COVID-19

মাস্ক না পরলে আজ থেকেই রেলে জরিমানা

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২১ ০৫:৩৮
Share:

মাস্ক ছাড়া এ ভাবে ট্রেনে উঠলে জরিমানা দিতে হবে যাত্রীদের ফাইল চিত্র

অবশেষে যাত্রীদের মাস্ক পরা নিয়ে কড়া হতে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল রেল। আজ, সোমবার থেকে শিয়ালদহ, হাওড়া-সহ রেলের বিভিন্ন ডিভিশনের গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনে যাত্রীদের মাস্ক না পরার জন্য জরিমানা করা শুরু হচ্ছে। যাত্রার সময়ে বা স্টেশন চত্বরে যাত্রীদের মাস্ক ছাড়া দেখা গেলে রেলের পরিচ্ছন্নতা এবং স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘনের দায়ে তাঁদের ৫০০ টাকা জরিমানা করা হবে বলে আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল। সেই বিধিই কার্যকর হচ্ছে।

Advertisement

রেলের নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী, মাস্ক না পরা, স্টেশন চত্বরে থুতু ফেলা― সবই অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। যে সব যাত্রী মাস্ক থুতনির কাছে নামিয়ে রাখবেন, তাঁরাও মাস্ক না পরার অপরাধের আওতায় আসবেন। আপাতত, আগামী ছ’মাস এই বিধি বলবৎ থাকবে। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে না এলে ওই সময়সীমা বাড়তে পারে বলে রেল সূত্রের খবর।

শহরতলির লোকাল ট্রেনে ঠাসাঠাসি ভিড়ে মাস্ক ছাড়া যাত্রীদের যাতায়াত নিয়ে উদ্বেগের ছবি সামনে আসতেই যাত্রীদের প্রথমে সচেতন করার পথে হেঁটেছিল রেল। তাতে ফল হয়নি। এ বার দেশজোড়া সংক্রমণের ঊর্ধ্বমুখী পরিসংখ্যানের দিকে নজর রেখে মাস্কবিহীন যাত্রীদের জরিমানার সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হচ্ছে।

Advertisement

তবে জরিমানা আদায়ের পাশাপাশি ওই যাত্রীদের পরার জন্য মাস্কও দেওয়া হবে, জানিয়েছেন পূর্ব রেলের আধিকারিকেরা। অভিযুক্ত যাত্রী মাস্ক যথাযথ ভাবে পরেছেন, এ বিষয়ে নিশ্চিত হলে তবেই তাঁকে যেতে দেওয়া হবে।

রেল সূত্রের খবর, হাওড়া, শিয়ালদহ, কলকাতা, দমদম, বারাসত, সোনারপুর, বালিগঞ্জ, সাঁতরাগাছি-সহ বিভিন্ন জনবহুল স্টেশনে এই নজরদারি চলবে। রেলের টিকিট পরীক্ষক, আরপিএফ কর্মীরা ছাড়াও এই নজরদারি চলবে সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে। প্রয়োজনে চলন্ত ট্রেনেও আচমকা হানা দেওয়া হতে পারে বলে রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। পূর্ব রেলের এক আধিকারিক বলেন, “সফরের সময়ে যাত্রীদের মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা চালু করা হল। করোনা পরিস্থিতিতে ট্রেন পরিষেবা শুরুর সময়ে যাত্রীদের জন্য আদর্শ-বিধিতেই স্টেশনে ঢোকা এবং সফরের সময়ে মাস্ক পরার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু ক্রমেই যাত্রীদের উদাসীনতা বাড়ছিল। সে জন্যই রেল নজরদারি কঠোর করতে বাধ্য হচ্ছে।”

সংক্রমণের লেখচিত্র ঊর্ধ্বমুখী হতেই লোকাল এবং দূরপাল্লার ট্রেনে যাত্রী আগের তুলনায় কমতে শুরু করেছে। রেলের তরফেও প্রয়োজন ছাড়া লোকাল ট্রেনে সফর এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এখনও লোকাল ট্রেনের সংখ্যা সে ভাবে কমেনি ঠিকই, তবে ইতিমধ্যেই রেলের চালক এবং গার্ডদের মধ্যে সংক্রমণ ছড়াতে শুরু করেছে।

পূর্ব রেলে গত কয়েক দিন ধরেই গড়ে ১০ থেকে ১৫ জোড়া ট্রেন বাতিল হয়েছে বলে যাত্রীদের অভিযোগ। যার অন্যতম কারণ পূর্ব এবং দক্ষিণ-পূর্ব রেলে বেশ কয়েক জন চালক ও গার্ড সংক্রমিত। সংখ্যা আরও বাড়তে থাকলে পরিষেবা স্বাভাবিক রাখা মুশকিল হবে বলে মনে করছেন অনেকেই। পরিস্থিতি সামলাতে তাই মাস্ক পরা নিয়ে কড়াকড়ির রাস্তায় হাঁটছেন কর্তৃপক্ষ।

ইতিমধ্যে করোনা রোগীদের চিকিৎসার প্রয়োজনে শয্যার জোগান দিতে রেলের কোচগুলিকে তৈরি রাখার প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে। করোনা সংক্রমণের প্রথম ঢেউয়ের সময়ে জনবহুল এলাকার কাছাকাছি বিভিন্ন স্টেশনে প্রায় ৪০০ কোচের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এ রাজ্যে ধাপে ধাপে সংক্রমণ কমে আসায় আর সেই সব কোচ ব্যবহারের প্রয়োজন পড়েনি। এই মুহূর্তে দিল্লি এবং মহারাষ্ট্রের
পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় সেখানে সংক্রমিতদের রাখার জন্য রেলের স্লিপার কোচের ব্যবহার শুরু হয়েছে। এ রাজ্যেও রেলের পক্ষ থেকে সেই পরিকাঠামো তৈরি রাখার কথা জানানো হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন