তিনি বাংলা সিনেমার তারকা। তাঁর সিনেমা রিলিজ হলে টিকিট কাটার লম্বা লাইন দেখা যায় বিভিন্ন হলে। আবার একই সঙ্গে তিনি তৃণমূলের ঘাটাল কেন্দ্রের বিদায়ী সাংসদ এবং চলতি লোকসভা নির্বাচনে ওই কেন্দ্রের প্রার্থীও বটে। তীব্র তাপদাহের মধ্যেই চলছে জোরকদমে প্রচার। খেয়াল রাখতে হচ্ছে খাদ্যাভাস ও শরীরচর্চার দিকেও।
২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময়ে দেব উঠেছিলেন ‘দেবালয়’ নামে একটি বাড়িতে। সেখানে প্রায় টানা এক মাস সেখানে থেকেই প্রচারের কাজ করেছিলেন তিনি। এ বার তিনি উঠেছেন ঘাটাল শহরের কোন্নগরে শিলাবতী নদীর ধারে ‘রিভার ভিউ’ নামে একটি আবাসনে। রয়েছেন ৬ তলায়। ওই আবাসনের অন্য ঘরে থাকছেন দেবের বাবা গুরুপদ অধিকারী।
দেবকে নিয়ে তৃণমূল কর্মীদের উৎসাহ বরাবরই বেশি। এ বার তার ব্যতিক্রম হয়নি। এ বার অবশ্য প্রচারের সময়ে পুরোপুরি ঘাটালে থাকছেন না তিনি। মাঝে মাঝে কলকাতা থেকে যাতায়াতও করছেন। তবে যখন থাকছেন তখন কী করছেন? তাঁর খাবারের দেখভালের দায়িত্বে থাকা তৃণমূল কর্মীদের থেকে জানা গিয়েছে, দেব ঘুমোতে যান গভীর রাতে তবে উঠে পড়েন তাড়াতাড়ি। উঠেই খান দুধ চা। তারপর হাল্কা শরীরচর্চা। বারান্দার ব্যালকনিতে পায়চারি। তারপর স্নান সেরে পাউরুটি, ডিম সেদ্ধ ও দুটো কলা। ফের এক কাপ দুধ চা খেয়ে একদফা বৈঠক সেরে নেন। ১০টা বাজলেই প্রচারে বেরিয়ে পড়েন। প্রচার চলাকালীন দেবের পছন্দের খাবার ফল। তাঁর সঙ্গে সব সময়ে থাকে কখনও তরমুজ, শশা, আঙুর, আপেল। দুপুরের খাবার সারেন দলীয় কর্মীদের বাড়িতেই। দুপুরের মেনু থাকে ভাত, ডাল, তরকারি। সঙ্গে মাছ অথবা মুরগির মাংস।
রাতের খাবার খান ১১টার মধ্যে। খেতে খেতে চোখ রাখেন টিভিতে। তবে খবর নয়, তখন তাঁর পছন্দ আইপিএল। টানা প্রচারের ক্লান্তি ঘোচাতে বাবার সঙ্গে ক্রিকেট নিয়ে টুকটাক আলোচনাও করেন তৃণমূলের এই তারকা প্রার্থী। রাতের মেনুতে থাকে দু’টো হাতে গড়া রুটি ও অল্প ভাত। সঙ্গে চিকেন। ঘাটালে দেবের ঘনিষ্ঠ একজন জানান, দুপুর হোক বা রাত দু’বেলাই পাতে পোস্তর বড়া ও আলু পোস্ত থাকলে খুশি হন দেব। মাঝে মাঝে স্বাদ বদলাতে রাখা হয় গেঁড়ি-গুগলির পদ। কোনও কোনও দিন থাকে হাঁসের মাংসও। রাতের খাবার শেষে থাকে লস্যি কিংবা ঠান্ডা পানীয়।
তৃণমূল সূত্রে খবর, কখনও ঘাটালের কোনও হোটেল, আবার কখনও দলীয় কর্মীর বাড়ি থেকে নায়কের রাতের খাবার আসে। পুরো বিষয়টির তদারকি করেন ঘাটালের বিধায়ক শঙ্কর দোলই। তিনি বলেন, “দেব গেঁড়ি-গুগলি খেতে খুব ভালবাসে। হাঁসের মাংসও খায়।” নির্বাচন শেষ হলে আবার শুরু হবে শ্যুটিংয়ের কাজ। তার আগে শরীরের ফিটনেস ধরে রাখাটাও জরুরি। ঘাটালের এক তৃণমূল নেতা জানান, দেব তাঁর ঘাটালের আবাসনে জিমের কিছু সরঞ্জাম চেয়েছেন। সেই ব্যবস্থা হয়ে গিয়েছে। দেব এখন ঘাটালে নেই। তিনি ফিরে এলেই সেই সরঞ্জাম চলে আসবে।
কী বলছেন প্রার্থী নিজে? তাঁর কথায়, ‘‘মানুষের উন্নয়ন, মানুষের ভাল থাকার ব্যবস্থা করাই আমার কাজ। সেখানে আমার খাওয়াদাওয়ার বিষয়টি তুচ্ছ। তবে মানুষ যে আমার খাদ্যাভাস ও জীবনযাত্রা সম্পর্কে জানতে আগ্রহী সেটা জেনে ভাল লাগছে।’’