গেরুয়ার দু’চাকা রুখে আক্রান্ত উর্দি

পঞ্চায়েত ভোটের ফলে গোয়ালতোড়ে শক্তিবৃদ্ধির ইঙ্গিত দিয়েছে গেরুয়া শিবির। রবিবার বিজেপির বাইক র‌্যালিকে কেন্দ্র করে পশ্চিম মেদিনীপুরে বড় গোলমাল হল সেখানেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গোয়ালতোড় শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৯ ০০:৪৯
Share:

বিজেপির বাইক র‌্যালি আটকাতে মারমুখী পুলিশ। গোয়ালতোড়ের সনকা মন্দিরের সামনে। —নিজস্ব চিত্র।

পঞ্চায়েত ভোটের ফলে গোয়ালতোড়ে শক্তিবৃদ্ধির ইঙ্গিত দিয়েছে গেরুয়া শিবির। রবিবার বিজেপির বাইক র‌্যালিকে কেন্দ্র করে পশ্চিম মেদিনীপুরে বড় গোলমাল হল সেখানেই।

Advertisement

পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়ালেন বিজেপি কর্মীরা। পরিস্থিতি সামলাতে লাঠিচার্জ করতে হল পুলিশকে। এই ঘটনায় ডিএসপি (অপারেশন) সহ ৪ পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন। জখম কয়েকজন বিজেপি কর্মীও। ঘটনার পর থমথমে গোয়ালতোড় বাজার এলাকা। চলছে বিশাল পুলিশ বাহিনীর টহল।

উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা চলছে। এরই মধ্যে এ দিন বাইক র‌্যালি আয়োজন করেছিল বিজেপি। যার আনুষ্ঠানিক নাম সঙ্কল্প যাত্রা। দেশ জুড়ে ডাক দেওয়া হয়েছিল এই কর্মসূচির। শালবনি বিধানসভার গোয়ালতোড়ের পিংবনি থেকে সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ বাইক র‌্যালি বেরোয়। বিজেপির অভিযোগ, বাইক র‍্যালিকে গোয়ালতোড় বাজারে ঢোকার মুখেই সনকা মন্দিরের সামনে ব্যারিকেড করে আটকে দেয় বিশাল পুলিশ। এইসময় পুলিশকর্মীদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন বিজেপি কর্মীরা। অভিযোগ, পুলিশকে উদ্দেশ্য করে উত্তেজক স্লোগান ও গালিগালাজ করতে থাকেন বিজেপি কর্মীরা। পরিস্থিতি ক্রমেই উত্তপ্ত হতে থাকে। আতঙ্কে দোকানপাট বন্ধ করে দেন স্থানীয়রা। বচসা গড়ায় ধস্তাধস্তিতে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ লাঠি উঁচিয়ে তেড়ে যায়। র‌্যালিতে নেতৃত্ব দেওয়া বিজেপি নেতা গৌতম কৌড়ির অভিযোগ, ‘‘সিভিক ভলান্টিয়ার-সহ অন পুলিশকর্মীরা বিজেপি কর্মীদের উপর নির্বিচারে লাঠিচার্জ করে। বহু মোটর বাইক ভাঙচুর করে। পুলিশের লাঠির ঘায়ে গুরুতর জখম হয়েছেন বহু বিজেপি কর্মী। তাঁদেরকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।’’

Advertisement

বিজেপি কর্মীদের ইট ও লাঠির আঘাতে ৪ জন পুলিশকর্মী জখম হন। হাতে, কব্জিতে আঘাত পান ডিএসপি (অপারেশন) উত্তম মিত্র-সহ গোয়ালতোড় থানার দুই সাব ইন্সপেক্টর তরুণ কুমার হাজরা ও শ্যামল দাস। জখম হন সিভিক ভলান্টিয়ার মহেন্দ্র মান্ডি। জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘গোয়ালতোড়ের ঘটনায় ছত্রভঙ্গ করতে এদিন সামান্য লাঠিচার্জ করতে হয়। আমাদের ডিএসপি সহ ৪ জন পুলিশকর্মী জখম হয়েছেন। পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে, আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ কেন আটকানো হল র‌্যালি? পুলিশ সূত্রের খবর, মিছিল করার জন্য বিজেপির প্রয়োজনীয় অনুমতি ছিল না। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতিও বলেন, ‘‘বিজেপির বাইক মিছিলটাই তো বেআইনি। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা চলছে। এখন প্রকাশ্যে মিছিল মিটিং করা যায় না। কেন্দ্রীয় সরকারে আছে অথচ এসব নিয়মকানুন জানে না, তবে বিজেপির এসবই ধবংস হওয়ার চিহ্ন।’’ যদিও বিজেপির জেলা সভাপতি শমিত দাস বলেছেন, ‘‘এটা সারা ভারতের কর্মসূচি। তাছাড়া এসপি, ডিআইবি- কে জানিয়েই র‌্যালি করা হচ্ছে, আসলে এসবই উপরের নির্দেশে হয়েছে। পারমিশনের কোনও বিষয় নয়।’’ এ দিনের ঘটনায় তৃণমূল-পুলিশ যোগসাজশের অভিযোগ তুলেছেন শমিত। তাঁর অভিযোগ, গোয়ালতোড়ে শক্তিবৃদ্ধি হচ্ছে বলেই পুলিশের সাহায্য নিয়ে বাইক র‌্যালি আটকানো হল। যদি অভিযোগ মানতে নারাজ তৃণমূল। তাদের বক্তব্য, ভোটের ফলেই স্পষ্ট হয়ে যাবে কার কত শক্তি আছে।

গোয়ালতোড়ের আমলাশুলি থেকে বিজেপির আর একটি বাইক র‌্যালিকে বগড়িডিহিতে পুলিশ আটকে দেওয়া হয় বলে বিজেপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন