Coronavirus

ডাক্তারবাবুর চেম্বার বন্ধ, ভিড় হাসপাতালে

‘জনতা কার্ফু’ পালনের পাশাপাশি চিকিৎসক, স্বাস্থ্য কর্মীদের অভিনন্দন জানানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০২০ ০২:২১
Share:

ডাক্তার দেখাতে লম্বা লাইন। মঙ্গলবার কাঁথি হাসপাতালে। নিজস্ব চিত্র

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে লকডাউন শুরু হয়েছে। কিন্তু স্বাস্থ্য থেকে অন্য জরুরি পরিষেবা চালু রাখার জন্য নির্দেশ রয়েছে সরকারের। এর মধ্যেও তমলুক, কাঁথি, হলদিয়া-সহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় বহু চিকৎসক নিজেদের চেম্বার বন্ধ রাখছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

Advertisement

‘জনতা কার্ফু’ পালনের পাশাপাশি চিকিৎসক, স্বাস্থ্য কর্মীদের অভিনন্দন জানানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই মতো মঙ্গলবার নিমতলা মোড় থেকে শঙ্করআড়া এলাকার চিকিৎসকদের অভিনন্দন জানাতে গিয়েছিলেন তমলুকের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কয়েকজন প্রতিনিধি। তাঁদের অভিযোগ, কয়েকজন বাদ দিয়ে অন্য সব চিকিৎসকদের চেম্বার বন্ধ ছিল। ওই সংস্থার সম্পাদক প্রহ্লাদ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘করোনা মোকাবিলায় চিকিৎসকদের ভূমিকার জন্য ধন্যবাদ জানাতে আমরা সোমবার শহরে নিমতলা মোড় এবং শঙ্করআড়া এলাকায় থাকা চিকিৎসকদের চেম্বারে গোলাপ ফুল নিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু মাত্র তিনজন চিকিৎসককে চেম্বারে পেয়েছিলাম। অধিকাংশ চিকিৎসকের চেম্বার নোটিস ছাড়ায় বন্ধ ছিল।’’ তমলুকের বাসিন্দা সৌমেন ঘোষ বলেন, ‘‘আমার এক বন্ধু অসুস্থ ছিল। সোমবার শহরের তিন চিকিৎসকের চেম্বারে ফোন করে জানতে পারি তাঁধেদের চেম্বার বন্ধ রয়েছে। শেষে জেলা হাসপাতালে জরুরি বিভাগে গিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ কেনা হয়েছে।’’

এই অভিযোগ স্বীকার নিয়েছেন চিকিৎসকদের সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের তমলুক শাখা সম্পাদক যুগলচন্দ্র মাইতি। তিনি বলেন, ‘‘করোনা সতর্কতায় সাত জনের বেশি জমায়েত করা যাবে না বলে নির্দেশিকা রয়েছে। কিন্তু অনেক চিকিৎসকেরই কাছেই ৫০ থেকে ২০০ জন রোগী ও তাঁর পরিজনদের ভিড় করেন। ভিড় এড়িয়ে রোগী দেখার পরিকাঠামো না থাকায় অনেক চিকিৎসক চেম্বার বন্ধ করে দিয়েছেন। তবে সংগঠনের তরফে চিকিৎসকদের কাছে জরুরি রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার জন্য বলেছি।’’

Advertisement

তমলুকের মতো অবস্থা কাঁথিতেও। মঙ্গলবার সাত সকালে কাঁথি শহরের স্কুল বাজার এলাকায় এক প্রসূতি এক চিকিৎসকের চেম্বারে এসেছিলেন। কিন্তু চেম্বারের দরজা বন্ধ থাকায় তিনি বসে থাকলেন বাইরের বেঞ্চে। দীর্ঘক্ষণ বাদে পাশের এক ওষুধ দোকানদার ওই মহিলাকে জানালেন, আপাতত ডাক্তারবাবু রোগী দেখবেন না। কাঁথি শহরের স্কুল বাজার এলাকা ডাক্তার পাড়া হিসেবে পরিচিত। কিন্তু লকডাউন ঘোষণার পর থেকে ওই এলাকা প্রায় চিকিৎসক শূন্য হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। হাতে গোনা কয়েকজন চিকিৎসকের চেম্বার ছাড়া অন্য সব রয়েছে বন্ধ। কাঁথি-১ ব্লকের অন্তর্গত বকশিসপুর বাসিন্দা প্রভাস প্রামাণিক বলেন, ‘‘গরম বাড়ার ফলে ত্বকের কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে। তাই চর্মরোগ বিশেষজ্ঞকে দেখাতে গিয়েছিলাম। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখলাম ওই চিকিৎসকের ব্যক্তিগত চেম্বার বন্ধ। কবে খুলবে কিছুই জানা যাচ্ছে না।’’

চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত চেম্বার বন্ধ থাকায় ভিড় বাড়ছে কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে। পড়ছে লম্বা লাইন। এত জমায়েত থেকে ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। চেম্বার বন্ধ থাকা প্রসঙ্গে পূর্ব মেদিনীপুরের মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘ভিড় এড়িয়ে রোগীদের জরুরি চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। যেখানে চেম্বারে প্রচুর মানুষ ভিড় করেন, তা বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন