হাতেনাতে: অভিযুক্ত আনন্দ (বাঁ দিকে) ও তার তিন সঙ্গী। নিজস্ব চিত্র
দু’দিনের আলাপ। তাতেই জমে উঠেছিল প্রেম। হোয়াটসঅ্যাপ আর এসএমএসে প্রেমিকাকে সে চুমু আর গোলাপ ফুলের ছবি পাঠিয়েছিল ৬৩ বার! প্রেমিকাও নাছোড়বান্দা। ফুলই যখন দেওয়া হচ্ছে, ছবিতে কেন? সামনে এসে দিতে হবে। আর সঙ্গে ক্যাডবেরিও চাই। আগুপিছু না ভেবেই রাজি হয়ে গিয়েছিল প্রেমিক। নিজের রোজগার বলতে গাঁজা আর মোটরবাইক পাচার। কাজের ফাঁকেই প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করার সুযোগ ছাড়তে চায়নি সে। তাতেই কাল হল।
প্রেমিকা যে আসলে পুলিশ, ঘুণাক্ষরেও তা বোঝেনি আনন্দ মণ্ডল নামে ওই দুষ্কৃতী। বছর একুশের আনন্দর সঙ্গে ধরা পড়েছে তার তিন সঙ্গীও। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম শাহিদ আহমেদ, আসগর আলি ও আকাশ লাহিড়ী। বাজেয়াপ্ত হয়েছে ৪৪ কেজি গাঁজা। মঙ্গলবার কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েতে জগদ্দলের কেউটিয়া মোড়ের কাছে ফোন করে ডেকে ধরা হয় ওই চার জনকে। ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার সুব্রত মিত্র বলেন, ‘‘ধৃতেরা ভিন্ রাজ্যে মোটরবাইক পাচার এবং গাঁজা কারবারের সঙ্গে যুক্ত। এটা একটা বড় চক্র।’’
পুলিশ জানিয়েছে, ঝানু দুষ্কৃতী আনন্দর ফোন নম্বরটি পাওয়া গিয়েছিল একটি সূত্র থেকে। কিন্তু কয়েক বার চেষ্টা করেও তাকে ধরা যায়নি। এ বার তাই এক তরুণী কনস্টেবলকে দিয়ে ফোন করিয়ে প্রেমের ফাঁদ পাতেন ব্যারাকপুর কমিশনারেটের কর্তারা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কথোপকথনে ওই মহিলা কনস্টেবল আনন্দর সঙ্গে দেখা করতে চান। জানতে চান, প্রথম দেখার উপহার হিসেবে সে কী দেবে। আনন্দ উপহার নিয়ে দ্বিধায় পড়লে ওই কনস্টেবল বলেন, ‘‘লাল গোলাপ আর ক্যাডবেরি এনো আমার জন্য।’’ কথা মতো দশটি তাজা লাল গোলাপ আর ক্যাডবেরি নিয়ে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের ধারে গিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে আনন্দ। সঙ্গে তার সঙ্গীরা। ওই তরুণী কনস্টেবল গিয়ে দেখা করে গোলাপ আর ক্যাডবেরি নেওয়ার পরেই সাদা পোশাকের পুলিশ ঘিরে ফেলে দুষ্কৃতীদের।