Pavlov hospital

বৃদ্ধের মৃত্যুতে ধৃত ছেলেকে পাভলভে ভর্তির পরামর্শ

পুলিশ সূত্রের খবর, বাবা শুভময় বন্দ্যোপাধ্যায়ের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় ধৃত ওই যুবকের নাম অর্পণ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০২১ ০৩:৩৯
Share:

—ফাইল চিত্র

যাদবপুর থানা এলাকায় এক বৃদ্ধের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত ভাবে মৃত্যু ঘটানোর ধারায় মামলা রুজু করল পুলিশ। শুক্রবার রাতে ধৃত ওই যুবককে শনিবার আলিপুর আদালতে হাজির করান তদন্তকারী অফিসারেরা।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, বাবা শুভময় বন্দ্যোপাধ্যায়ের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় ধৃত ওই যুবকের নাম অর্পণ। তাঁর মানসিক ভারসাম্য ঠিক আছে কি না, তা দেখার জন্য চিকিৎসকদের দ্বারস্থ হয়েছিল পুলিশ। এ দিন যাদবপুর থানার পুলিশ অর্পণকে বাঙুর ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেসে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসকেরা অভিযুক্তের মানসিক অবস্থা খতিয়ে দেখে তাঁকে পাভলভ হাসপাতালে ভর্তি করানোর পরামর্শ দেন। এ দিন আদালতে সেই রিপোর্ট পেশ করা হয়। বিচারক তা পড়ার পরে জেল কর্তৃপক্ষকেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন বলে পুলিশ সূত্রের দাবি।

পুলিশ জানায়, বছরের প্রথম দিন, শুক্রবার রাতে যাদবপুর থানা এলাকার রায়পুর রোডে (ইস্ট) নিজের আবাসনের সামনে থেকে শুভময়বাবুকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। ওই ঘটনায় বাবাকে খুনের অভিযোগ ওঠে অর্পণের বিরুদ্ধে। রাতেই তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

Advertisement

আরও খবর: কমছে সংক্রমণ, রাজ্যে এক হাজারের নীচে নেমে এল দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা

আরও খবর: সোমে কলকাতায় বাইক র‌্যালিতে শোভন-বৈশাখী, সঙ্গে কৈলাসও

পুলিশ জানায়, রায়পুর রোডে (ইস্ট) একটি তিনতলা আবাসনের দোতলায় বাবা ও মায়ের সঙ্গেই থাকতেন অর্পণ। বাকি অধিকাংশ ফ্ল্যাটে তাঁদেরই আত্মীয়েরা থাকেন। এ দিন ওই আবাসনে গিয়ে দেখা যায়, অর্পণদের ফ্ল্যাটের দরজায় তালা ঝুলছে। শুভময়বাবুর দেহ যেখানে পড়ে ছিল, সেই জায়গাটি ঘিরে রাখা আছে দড়ি দিয়ে। প্রতিবেশীরা জানান, ওই পরিবারে মাঝেমধ্যেই অশান্তি হত। ছেলে এবং মা ছিলেন এক দিকে। বাবা অন্য দিকে। অর্পণ প্রায়ই বাবাকে মারধর করতেন বলে প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তাঁদের বক্তব্য, শুভময়বাবুর সঙ্গে তাঁর স্ত্রীর সম্পর্ক ভাল ছিল না।

প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, পারিবারিক বিভিন্ন বিষয়ে বাবার সঙ্গে মতের অমিল হত অর্পণের। অর্পণ চাকরি বা ব্যবসা কিছুই করতেন না। বাবার কাছ থেকে টাকা চাইতেন মাঝেমধ্যেই। তা নিয়েও অশান্তি হত। ঘটনার দিন সকালেও বৃদ্ধের সঙ্গে অশান্তি হয়েছিল অভিযুক্ত ছেলের। এক তদন্তকারী জানান, সন্ধ্যায় ফের অশান্তি শুরু হলে বাবা ও ছেলের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। সেই সময়ে অর্পণ ধাক্কা মারলে পড়ে যান শুভময়। তাতেই মাথার পিছনে আঘাত পান তিনি।

পুলিশ এবং এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, মাঝেমধ্যেই অস্বাভাবিক আচরণ করতেন অর্পণ। কিছু দিন আগে তা নিয়ে পারায় অশান্তিও হয়েছিল। শুক্রবার রাতে ওই ঘটনার পরে কয়েক জন বয়স্ক প্রতিবেশী শুভময়বাবুকে উদ্ধার করতে গেলে তাঁদের দিকেও অর্পণ তেড়ে যান বলে অভিযোগ।

পুলিশ জানায়, রাতে থানায় নিয়ে আসার পরেও অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকেন অর্পণ। এমনকি, বাবার মৃত্যুর জন্য একটুও অনুতাপ দেখা যায়নি তাঁর মধ্যে। বাড়িতে মা একা রয়েছেন কি না জানতে চাওয়ায় তাঁর বক্তব্য ছিল, মা পেনশন পান। তাই চিন্তা নেই। এ দিন অবশ্য ওই আবাসনে গিয়ে অর্পণের মায়ের দেখা মেলেনি। তবে পুলিশের কাছে তিনি দাবি করেছেন, ওই ঘটনার সঙ্গে ছেলের কোনও যোগ নেই। পুলিশ জানায়, সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন