প্রতীকী ছবি।
করোনা আক্রান্তদের সংস্পর্শে কারা, খোঁজ নিচ্ছে প্রশাসন। নজরে শাসকদলের কর্মীরাও।
চন্দ্রকোনা রোডে গত দু'সপ্তাহে তিনজনের করোনা সংক্রমণের খবর মিলেছে। যদিও তিনজনেরই করোনা পরীক্ষা হয় কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে, প্রত্যেকেরই রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। তারপরই তিনজনের বাড়ি সংলগ্ন এলাকা কন্টেনমেন্ট জ়োন (গণ্ডিবদ্ধ এলাকা) হিসাবে চিহ্নিত করে জেলা পুলিশ। করোনার ক্ষেত্রে কলকাতা যোগ থাকলে ঝুঁকি নিচ্ছেন না স্থানীয় প্রশাসন। বরং সে ক্ষেত্রে বাড়তি তৎপরতা দেখা যাচ্ছে। আক্রান্তদের সংস্পর্শে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কারা এসেছিলেন, তার খোঁজ নেওয়া শুরু করেছে পুলিশ ও স্বাস্থ্যদফতর।
চন্দ্রকোনা রোডের বাসিন্দা যে তিনজন করোনা আক্রান্ত হন, তার মধ্যে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে কলকাতায় চিকিৎসাধীন অবস্থায়। একজন অবসরপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষক। তিনি হৃদরোগের সমস্যা নিয়ে কলকাতায় চিকিৎসা করাতে গিয়েছিলেন। সেখানেই তাঁর করোনা পরীক্ষা হয়, রিপোর্ট আসে পজ়িটিভ। পরে তিনি সেখানে মারাও যান। তাঁর সরাসরি সংস্পর্শে আসা বাড়ির লোকজনদের পরীক্ষা করা হলেও প্রত্যেকের রিপোর্ট নেগেটিভ আসায় স্বস্তিতে ব্লক প্রশাসন।
কয়েকদিন আগে বছর আঠাশের একজন পথ দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হয়ে ভর্তি হয়েছিলেন কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানে তাঁর করোনা পরীক্ষা হলে রিপোর্ট আসে পজ়িটিভ। পরে তাঁরও মৃত্যু হয় কলকাতার সেই হাসপাতালে। চন্দ্রকোনা রোডের আর এক যুবকের হৃদযন্ত্রের সমস্যার চিকিৎসা চলছে এই হাসপাতালেই। সেখানে তাঁর করোনা পরীক্ষা হলে রিপোর্ট আসে পজ়িটিভ। স্থানীয় প্রশাসনের প্রাথমিক অনুমান, কলকাতায় চিকিৎসাধীন অবস্থাতে তাঁদের করোনা সংক্রমণ হতে পারে। যদিও সংক্রমণের খবর পাওয়া মাত্র তাঁদের বাড়ির লোকজনদের গৃহ পর্যবেক্ষণে পাঠানো হয়েছে। এলাকা করা হয়েছে গণ্ডিবদ্ধ।
খোঁজখবর নিয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে দু’টি পরিবারের ১০ জন করে ২০ জনের নামের তালিকা করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সেই তালিকায় নাম রয়েছে বাড়ির লোকজন সহ অ্যাম্বুল্যান্স চালক, স্থানীয় বাসিন্দাদেরও। যে যুবকটি দুর্ঘটনাগ্রস্ত ছিলেন, তিনি ছিলেন যুব তৃণমূলের কর্মী। বিভিন্ন কর্মসূচিতে তাঁকে দেখা যেত। তাই তাঁর সংস্পর্শে তৃণমূলের কেউ ছিলেন কি না তারও খোঁজ নিচ্ছে প্রশাসন। ইতিমধ্যে এলাকার কয়েকজন তৃণমূল নেতা ও কর্মীর নাম প্রশাসনের কাছে এসেছে বলে জানা গিয়েছে।
তৃণমূলের ব্লক সভাপতি নিমাইরতন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রশাসনের এক অফিসার ফোন করে জানতে চেয়েছিলেন, আমি বলেছি লকডাউনের সময় ওই ছেলেটি একমাসের উপর বাড়ি থেকেই বেরোয়নি, সেক্ষেত্রে আমাদের সংস্পর্শে আসার কোনও প্রশ্নই নেই।’’ স্থানীয় বাসিন্দা তৃণমূল নেত্রী জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরা সিংহ বলেন, ‘‘প্রায় এক- দেড়মাস ওই ছেলেটির সঙ্গে দলের কারোর যোগাযোগ নেই। লকডাউন হয়ে যাওয়ায় ওর বাবা-মা তাঁদের একমাত্র ছেলেকে বাড়িতেই আটকে রেখেছিলেন।