সম্মানহানির ভয় থেকেই কি আত্মঘাতী পূষন

বুধবার বেহালার সেনহাটি কলোনির বাড়ি থেকে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় রাজারহাটের এক তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার ইঞ্জিনিয়ার পূষন দাশগুপ্তের। তিনি দিন দশেক ধরে অবসাদে ভুগছিলেন বলে জেনেছে পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:১৬
Share:

পূষন দাশগুপ্ত

সামনের সপ্তাহেই পদোন্নতি হওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু তার আগেই বেহালার বাসিন্দা, তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার ইঞ্জিনিয়ারের ‘আত্মহত্যা’র ঘটনায় রহস্য দানা বেঁধেছে। ময়না-তদন্তের রিপোর্টের ভিত্তিতে ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলেই মনে করছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত মৃতের পরিবার কোনও অভিযোগ দায়ের না করায় পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে তাঁর সহকর্মীদেরও।

Advertisement

বুধবার বেহালার সেনহাটি কলোনির বাড়ি থেকে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় রাজারহাটের এক তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার ইঞ্জিনিয়ার পূষন দাশগুপ্তের। তিনি দিন দশেক ধরে অবসাদে ভুগছিলেন বলে জেনেছে পুলিশ। মৃত্যুর আগের দু’দিন তাঁর সেই অবসাদ আরও বেড়ে গিয়েছিল। পরিবারের তরফে বুধবারই তাঁকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল।

বৃহস্পতিবার পূষনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, থমথমে পরিবেশ। পরিবারের লোকজন থেকে প্রতিবেশী— এই মৃত্যু কেউই মেনে নিতে পারছেন না। পূষনের স্ত্রী সৌবর্ণা পাল বলেন, ‘‘ওঁর সংস্থার যে সমস্ত কর্মীকে অনসাইট প্রজেক্টে বিদেশে পাঠানো হয়, তাঁদের ভিসা সংক্রান্ত একটা সমস্যা হয়েছিল। উনি কিন্তু সেই ব্যাপারে যুক্ত ছিলেন না। আমার স্বামীর ভিসার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা ছিল না।’’ সৌবর্ণা আরও বলেন, ‘‘বিষয়টির সঙ্গে প্রত্যক্ষ যোগাযোগ না থাকা সত্ত্বেও স্বামীর আশঙ্কা ছিল, যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়াই তাঁকে জড়়িয়ে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে। এ সব কারণেই উনি কয়েক দিন ধরে ভীষণ অবসাদগ্রস্ত ছিলেন।’’

Advertisement

অফিসের কাজে বুধবারই পূষনের বিদেশে যাওয়ার কথা ছিল। গত ২২ ডিসেম্বর তিনি ইংল্যান্ড থেকে ফেরেন। পরিবারের এক সদস্যের কথায়, ‘‘উনি একনিষ্ঠ কর্মী ছিলেন। হাসিমুখে কাজ করতেন। তাই অফিসে সবার প্রিয় ছিলেন। তা সত্ত্বেও কী যে হয়ে গেল!’’ বাবা অকালে চলে যাওয়ায় ভেঙে পড়েছে পূষনের একমাত্র মেয়েও। তাকে সান্ত্বনা দিতে দিতে সৌবর্ণা একটি কথাই বারবার বলছিলেন, ‘‘মানুষটা পৃথিবী ছে়ড়েই চলে গেল! আমি এ বার কী ভাবে থাকব!’’

এই ঘটনার বিষয়ে পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘তদন্ত চলছে। ওই সংস্থার কর্মীদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’’ পূষন রাজারহাটের যে সংস্থায় কাজ করতেন, সেখানকার মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে এ বিষয়ে জানতে ফোন করা হলে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন