। নিজস্ব চিত্র

সদ্যোজাতকে খুন করে খালের জলে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠল এক দম্পতির বিরুদ্ধে। শুক্রবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে নারকেলডাঙা থানার ক্যানাল ওয়েস্ট রোডে। যদিও প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, মৃত সন্তান প্রসব করেছিলেন ওই মহিলা। কারণ, উদ্ধারের পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা জানান, সম্ভবত দু’দিন আগে মায়ের গর্ভে থাকাকালীনই মারা গিয়েছে সে। তবে ময়না-তদন্তের পরেই মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, ১৭/২/এইচ/১৮ ক্যানাল ওয়েস্ট রোডের বাসিন্দা এক তরুণী সন্তানসম্ভবা ছিলেন। তাঁর একটি বছর দুয়েকের কন্যাসন্তানও রয়েছে। এ দিন বেলা ১১টা-সাড়ে ১১টা নাগাদ পড়শিরা ওই তরুণীকে কাপড়ের একটি পুঁটলি নিয়ে খালের ধারে যেতে দেখেন। পরে দেখা যায়, কাপড়ের পুঁটলিটি খালের জলে ছুড়ে ফেললেন তরুণী। তা দেখেই চিৎকার করে ওঠেন প্রতিবেশীরা। কারণ তাঁরা জানতেন, ওই তরুণী সন্তানসম্ভবা। ফলে কাপড় জড়ানো জিনিসটি নিয়ে খালে যেতেই তাঁদের সন্দেহ হয়েছিল। শেষে পড়শিদের একাংশ কাপড়ে জড়ানো পুঁটলিটি খাল থেকে তুলে এনে দেখেন, ভিতরে রয়েছে সদ্যোজাত এক শিশুপুত্র। শুরু হয়ে যায় চিৎকার-চেঁচামেচি।

বস্তির বাকি লোকজন জড়ো হয়ে গিয়ে শিশুটির মাকে ধরে ফেলেন। অভিযোগ, সে সময়ে তরুণীর স্বামী লুকিয়ে পড়ার চেষ্টা করলে তাঁকেও ধরে ফেলেন স্থানীয়েরা। শুরু হয় মারধর। এর পরেই খবর যায় নারকেলডাঙা থানায়। পুলিশ এসে উত্তেজিত জনতার হাত থেকে ওই দম্পতিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ওই নবজাতককেও। পরে পুলিশকে হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানান, শিশুটি মৃত অবস্থাতেই জন্মেছিল।

Advertisement

এ দিকে, শিশুর মৃত্যুর জন্য ওই দম্পতিকেই দায়ী করেছেন তরুণীর দিদি ও পড়শিরা। তাঁদের অভিযোগ, তরুণী সন্তানসম্ভবা থাকলেও কোনও ডাক্তার দেখাতেন না। উল্টে বলতেন, তাঁর পেটে জল জমেছে। কিন্তু কোনও মতেই তিনি চিকিৎসকের কাছে যেতে চাইতেন না বলে জানিয়েছেন তরুণীর দিদি। এই ঘটনায় একাধিক প্রশ্ন ভাবাচ্ছে পুলিশকে। প্রথমত, সন্তান মৃত জন্মানোর পরেও তাকে কেন খালে ফেলতে গিয়েছিলেন মা? দ্বিতীয়ত, বিষয়টি কেন পড়শিদেরও জানালেন না তিনি? সব দিকই খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। ওই দম্পতিকে মারধর করার অভিযোগে এলাকার তিন জনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন