Suvendu Adhikari

শুভেন্দুর কেন্দ্রে বিজেপিতে ভাঙন, ‘নন্দীগ্রামে অন্য বিজেপি’, বলে ইস্তফা মণ্ডল সভাপতির

নন্দীগ্রামের দাপুটে নেতা চন্দ্রকান্ত মণ্ডল দীর্ঘ দিন দলের সদস্য। নন্দীগ্রামের ৪টি মণ্ডলের সভাপতি হন তিনি। পদ্মশিবিরের একটি অংশের দাবি, শুভেন্দুকে ভোটে জেতানোর পিছনে তাঁর অবদান রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নন্দীগ্রাম শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০২৩ ১৭:৩৮
Share:

শুভেন্দু অধিকারীর কেন্দ্রে পদত্যাগ বিজেপি নেতার। — নিজস্ব চিত্র।

রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নির্বাচনী কেন্দ্র নন্দীগ্রামেই বিজেপিতে ভাঙন। বর্তমানে নন্দীগ্রামে ‘অন্য বিজেপি’ রয়েছে। এমন মন্তব্য করে দলীয় পদ থেকে ইস্তফা দিলেন নন্দীগ্রাম ৪ মণ্ডলের সভাপতি চন্দ্রকান্ত মণ্ডল এবং তাঁর সঙ্গীরা। যদিও এই ‘সমস্যা’ আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে নেওয়া যাবে বলে আত্মবিশ্বাসী বিজেপি নেতারা। রাজ্যের বিরোধী দলনেতার কেন্দ্রে দলীয় সংগঠনে ভাঙন নজরে আসতেই কটাক্ষ করেছে তৃণমূলও।

Advertisement

নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের দাপুটে নেতা চন্দ্রকান্ত দীর্ঘ দিন ধরেই দলের সদস্য। নন্দীগ্রামের ৪ নম্বর মণ্ডলের সভাপতিও হয়েছেন তিনি। পদ্মশিবিরের একটি অংশের দাবি, শুভেন্দুকে ভোটে জেতানোর পিছনে তাঁর অবদান অপরিসীম। সেই চন্দ্রকান্তের অভিযোগ, নন্দীগ্রামে রাজত্ব করছে ‘অন্য বিজেপি’। ক্ষোভের কথা জানিয়ে শনিবার দলের জেলা কমিটির কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন চন্দ্রকান্ত। এত দিন নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রকে বিজেপি ৪টি মণ্ডলে ভাগ করে সংগঠন চালাত। তবে এ বার নন্দীগ্রামের ৪ নম্বর মণ্ডলকে দুই ভাবে ভেঙেছে দল। যেখানে বয়াল-১ এবং ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের মণ্ডলের দায়িত্বে চন্দ্রকান্তকেই রেখে দেওয়া হয়েছে। তবে খোদামবাড়ি-১ এবং ২ অঞ্চলে নতুন মণ্ডল সভাপতি হয়েছেন দীপঙ্কর নায়েক। এই নিয়েই ক্ষোভ চন্দ্রকান্তের। তাঁর দাবি, ‘‘দেশের কোথাও এ ভাবে বিজেপির মণ্ডল ভেঙে নতুন কমিটি গঠন হয়নি। কেবলমাত্র নন্দীগ্রামেই এ ভাবে একটি মণ্ডলকে ভেঙে দেওয়া হল। যা সম্পূর্ণ ভাবে বিজেপির সংবিধানের বিরোধী।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আমি দীর্ঘ দিন ধরে বিজেপির সঙ্গে রয়েছি। আমার বাবাও বিজেপির সদস্য দীর্ঘ দিনের। কিন্তু বর্তমানে নন্দীগ্রামে অন্য বিজেপিকে দেখছি। এখানে চরম অরাজকতা চলছে। তাই আমি ও আমার সঙ্গীরা দল থেকে পদত্যাগ করছি।’’

চন্দ্রকান্তের ক্ষোভ দলের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে দাবি করেছেন বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তপনকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়। তপনের দাবি, ‘‘নন্দীগ্রামে দলের সাংগঠনিক ভিত মজবুত করার উদ্দেশ্যেই রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশে ৪ নম্বর মণ্ডলটিকে ভাগ করা হয়েছে। এই নিয়ে প্রাথমিক ক্ষোভ-বিক্ষোভ থাকলেও তা দলের অন্দরেই মিটিয়ে নেওয়া হয়েছে।’’

Advertisement

পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণা না হলেও, দিন কয়েক আগে ঢাকঢোল বাজিয়ে এই নন্দীগ্রামেরই হরিপুর অঞ্চলে প্রার্থিতালিকা প্রকাশ করেন বিজেপি নেতা মেঘনাদ পাল। তাঁর নেতৃত্বে মঞ্চ বেঁধে প্রকাশ্য সমাবেশে ১৪ জন পঞ্চায়েত সদস্য এবং ৩ জন পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়। এই নিয়ে জলঘোলাও হয় বিস্তর। তার জেরে আর কোনও পঞ্চায়েতে যেন এ ভাবে প্রার্থিতালিকা ঘোষণা না হয় সে বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশিকাও জারি করা হয়।

নন্দীগ্রামে বিজেপির এই অন্তর্দ্বন্দ্বকে হাতিয়ার করে ময়দানে নেমেছে তৃণমূল। নন্দীগ্রামের ১ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি বাপ্পাদিত্য গর্গ এই ঘটনায় কাঠগড়ায় তুলেছেন শুভেন্দুকেই। তাঁর দাবি, “শুভেন্দু অধিকারী এক সময় তৃণমূলে থাকাকালীন নন্দীগ্রামে একচেটিয়া শাসন কায়েম করেছিলেন। এখন বিজেপিতে গিয়েও তিনি সেই একই কায়দায় রাজনীতি করছেন। তাই যাঁরা বিজেপির আদি নেতা, তাঁদের দমবন্ধ অবস্থার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। চার দিকে দলবদলুরাই দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।’’ বিজেপির পদত্যাগীদের তৃণমূলে নেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে দলের রাজ্য নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছেন বাপ্পাদিত্য।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন