Mamata Banerjee

সামাজিক দূরত্ব রাখতে সচেতন মমতা করোনা আবহে বাতিল করলেন বাড়িতে ভাইফোঁটা

ভাইফোঁটা না দিলেও যাঁদের তিনি নিয়ম করে প্রতিবার ফোঁটা দেন, তাঁদের সকলের বাড়িতে সোমবার, ভাইফোঁটার দিন পৌঁছেছে মমতার উপহার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০২০ ১৫:৪৬
Share:

বাড়িতে ভাইফোঁটার অনুষ্ঠান বাতিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।— ফাইল চিত্র

বরাবর তাঁর বাড়িতে ভাইফোঁটার অনুষ্ঠান আন্তরিকতার সঙ্গে হয়ে এসেছে। সে তিনি বিরোধী নেত্রীই থাকুন বা মুখ্যমন্ত্রী। কালীপুজোর একদিন পর তাঁর কালীঘাটের বাড়িতে ভাইফোঁটার কখনও অন্যথা হয়নি।

Advertisement

স্মরণকালের মধ্যে এই প্রথম তার ব্যত্যয় হল!

করোনা আবহে সামাজিক দূরত্ববিধি বজায় রাখার জন্য এই প্রথম বাড়িতে ভাইফোঁটার অনুষ্ঠান বাতিল করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যাকে ‘সচেতন এবং ইতিবাচক পদক্ষেপ’ বলেই মনে করছেন দলের সকলে। দলের এক শীর্ষনেতার কথায়, ‘‘দিদি প্রতিবারই খুব আন্তরিকতা নিয়ে ভাইফোঁটা দেন। কিন্তু এ বার করোনার জন্য সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা বাধ্যতামূলক। সেই সচেতনতা থেকেই দিদি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। জানি এতে ওঁরও খারাপ লেগেছে। যেমন মনখারাপ হচ্ছে আমাদেরও। কিন্তু এই কঠিন সময়ে এই সচেতনটা না দেখালেও নয়। দিদি সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন।’’

Advertisement

প্রসঙ্গত, করোনা আবহে সামাজিক দূরত্ব মেনে মুখ্যমন্ত্রী তাঁর বাড়ির ভাইফোঁটার অনুষ্ঠান বাতিল করলেও বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ কিন্তু দিব্যি অন্যান্যবারের মতোই ভাইফোঁটা নিয়েছেন।

আরও পড়ুন: দলের বক্তব্য বলার জন্য বিভিন্ন নেতার সাপ্তাহিক ‘রস্টার’ বেঁধে দিল তৃণমূল

তবে সামনে বসে ভাইফোঁটা না দিলেও যাঁদের তিনি নিয়ম করে প্রতিবার ফোঁটা দেন, তাঁদের সকলের বাড়িতে সোমবার, ভাইফোঁটার দিন পৌঁছেছে মমতার উপহার। সকলকেই তিনি নিজে ফোন করে জানিয়েছেন, এ বার সময়টা ‘অন্যরকম’। বাধ্য হয়েই তাই এ বার ভাইফোঁটার অনুষ্ঠান বাতিল করতে হচ্ছে। তেমনই এক নেতা সোমবার দুপুরে বললেন, ‘‘গত চার-পাঁচদিন ধরেই শুনছিলাম, এ বার দিদির বাড়িতে ভাইফোঁটা হবে না। শুনে একটু মনটা খারাপ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ভেবে দেখেছিলাম, এই পরিস্থিতিতে এটাই সঠিক সিদ্ধান্ত। তার পর সকালেই উনি ফোন করলেন। তার পর দেখলাম, ওঁর ভাইফোঁটার প্রীতি উপহারও আমার বাড়িতে চলে এসেছে। উপহার পেয়ে ফোনেই আশীর্বাদ চেয়ে নিলাম। আশা করি, আগামী বছর এই পরিস্থিতি কেটে যাবে। তখন নিশ্চয়ই আবার সামনে বসে ওঁর হাত থেকে কপালে ফোঁটা নিতে পারব।’’

প্রসঙ্গত, উৎসবের মরসুমে মমতার বাড়ির দু’টি অনুষ্ঠান অত্যন্ত জনপ্রিয়। এক, কালীপুজো এবং দুই, ভাইফোঁটা। প্রথমটিতে সকলেরই ঢালাও আমন্ত্রণ থাকে। দ্বিতীয়টিতে আমন্ত্রণ পান বাছাই লোকজন। প্রসঙ্গত, গতবার মমতার বাড়ির কালীপুজোয় সস্ত্রীক পৌঁছে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। মুখ্যমন্ত্রী মমতার কাছ থেকে তাঁর বাড়িতে গিয়ে ভাইফোঁটা নেওয়ারও ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন তিনি। যদিও মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে সময় দিয়ে উঠতে পারেননি।

আরও পড়ুন: বোন রেণুকা মাড্ডির হাতে ভাইফোঁটা নিলেন অধীর

তবে মমতার কালীঘাটের বাড়ির এই দু’টি অনুষ্ঠান, কালীপুজো এবং ভাইফোঁটা, আগাগোড়া আন্তরিকতায় মোড়া। ভাইফোঁটা বাতিল করার আগে এ বছর করোনা আবহে কালীপুজোর আমন্ত্রণও সঙ্কুচিত করতে বাধ্য হয়েছেন মমতা। অন্যান্যবার কালীপুজোর দিন সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত তাঁর কালীঘাটের বাড়িতে যে জনসমাগম দেখা যায়, এ বার তা হয়নি। করোনা আবহে তা হওয়ার কথাও ছিল না।বস্তুত, মুখ্যমন্ত্রী নিজেই সচেতনতা দেখিয়ে এ বার কালীপুজোয় অতিথিদের আমন্ত্রণে রাশ টেনেছিলেন। অতিথির ভিড় না থাকলেও পুজো অবশ্য হয়েছে যথাবিহিত নিয়মবিধি মেনেই। যেমন ভাইফোঁটা না হলেও মমতার ফোন এবং উপহার সকালেই পৌঁছে গিয়েছে ভাইদের হাতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন