এই ব্লকের ছ’তলার পাইপ বেয়েই নেমে আসে আসামি। —ফাইল চিত্র।
পরিকল্পনা সব একদম ঠিকঠাক ছিল। প্রথমে ব্লিচিং পাউডার খেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া। তারপর হাসপাতাল থেকে পাইপ বেয়ে চম্পট। সবটাই ঠিক ছিল কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। জেল পালিয়েও সেই জেলের পাঁচিলের মধ্যেই ফিরতে হচ্ছে কুড়ি বছরের ধীরজ সিংহকে।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে দশটা। আর জি কর হাসপাতাল। রোগীর আত্মীয়স্বজনরা যে যার মতো ঘুমোতে যাওয়ার তোড়জোড় করছে। সেই সময়ে একজনের চোখে পড়ে অদ্ভুত দৃশ্য। পরণে সাদা জামা, কালো ফুলপ্যান্ট একটি ছিপছিপে ছেলে বিসি রায় ক্যাসুয়ালটি ব্লকের ছ’তলার দেওয়ালে শৌচাগারের পাইপ ধরে ঝুলছে।
সবাই ভাবে, নির্ঘাত মানসিক ভারসাম্যহীন ওই যুবক। তখনও যুবক পাঁচতলার কাছাকাছি। হাত ফস্কে পড়ে যেতে পারে ওই যুবক, এই আশঙ্কায় হাসপাতাল কর্মী থেকে শুরু করে পুলিশকে খবর দেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
আরও পড়ুন: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশিকার প্রত্যাবর্তন, অব্যাহতি চাইছেন উপাচার্য, সহ-উপাচার্য
ততক্ষণে অবশ্য ভিড় জমে গিয়েছে নিচে। সবাই চেঁচিয়ে সাবধান করছেন যুবককে। পুলিশও পৌঁছয়। তাঁরাও প্রথমে ভাবেন কোনও পাগলের পাগলামি।
এ দিকে ওই যুবক ততক্ষণে দ্রুত গতিতে পাইপ বেয়ে নেমে এসেছে দোতলার কাছাকাছি। নিচে ভিড় আর পুলিশ দেখে হঠাৎ সে নামার গতি পরিবর্তন করে জানলা গলে ঢুকে পড়ে একতলার একটি ঘরে। ততক্ষণে অবশ্য হুঁশ ফিরেছে পুলিশের। পুলিশ জানতে পারে, ওই যুবক আর কেউ নয়, ছ’তলায় পুরুষদের ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা আসামি।
একদিন আগেই দমদম কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার থেকে ব্লিচিং পাউডার খেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল ওই বিচারাধীন বন্দী। মঙ্গলবার সাড়ে দশটা নাগাদ পাহারায় থাকা পুলিশকর্মীকে বলে শৌচাগারে ঢোকে সে। তারপর সেই শৌচাগারের জানলা গলে পাইপ বেয়ে পালানোর চেষ্টা করে।
একতলার ঘর থেকেই শেষ পর্যন্ত পাকড়াও করা হয় চুরির অভিযোগে জেল বন্দি ধীরজ সিংহকে। রাতে হাসপাতালেই রাখা হয় তাকে। পাহারাও বাড়ানো হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে সেই সময়ে পাহারার দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মীদের ভূমিকা নিয়ে।