Panskura Super Speciality Hospital Incident

‘মহিলাকর্মীরা সই করেন কোলে বসে’! পাঁশকুড়াকাণ্ডে ৪১ জনের আঙুল ‘ধর্ষকের’ দিকে, সর্ষেতেই ভূত, বলল জাতীয় মহিলা কমিশন

হাসপাতালে ধর্ষণকাণ্ডে অভিযুক্ত সম্পর্কে নানা তথ্য পেয়েছে কমিশন। অর্চনা জানান, ২০০৮ সালে ১৪ বছরের এক নাবালিকা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন অভিযুক্তের কারণে। গায়ের জোরে সেই নাবালিকার গর্ভপাত করিয়েছিলেন তিনি। ওই মামলায় কয়েক মাস জেল খেটেও বেকসুর খালাস হয়ে যান অভিযুক্ত।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২০:০৭
Share:

পাঁশকুড়া সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল পরিদর্শনে জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্য অর্চনা মজুমদার। —নিজস্ব চিত্র।

পাঁশকুড়া সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে কেবল এক মহিলাকর্মীই ধর্ষিতা হননি, সেখানকার ৪১জন অস্থায়ী মহিলাকর্মী ধর্ষণকাণ্ডে অভিযুক্ত ফেসিলিটি ম্যানেজারের বিরুদ্ধে লিখিত ভাবে অভিযোগ করেছেন। শুক্রবার হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়ে এমনই জানালেন জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্য অর্চনা মজুমদার। তিনি বলেন, ‘‘সর্ষের মধ্যেই ভূত রয়েছে।’’ ধর্ষণকাণ্ডে পূর্ব মেদিনীপুরের ওই হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতি-সহ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ করেন তিনি।

Advertisement

অর্চনা বলেন, “ইতিমধ্যে অভিযুক্ত ফেসিলিটি ম্যানেজার বিরুদ্ধে ৪১ জন মহিলাকর্মীর লিখিত অভিযোগ হাতে পেয়েছি। অথচ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কিছুই জানতে পারেননি, এটা আশ্চর্যের!” জাতীয় মহিলা কমিশনের ওই সদস্যের প্রশ্ন, ‘‘১৭ বছর আগে নাবালিকা ধর্ষণে জেল খাটা আসামি বেকসুর খালাস পেয়ে গেল কী ভাবে এবং কী ভাবে সেই মামলা ধামা চাপা পড়ে গেল, কী ভাবেই বা ওই ব্যক্তি প্রভাব খাটিয়ে হাসপাতালে একের পর এক সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছিলেন, তার তদন্ত হওয়া দরকার। এ জন্য রাজ্য সরকার, স্বাস্থ্য দফতর এবং পুলিশ প্রশাসনের চরম গাফিলতি রয়েছে।”

শুক্রবার দুপুর ১১টা ৪০টা নাগাদ পাঁশকুড়া সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে যান অর্চনা। হাসপাতাল চত্বর পরিদর্শনের পর নজরদারি নিয়ে নিজের ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। বলেন, ‘‘এত বড় হাসপাতাল, যেখানে ১০০-র বেশি ক্যামেরা দরকার, সেখানে মাত্র ৪০টি সিসি ক্যামেরা লাগানো রয়েছে কেন, সেটা প্রশ্ন।’’ তিনি জানান, আরজি কর-কাণ্ডের পরে চিকিৎসকদের বিশ্রামকক্ষে যাওয়ার করিডর, হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে মহিলা কর্মীদের সুরক্ষায় নজরদারির জন্য একাধিক গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় সিসি ক্যামেরা থাকার কথা। কিন্তু এখানে সেটা নেই।

Advertisement

হাসপাতালে ধর্ষণকাণ্ডে অভিযুক্ত সম্পর্কে নানা তথ্য পেয়েছে কমিশন। অর্চনা জানান, ২০০৮ সালে ১৪ বছরের এক নাবালিকা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন ওই অভিযুক্তের কারণে। গায়ের জোরে সেই নাবালিকার গর্ভপাত করেছিলেন তিনি। ওই মামলায় কয়েক মাস জেল খেটেও বেকসুর খালাস হয়ে যান অভিযুক্ত। তিনি-ই বছরের পর বছর হাসপাতালে অ্যাম্বুল্যান্সের সিন্ডিকেট চালাচ্ছিলেন। হাসপাতালে কর্মরত শতাধিক অস্থায়ী কর্মী ও মহিলাদের কাজের রস্টার দেখাশোনা করতেন। কাজে যোগ দিতে আসা মহিলাদের সই করতে হত অভিষুক্তের কোলে বসে! এত সাহস তিনি কোথা থেকে পেতেন? প্রশ্ন অর্চনার। তিনি এ-ও জানান, ২০০৮ সালে অভিযুক্ত যাকে ধর্ষণ করেছিল, সেই নির্যাতিতার সঙ্গেও কথা বলেছেন তাঁরা। ওই পকসো মামলা কী ভাবে ধামাচাপা পড়ল, তা খুঁজে দেখা হবে। অর্চনা বলেন, ‘‘সিন্ডিকেট যাতে আগামিদিনে মাথাচাড়া দিতে না-পারে, তা নিশ্চিত করতেই হবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement