COVID 19

জীবাণুনাশ থেকে নতুন বেসিন, পড়ুয়াদের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে স্কুল

আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য স্কুল খোলার নির্দেশ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

Advertisement

আর্যভট্ট খান

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৬:৩৪
Share:

সাফাই: নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য ১২ তারিখ থেকে খুলবে স্কুল। তার আগে শহরের বিভিন্ন স্কুলে চলছে প্রস্তুতি। যাদবপুর বিদ্যাপীঠের ক্লাসরুম (বাঁ দিকে), সারদাপ্রসাদ ইনস্টিটিউশনের কম্পিউটার রুমে চলছে সাফাই ও জীবাণুনাশের কাজ। বুধবার। ছবি: রণজিৎ নন্দী

কোনও স্কুলে পরীক্ষাগারের দরজা খুলে ঝাড়পোঁছ করা শুরু হয়েছে। কোথাও আবার ক্লাসঘরের ডেস্ক এবং বেঞ্চে জীবাণুনাশক ছড়ানোর কাজ চলছে। স্কুলের গেটের সামনে জীবাণুনাশক টানেল পরীক্ষা করার কাজও চলছে কোথাও কোথাও।

Advertisement

আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য স্কুল খোলার নির্দেশ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সেই নির্দেশ শোনার পরেই তৎপরতা শুরু হয়েছে শহরের স্কুলগুলিতে। স্কুলের প্রধান শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা স্কুলে এসে যাতে কোনও রকম কোভিড-সংক্রান্ত নিরাপত্তাহীনতায় না ভোগে, সে কথা মাথায় রেখেই স্কুল চত্বর জীবাণুমুক্ত করার কাজ চলছে পুরোদমে।

উত্তর কলকাতার উল্টোডাঙা এলাকার সারদাপ্রসাদ ইনস্টিটিউশনে গিয়ে দেখা গেল, সেখানে ক্লাসঘর জীবাণুমুক্ত করার কাজ শুরু হয়েছে। স্কুলের কম্পিউটারের ঘর খোলা হলে দেখা গেল, দীর্ঘদিনের অব্যবহারে কম্পিউটারের উপরে জমেছে ধুলোর আস্তরণ। ধুলো মুছে সেখানেও শুরু হয়ে যায় জীবাণুমুক্ত করার কাজ। স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুবীরকুমার হান্দোল বললেন, ‘‘আমাদের স্কুলে নানা ধরনের পরীক্ষার সিট পড়ে। তখন ক্লাসঘর জীবাণুমুক্ত করা হয়। তা ছাড়া, পড়ুয়াদের অভিভাবকদের মিড-ডে মিল দেওয়ার জন্যেও স্কুল জীবাণুমুক্ত করা হয়। এ বার পড়ুয়ারা স্কুলে ফেরার আগে আরও এক বার স্কুল ভবন জীবাণুমুক্ত করার কাজ চলছে। স্কুলে রং করাও হচ্ছে।’’

Advertisement

হাতিবাগান এলাকার স্কটিশ চার্চ কলেজিয়েট স্কুল চত্বরে আবার বসেছে সিসি ক্যামেরা। স্কুলের প্রবেশপথের সামনে বসছে জীবাণুনাশক টানেল। প্রধান শিক্ষক বিভাস স্যানিয়াল বলেন, ‘‘স্কুলের চার দিকে সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। অফিসঘরে বসে সেই সিসিটিভি-তে নজর রাখবেন এক জন শিক্ষক। ক্লাসের বাইরে ছাত্রছাত্রীরা কোথাও জটলা করছে কি না, সেটাই দেখবেন তিনি।’’

দক্ষিণ কলকাতার যাদবপুর বিদ্যাপীঠে আবার পানীয় জলের জন্য বসেছে নতুন ধরনের বেসিন। স্কুলের প্রধান শিক্ষক পরিমল ভট্টাচার্যের কথায়, ‘‘এই বেসিনের কলে হাত লাগিয়ে খুলতে হয় ঠিকই, কিন্তু কল থেকে জল পড়া নিজে নিজেই বন্ধ হয়ে যায়। অর্থাৎ, বেসিন যতটা সম্ভব কম স্পর্শ করেই যাতে পড়ুয়ারা জল খেতে পারে, সেই ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’ এ ছাড়াও পড়ুয়াদের শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করতে স্কুলের তরফে কেনা হচ্ছে বেশ কিছু ‘থার্মাল গান’।

নিউ টাউন স্কুল কর্তৃপক্ষ আবার জানাচ্ছেন, প্রতিনিয়ত স্কুল ভবন জীবাণুমুক্ত করতে একটি আস্ত দল গড়েছেন তাঁরা। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি ক্লাসঘর জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে। ক্লাস শুরুর আগে সেই সব ঘরে যাতে আর কেউ ঢুকতে না পারেন, সেই জন্য প্রতিটি ক্লাসঘর বন্ধ রাখা হয়েছে। সাউথ পয়েন্ট স্কুল কর্তৃপক্ষ আবার জানাচ্ছেন, গত কয়েক মাস ধরে এমন ভাবে সেখানে জীবাণুমুক্তির কাজ হচ্ছিল, যাতে সরকারি নির্দেশ আসার দিন কয়েকের মধ্যেই পড়ুয়াদের জন্য স্কুলের দরজা খোলা সম্ভব হয়।

তবে স্কুল খুললেও সেখানে কোন কোন কোভিড-বিধি মেনে চলতে হবে, সেই সংক্রান্ত সরকারি নির্দেশাবলী এখনও আসেনি।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘নতুন নিয়মাবলী আসবে দু’-এক দিনের মধ্যে। একসঙ্গে নয়, পড়ুয়াদের ভাগে ভাগে আসতে বলা হবে। পড়ুয়াদের স্বাস্থ্যকেও অগ্রাধিকার দিতে বলা হচ্ছে।’’ শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, প্রত্যেক পড়ুয়া যাতে মাস্ক পরা, স্কুলে বার বার হাত জীবাণুমুক্ত করা ও দূরত্ব-বিধির মতো বিষয়গুলি মেনে চলে, সে দিকে স্কুল কর্তৃপক্ষকে নজর রাখতে বলা থাকবে ওই নির্দেশাবলীতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন