Rape

ঝাড়ফুঁকের নামে ধর্ষণ, ধৃত গুনিন 

পুলিশ সূত্রের খবর, মাস দেড়েক আগে চন্দ্রকোনা থানার ক্ষীরপাই ঘেঁষা আঁধারিয়া গ্রামে এক আদিবাসী যুবতী জ্বর-সর্দিতে অসুস্থ হয়ে পড়েন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঘাটাল শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৯ ০০:০৮
Share:

অভিযুক্ত উত্তম ঘোষকে তোলা হচ্ছে ঘাটাল আদালতে। নিজস্ব চিত্র

ঝাড়ফুঁক করার অছিলায় এক আদিবাসী মহিলাকে ধর্ষণের অভিযোগে এক গুনিনকে গ্রেফতার করল পুলিশ।

Advertisement

সোমবার রাতে চন্দ্রকোনা থানার তাতারপুরের অভিযুক্ত যুবক উত্তম ঘোষকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মঙ্গলবার তাকে ঘাটাল আদালতে তোলা হয়। ঘাটালের এসিজেএম অভিযুক্তকে পাঁচদিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন।

পুলিশ সূত্রের খবর, মাস দেড়েক আগে চন্দ্রকোনা থানার ক্ষীরপাই ঘেঁষা আঁধারিয়া গ্রামে এক আদিবাসী যুবতী জ্বর-সর্দিতে অসুস্থ হয়ে পড়েন। প্রথমের দিকে ততটা গুরুত্ব দেননি ওই যুবতী। ফলে শরীরে নানা সমস্যা তৈরি হয়। সেই সময় পাড়ার লোকেরা কোনও গুনিনের কাছে গিয়ে ঝাড়ফুঁক করার পরামর্শ দেন। বাড়ি থেকে গ্রামীণ হাসপাতালের দূরত্ব প্রায় ৩-৪ কিলোমিটার। কিন্তু পুলিশকে ওই তরুণী জানিয়েছেন, বিশ্বাসবশত দিন কুড়ি আগে উত্তম নামে এক ওঝার সঙ্গে যোগাযোগ করেন তাঁরা। দু’একবার উত্তম ওই যুবতীর বাড়িতে এসে তন্ত্রমতে তুকতাক করে রোগ মুক্তির প্রতিশ্রুতি দেয়। এরজন্য মোটা টাকা দাবি করা হয়। আদিবাসী দম্পতি টাকা দিতে রাজি হন। দিন পনেরো আগে উত্তম ওই আদিবাসী দম্পতিকে তার বাড়িতে ডেকে নেয়। জানায়, রাতের অন্ধকারে পুজো করতে হবে। তাই পুজোর জন্য ওইদিন সেখানে রাতে থাকার জন্য বলা হয়। ওঝার কথা মতো ওই দম্পতি ওই দিন রাতে থাকেন। ওই যুবতীর কথায়, “গভীর রাতে স্বামীর মুখে জল ছিটিয়ে অচৈতন্য করে দেয়। তারপর স্বামীর সামনেই আমাকে ধর্ষণ করে। বিষয়টি কাউকে জানালে ফল ভাল হবে না বলে হুমকি দেয়।”

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, পরদিন সকালে ওই দম্পতি বাড়ি ফিরে আসেন। কিন্তু সুস্থ হননি যুবতী। উল্টে অনেকটাই অসুস্থ হয়ে পড়েন। বিষয়টি স্বামীকে খুলে বলেন ওই যুবতী। দিন কয়েক আগে ওই দম্পতি ওঝার কীর্তিকলাপ সম্প্রদায়ের সংগঠন ভারত জাকাত মাঝি পারগানাকে জানান। অভিযোগ পেয়েই তদন্তে নামে ওই সংগঠন। সোমবার সংগঠনের কয়েকজন উত্তমের বাড়িতে যান। অভিযোগ, আলোচনার সময় দু’পক্ষের মধ্যে প্রবল বাকবিতণ্ডা হয়। জড়ো হয়ে যায় গ্রামের লোকজন। খবর পেয়ে রামজীবনপুর ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। অভিযুক্ত ওঝা উত্তমকে পাকড়াও করে। রাতেই ওই মহিলা থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।

ঘটনার তদন্তকারী অফিসার তথা ঘাটালের এসডিপিও কল্যাণ সরকার বলেন, “অভিযুক্তকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তদন্ত চলছে।” ভারত জাকাত মাঝি পারগানার ঘাটাল তল্লাটের সভাপতি মনোরঞ্জন মুর্মু বলেন, “পুলিশের প্রতি ভরসা রয়েছে। নিশ্চয়ই অভিযুক্ত কড়া শাস্তি পাবে। আমরাও তদন্ত করছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন