ডেঙ্গি আক্রান্ত বাড়ছে, ছুটি বাতিল পিংলায়

স্বাস্থ্য দফতর বলছে, মশা মারতে অভিযান চলছে। তারপরেও অবশ্য রাশ টানা যাচ্ছে না ডেঙ্গিতে। গত চার দিনে পিংলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ২১ থেকে বেড়ে হয়েছে ৩২। পরিস্থিতি দেখে সোমবার জেলা স্বাস্থ্য দফতর থেকে পিংলার সমস্ত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের ছুটি বাতিলের নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পিংলা শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০১৮ ০১:৪৬
Share:

ডেঙ্গি রোধে ম্যাজিকে প্রচার। নিজস্ব চিত্র

স্বাস্থ্য দফতর বলছে, মশা মারতে অভিযান চলছে। তারপরেও অবশ্য রাশ টানা যাচ্ছে না ডেঙ্গিতে। গত চার দিনে পিংলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ২১ থেকে বেড়ে হয়েছে ৩২। পরিস্থিতি দেখে সোমবার জেলা স্বাস্থ্য দফতর থেকে পিংলার সমস্ত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের ছুটি বাতিলের নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।

Advertisement

ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়লে অনেক আক্রান্তই হাসপাতালে গিয়ে যথাযথ চিকিৎসা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠছে। পরিস্থিতি সামলাতে রবিবার পিংলায় আসেন রাজ্যের স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা। হাসপাতাল ও এলাকা পরিদর্শনের পরেই ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন তাঁরা। সেই মতো সোমবার সকাল থেকেই মাঠে নেমেছে স্বাস্থ্য দফতর ও ব্লক প্রশাসন। এ দিন ব্লকের বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েতে সচেতনতার পাঠ দেওয়ার পাশাপাশি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতরে চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের স্বাস্থ্য আধিকারিকদের দলটি মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি, ডেঙ্গির মশা নিধন ও উপযুক্ত চিকিৎসার নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন। সেই মতো সোমবার সকাল থেকে পিংলার ডেঙ্গি প্রভাবিত ক্ষ্মীরাই, জলচক-১ ও মালিগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে সচেতনতা শিবিরের আয়োজন হয়।

Advertisement

এই চারটি গ্রাম পঞ্চায়েত ছাড়াও জলচক-২ ও গোবর্ধনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সমস্ত আশা কর্মী, স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও ভিলেজ রিসোর্স টিমের কর্মীদেরও সচেতন করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে মানুষকে তার বাড়ির চারিপাশ পরিচ্ছন্ন রাখার বার্তা দিতে বলা হয়েছে। পিংলার বিডিও শঙ্খ ঘটক বলেন, “রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিনিধি দলের কর্তারা মূলত মানুষকে সচেতন করা ও মশার আঁতুড় ঘর নষ্ট করার উপর জোর দিয়েছেন। সেই মতো আমরা কাজ করছি।’’ তিনি বলেন, ‘‘প্রাথমিকভাবে মানুষ সচেতন হলেই ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। এ ছাড়াও আমাদের স্বেচ্ছাসেবী দলের কর্মীরা এলাকায় গিয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ করছে।”

এ দিন করকাই, লক্ষ্মীবাড়ি ও মালিগ্রাম এলাকায় স্বাস্থ্য দফতরের প্রশিক্ষিত জাদুকর দিয়ে জাদুর মাধ্যমে সচেতনতা বাড়াতে প্রচার হয়। কীভাবে ডেঙ্গির মশা বংশবৃদ্ধি করে, কীভাবে সেই মশা মারতে হয়, মশারির ব্যবহারে কীভাবে রোগের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যায়— ম্যাজিকের মাধ্যমে সেই সবই তুলে দেওয়া হয় সাধারণ মানুষের সামনে। জেলার মশাবাহিত রোগের নোডাল অফিসার তথা উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধান বলেন, “মানুষকে নানাভাবে সচেতন করায় আমরা বিশেষ জোর দিচ্ছি। জাদুকর বিএন ঘোষ জাদুর মাধ্যমে সচেতনতা বাড়াতে প্রচার করছেন।’’ তিনি বলেন, ‘‘চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। ‘বিশ্রাম, জল, প্যারাসিটামল, মশারির তল ও রক্ত পরীক্ষা সহজ-সরল’- মন্ত্রে আমরা ডেঙ্গি মোকাবিলা করবই।”

তবে শুধু মানুষকে সচেতন করা নয়, গুরুত্ব সহকারে চিকিৎসার জন্য এ দিন চিকিৎসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় বাড়তি গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে এই মুহূর্তে পিংলার সমস্ত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের আপাতত ছুটি বাতিল বলে নির্দেশ

দেওয়া হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন