murder

বন্ধ ঘরে মশার ধূপ, জেনারেটরের ধোঁয়া, খিদিরপুরে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মৃত্যু ৩ ভাইবোনের

বৃহস্পতিবার ওই বাড়ি থেকে পচা গন্ধ বেরোচ্ছিল। এর পর শুক্রবার সকালে প্রতিবেশীরা পুলিশকে খবর দেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৯ ১৩:৩৫
Share:

খিদিরপুরের বাড়ি থেকে মৃত দুই ভাইয়ের দেহ উদ্ধার করছে পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র।

বন্ধ ঘরের দরজা ভেঙে উদ্ধার করা হল তিন ভাইবোনকে। দুই ভাইয়ের দেহে পচন ধরে গিয়েছে। প্রৌঢ়া বোনের দেহে তখনও প্রাণ ছিল। সংজ্ঞাহীন অবস্থায় তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর।

Advertisement

রহস্যজনক এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে দক্ষিণ বন্দর থানা এলাকার কার্ল মার্ক্স সরণির একটি বাড়ি থেকে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত তিন ভাইবোনকে শনাক্ত করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। মৃতদের নাম ত্রিলোকীপ্রসাদ গুপ্ত (৫৯), ভোলাপ্রসাদ গুপ্ত (৫৬) এবং শান্তি গুপ্ত (৫৩)।

ময়না তদন্তের পর গোয়েন্দাদের দাবি, শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। জানলা-দরজা বন্ধ ঘরে মশার ধূপ এবং জেনারেটরের ধোঁয়া জমেই বিপত্তি। ঘুমের মধ্যেই অতিরিক্ত কার্বন মনো অক্সাইড ফুসফুসে ঢুকে মৃত্যু হয় দুই ভাইয়ের। অচেতন হয়ে পড়েন শান্তি দেবী।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার ওই বাড়ি থেকে পচা গন্ধ বেরোচ্ছিল। এর পর শুক্রবার সকালে প্রতিবেশীরা পুলিশকে খবর দেন। এ দিন পুলিশ গিয়ে বেশ কয়েক বার ডাকাডাকি করেও গুপ্ত পরিবারের কারও কোনও সাড়া পাননি। এর পর দরজা ভাঙে পুলিশ। ঘরে ঢুকে দেখা যায়, দুই ভাইয়ের দেহে পচন ধরে গিয়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বুধবারের পর থেকে ওই তিন ভাইবোনকে কেউ দেখতে পাননি। ময়না তদন্তের রিপোর্টও ইঙ্গিত দিয়েছে প্রায় ৪০ ঘণ্টা আগে মৃত্যু হয়েছে ওই দুই প্রৌঢ়র।

তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, বুধবার ওই এলাকায় বিদ্যুৎ ছিল না। সেই সময় রাতে দুই ভাইকে বাড়ির বাইরে দেখা যায়। পরে তাঁরা ঘরে চলে যান। ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা ঘটনাস্থলে গিয়ে অতিরিক্ত কার্বন মনো অক্সাইডের অস্তিত্ব পান। ওই ঘরে মশার ধূপের ছাইও পাওয়া যায়। তদন্তকারীরা জানতে পারেন বুধবার রাতে দীর্ঘক্ষণ ওই এলাকায় বিদ্যুৎ ছিল না। পারিপার্শ্বিক তথ্য প্রমাণ এবং ময়না তদন্তের রিপোর্টের ভিত্তিতে তদন্তকারীদের মত, শ্বাসরোধ হয়ে মৃত্যু তিনজনের।

আরও পড়ুন: যাদবপুরে প্রৌঢ়ার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার, খুন না আত্মহত্যা তদন্তে পুলিশ

ঘটনাস্থলে রয়েছেন কলকাতা গোয়েন্দা পুলিশের হোমিসাইড শাখার আধিকারি

তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, ভোলা গুপ্ত দুধের ব্যাবসা করতেন। তাঁর দাদা ত্রিলোকী প্রসাদ রাজ্য সরকারের পূর্ত দফতরের কর্মী। দু’মাস পরেই তাঁর অবসর নেওয়ার কথা। বোন শান্তি দীর্ঘদিন ধরেই শয্যাশায়ী। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই বাড়িটি এই তিন ভাই বোনের। এঁরা কেউই বিয়ে করেননি। এক সঙ্গেই থাকতেন। প্রায় ২০ বছর আগে বাড়িটি স্থানীয় এক প্রোমোটারকে বিক্রি করেন। বহুতলের নীচের তলায় ফ্ল্যাট পান তিন ভাই বোন।

আরও পড়ুন বেহালা, হরিদেবপুরে সকালে বহুতল থেকে ঝাঁপ

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন