শোকস্তব্ধ বয়াল

ডুবে মৃত্যু তিন ভাইবোনের

বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দিল্লি থেকে সপরিবার নন্দীগ্রামে এসেছিলেন শেখ জব্বার। কিন্তু জব্বারের তিন ছেলে-মেয়ের অপমৃত্যু আনন্দ অনুষ্ঠানকে বদলে দিল শোকে। তিনটি বালক-বালিকার জলে ডুবে মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের বয়াল গ্রামও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হলদিয়া শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৬ ০১:১০
Share:

বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দিল্লি থেকে সপরিবার নন্দীগ্রামে এসেছিলেন শেখ জব্বার। কিন্তু জব্বারের তিন ছেলে-মেয়ের অপমৃত্যু আনন্দ অনুষ্ঠানকে বদলে দিল শোকে। তিনটি বালক-বালিকার জলে ডুবে মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের বয়াল গ্রামও।

Advertisement

আত্মীয় শেখ আবুর ছেলের বিয়েতে দিন পাঁচেক আগে বয়াল গ্রামে আসেন জব্বার। তিনি কর্মসূত্রে দিল্লিতে থাকেন। আগামী সোমবার ছিল বিয়ে। বৃহস্পতিবার পাত্রের গায়ে হলুদের দিন সকালে তিন বাচ্চাকে নিয়ে বাড়ির কাছেই পুকুরে স্নান করতে গিয়েছিলেন জব্বারের স্ত্রী মঞ্জিরা বিবি। এক মেয়ে ও দুই ছেলেকে পুকুর পাড়ে বসিয়ে মঞ্জিরা বিবি স্নান করতে নামেন। স্নান সেরে তিনি বাড়িতে ফিরে আসেন। বাড়ি ফেরার সময় তিনি বড় মেয়ে আমিনাকে ভাইদের নিয়ে বাড়ি ফিরে আসতে বলেন। যদিও দীর্ঘক্ষণ পরেও ছেলে-মেয়ে বাড়ি না ফেরায় সন্দেহ হয় মঞ্জিরার। তখনই তিনি ফের পুকুর পাড়ে ছুটে যান।

অভিযোগ, পুকুর পাড়ে গিয়ে মঞ্জিরা বিবি মেয়ে আমিনা (৯)-র দেহ জলে ভাসতে দেখেন। সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দারা বাকি দু’জনের খোঁজে পুকুরের জলে নামেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই আমিনার দুই ভাই শেখ সামিম (৭) ও শেখ সাহিল (৬)-এর দেহও উদ্ধার হয়। স্থানীয় এক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁদের তিন জনকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয় বলে।

Advertisement

শেখ জব্বারের আত্মীয় শেখ হাসিবুল বলেন, ‘‘আমাদের চরম ক্ষতি হয়ে গেল। আমার ভাইপোর বিয়ে উপলক্ষেই গ্রামের বাড়িতে সকলে এসেছিল। আনন্দের মাঝেই কী ভাবে এই সর্বনাশ হয়ে গেল বুঝতে পারছিনা।’’ হাসিবুল আরও বলেন, ‘‘ঘটনার খবর পাওয়ার পরেই ছেলেদের খোঁজে পুকুরে নামেন শেখ জব্বার। সেই সময় জব্বারের মোবাইল জলে তলিয়ে যায়। ওই মোবাইলেই বাচ্চাদের ছবি, ভিডিও ছিল। সেটাও গেল। এখন জব্বারকে কী ভাবে সামলাবো জানিনা।’’

স্থানীয় বাসিব্দা শেখ রুকুমুদ্দিনও বলেন, ‘‘এই ঘটনায় সান্ত্বনা দেওয়ারও কোনও ভাষা নেই। ফুটফুটে ওই বাচ্চার মুখগুলো এখনও চোখের সামনে ভাসছে। বিয়ে বাড়িতে কত মজা করছিল ওরা।’’ বিয়ে উপলক্ষে শেখ জব্বারের সঙ্গেই দিল্লি থেকে আরও কয়েকজন নন্দীগ্রামে এসেছিলেন। ঘটনায় তাঁরাও বাকরুদ্ধ। পড়শি শেখ মনিরুল বলেন, ‘‘বাজার করতে এসেছিলাম। তখনই এই খারাপ ঘটনার খবর পাই। আমি আর শেখ জব্বারের কাছে যাওয়ার সাহস দেখাতে পারিনি।’’

এ নিয়ে হলদিয়ার এসডিপিও তন্ময় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ঘটনায় পরিবারের লোকেরা কোনও অভিযোগ জানাতে চাননি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন