ধান কেনায় আমরা-ওরা, নালিশ কেশিয়াড়িতে

ধান কেনার ভরা মরসুম। জেলা জুড়ে কর্মব্যস্ততা। ব্যতিক্রম শুধু কেশিয়াড়ি।

Advertisement

বরুণ দে

শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:৪৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

ধান কেনার ভরা মরসুম। জেলা জুড়ে কর্মব্যস্ততা। ব্যতিক্রম শুধু কেশিয়াড়ি।

Advertisement

পশ্চিম মেদিনীপুরে ২১টি ব্লক রয়েছে। প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, এর মধ্যে ২০টি ব্লকেই স্থানীয় সমবায় সমিতির মাধ্যমে ধান কেনা শুরু হয়েছে। একমাত্র কেশিয়াড়িতে কোনও সমিতিকে ধান কেনায় যুক্ত করা হয়নি। কেন ব্রাত্য কেশিয়াড়ি? জেলার সমবায় আধিকারিক তপন দাসের সাফাই, ‘‘আসলে ওখানে ভাল সমিতি নেই! যেগুলি রয়েছে সেগুলি তেমন সক্রিয় নয়!’’

সত্যি কি ‘ভাল’ সমবায় সমিতির অভাব? নাকি অন্য কিছু? বিজেপির দাবি, এর পিছনে রয়েছে রাজনীতি। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে আদিবাসী অধ্যুষিত কেশিয়াড়িতে ‘ধাক্কা’ খেয়েছে তৃণমূল। পঞ্চায়েত সমিতির ২৫টি আসনের মধ্যে ১৩টি পেয়েছে বিজেপি। জেলার বাকি সব সমিতি গঠন হয়ে গেলেও এতদিন কেশিয়াড়িতে বোর্ড গঠন বাকি ছিল। সম্প্রতি বোর্ড গঠন প্রক্রিয়া শুরু করার ক্ষেত্রে প্রশাসনের অন্দরে তৎপরতা শুরু হয়েছে। বিজেপির জেলা সভাপতি শমিত দাশ বলছেন, ‘‘এ তো সেই আমরা- ওরার মতো ব্যাপার। আসলে ওই এলাকার চাষিদের সঙ্গে বঞ্চনা করা।’’ একই সঙ্গে তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘শুধু পঞ্চায়েত সমিতিটা গঠন হোক। তারপর কত ধানে কত চাল বুঝিয়ে দেব। কেশিয়াড়ির মানুষই এই বঞ্চনার জবাব দেবেন।’’

Advertisement

‘হারানো’ কেশিয়াড়িতে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বার্তা দিয়ে গিয়েছেন, কিছু পেতে হলে তাঁর সঙ্গে থাকতে হবে। কেশিয়াড়ির দায়িত্ব মমতা দিয়েছেন শুভেন্দুকে। তারপর কেশিয়াড়ি এসে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন তিনি। এমনকি, সেখানে সভায় গিয়ে বলেছেন, ‘‘একটা লোককেও বিজেপি-র পঞ্চায়েতের কাছে যেতে হবে না। কারও বাড়ি যাবেন না, হাত পাতবেন না। সমস্যা হলে বিডিও-র কাছে যাবেন, আক্রমণ করলে থানার আইসি-র কাছে যাবেন।’’ শুভেন্দু এ-ও জানিয়েছিলেন, পরিষেবা সংক্রান্ত নানা ফর্ম সই করে রাখা থাকবে দলীয় কার্যালয়ে। ধান কেনায় ‘আমরা-ওরা’র অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, ‘‘সমিতি হয়ত কিনছে না। সরকার তো ধান কিনছে!’’

জেলার খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ অমূল্য মাইতির দাবি, ‘‘কেশিয়াড়িতে ধান কেনা যে একেবারেই হচ্ছে না তা নয়। সরকার সরাসরি ধান কিনছে। সেখানে ইচ্ছুক চাষিরা আসতে পারেন।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আমরা এ বার ওখানে ৪০০ কুইন্টাল অতিরিক্ত ধান কেনার কথাও ভেবেছি!’’

প্রশাসন সূত্রের খবর, জেলার বাকি ২০টি ব্লকে ৭৭টি সমবায় সমিতিকে ধান কেনায় যুক্ত করা হয়েছে। যেমন, মোহনপুরে ৮টি সমিতি ধান কিনছে, দাঁতন- ২ এ ৭টি, দাসপুর- ১ এ ৭টি, দাসপুর- ২ এ ৫টি, কেশপুরে ৫টি, গড়বেতা- ১ এ ৫টি, নারায়ণগড়ে ৩টি সমিতি ধান কিনছে।

বাদ শুধু কেশিয়াড়ি। তবে কি ‘ভাল’ সমবায় সমিতির খোঁজ চলছে!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement