প্রতীক্ষা: দিনভর নানা মিছিলের চাপে ফের অবরুদ্ধ শহর। শনিবার, ধর্মতলায়। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
ই এম বাইপাস সংলগ্ন হোটেল থেকে পার্ক স্ট্রিটে আসছিলেন এক কেন্দ্রীয় আমলা। যানজটে ফেঁসে পৌঁছলেন নির্দিষ্ট সময়ের ঘণ্টাখানেক পরে!
বিকেলে গড়িয়াহাট হয়ে যাদবপুরে যাচ্ছিলেন সুতপা দাস। যানজটের জেরে সামান্য পথ পেরোতেই নাকাল অবস্থা হল তাঁর। বিকেলেই ডালহৌসি যাওয়ার পথে কলেজ স্ট্রিট, বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিটের সংযোগস্থলে এসে যানজট দেখে ট্যাক্সি থেকে নেমে পড়ে হাঁটাপথে গন্তব্যে পৌঁছে গেলেন তন্দ্রা রায় নামে এক তরুণী।
সপ্তাহান্তে শনিবার এ ভাবেই যানজটে ভুগল মহানগর। পুলিশ সূত্রের খবর, একটি ধর্মীয় মিছিল, বিজেপি-র লালবাজার অভিযান এবং জি ডি বিড়লার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে যাদবপুর থানার সামনে বিক্ষোভের জেরে এমন যানজট। ঘুরপথে গাড়ি চালিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা হলেও আমজনতার ভোগান্তি কিন্তু তেমন কমেনি।
লালবাজার সূত্রের খবর, এ দিন সকাল থেকেই মৌলালি, প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোড, খিদিরপুর, মল্লিকবাজার, চার নম্বর ব্রিজ এবং রাজাবাজারের একাংশে যান চলাচল ব্যাহত হয়। পার্ক সার্কাসের চার নম্বর ব্রিজের কাছেই যানজটে আটকে পড়েছিলেন কেন্দ্রীয় লগ্নি দফতরের সচিব নীরজকুমার গুপ্ত। এ দিন পার্ক স্ট্রিটের একটি হোটেলে আয়োজিত বণিকসভার অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথি ছিলেন। সচিবের দেরি হওয়ার কারণে সেই অনুষ্ঠানটিও যথারীতি দেরিতে শুরু হয়েছে। দুপুর ১২টার পর থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে।
দুপুর আড়াইটে নাগাদ লালবাজার অভিযান শুরু করে বিজেপি। বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিট ও ফিয়ার্স লেনের সংযোগস্থলে তাদের আটকানো হলে পথ অবরোধ করেন দলীয় সমর্থকেরা। ওই মিছিলের জেরে বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিট ও চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের একাংশে যান চলাচল ব্যাহত হয়। তিনটের পরে অবরোধ উঠলে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে থাকে। জি ডি বিড়লা স্কুলে ছাত্রীর যৌন হেনস্থার প্রতিবাদে বিকেলে যাদবপুর থানা ঘেরাও এবং যাদবপুর মোড় অবরোধ করে গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি। এরফলে আশপাশের সব রাস্তায় যান চলাচল ব্যাহত হয়। গাড়ির লম্বা লাইন বাড়তে বা়ড়তে গড়িয়াহাট উ়়ড়ালপুল পর্যন্ত পৌঁছে যায়। যানজট ছড়িয়ে প়়ড়ে সুলেখা মো়ড়েও। পরিস্থিতি সামলাতে সাদার্ন অ্যাভিনিউ, রাসবিহারী অ্যাভিনিউ দিয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে দেয় ট্র্যাফিক পুলিশ।
সকালের যানজটের জন্য পুলিশের একাংশের সুবিধাও হয়েছে। ঢাকুরিয়া উড়ালপুলের মেরামতির জন্য এ দিন সকাল থেকেই ওই এলাকায় গাড়ি ঘুরপথে চালানোর কথা ছিল। কিন্তু সকালে দেখা যায়, একে তো শনিবার। তার উপরে প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোড অবরুদ্ধ হয়ে যাওয়ায় গাড়ির চাপ অনেক কম। ফলে ঘুরপথে গা়ড়ি চালাতে হয়নি। সন্ধ্যার পরে অবশ্য ঢাকুরিয়া উড়ালপুলে যান নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে বলেই পুলিশ সূত্রের খবর।